Home Blog Page 4545

পরিস্থিতি শিথিল করার বিপক্ষে মত দিয়েছে সরকারের পরামর্শক কমিটি

0

করোনাভাইরাসের চলমান পরিস্থিতিতে সংক্রমণের হার সুনির্দিষ্টভাবে না কমার আগে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার বিপক্ষে মত দিয়েছে সরকারের জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি।

আজ শুক্রবার কমিটির সভাপতি প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও সদস্য সচিব মিরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা স্বাক্ষরিত ষষ্ঠ সভার সুপারিশপত্রে এ কথা জানানো হয়।

জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সুপারিশের সার সংক্ষেপে বলা হয়, কোভিড-১৯ একটি সংক্রামক রোগ, যা হাঁচি-কাশি ও সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। জনসমাগম এ রোগের বিস্তারের জন্য সহায়ক। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতায় এই রোগ সংক্রমণের হার সুনির্দিষ্টভাবে না কমার আগে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালু করলে রোগের হার বাড়ার আশঙ্কা থাকে। জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি এ বিষয়ে ইতোপূর্বে পরামর্শ প্রদান করেছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় বিধিবিধানসমূহ সঠিক পদ্ধতিতে প্রয়োগ না করে শিথিল করা হলে রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

আরও বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সুনির্দিষ্টভাবে কোভিড-১৯ রোগে হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন নামক ওষুধটি সম্বন্ধে নির্দেশনা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই ইউরোপিয় ইউনিয়নে এ ওষুধ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি করোনা রোগের চিকিৎসার গাইডলাইনে এ ওষুধ না রাখার পরামর্শ দিয়েছে। আইভারমেকটিন, কনভালোসেন্ট প্লাজমা ও অন্যান্য অননুমোদিত ওষুধ কেবলমাত্র সুনির্দিষ্টভাবে অনুমোদিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বাইরে ব্যবহার না করার সুপারিশ করেছে। এই ধারাবাহিকতায় এসব ওষুধ বা চিকিৎসা ব্যবস্থা অথবা প্রতিরোধে সাধারণ মানুষ জন্য ব্যবহার না করার পরামর্শ দিচ্ছে।

সুপারিশপত্রে বলা হয়, ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) ও অন্যান্য রোগের চিকিৎসা একই হাসপাতালে পৃথক পৃথক ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দিয়েছে। জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি এ সিদ্ধান্ত সঠিক মনে করে। তবে এ ব্যাপারে প্রশাসনিক সাংগঠনিক জনবল ও সরঞ্জামসমূহের বিশেষ প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে মনে করে।

করোনা পরবর্তী বিশ্ব হবে ক্ষুধাময়: জাতিসংঘ মহাসচিব

0

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে অগ্রগতির পরেও বর্তমানে সারাবিশ্ব করোনাভাইরাসের কারণে অত্যন্ত সঙ্কটের মধ্যে আছে।

তিনি আরো বলেছেন, এখনই যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া না গেলে করোনাভাইরাস মহামারিটি বিশ্বজুড়ে অকল্পনীয় ধ্বংসযজ্ঞ এবং যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে করোনার জেরে বিশ্বের ভঙ্গুর অবস্থার কথা বলতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব আরো বলেন, ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষ আসন্ন। ছয় কোটি মানুষ দারিদ্র্যের নিম্নসীমায় চলে যাবে। বিশ্বের অর্ধেক মানুষ কাজ হারিয়ে ফেলতে পারে। এক দশমিক ছয় বিলিয়ন মানুষ জীবিকা হারিয়ে ফেলতে যাচ্ছে। সারাবিশ্বে আট দশমিক পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হচ্ছে। ১৯৩০ সালের পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থার মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব। সে কারণে করোনা পরবর্তী বিশ্ব ক্ষুধাময় হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

সরকারের অবিবেচক সিদ্ধান্তের চরম মাশুল জাতিকে দিতে হবে: আবদুর রব

0

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে দেশবাসী গভীর উদ্বিগ্ন। লকডাউন বা ছুটির মূল উদ্দেশ্য সফল হয়েছে কিনা তার কোনো মূল্যায়ন না করে সরকার অবিবেচকের মতো তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে যার জন্য জাতিকে চরম মাশুল দিতে হবে।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশবাসী প্রতিদিন প্রত্যক্ষ করছে যে, দেশে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এটা এখন শুধু নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত জনসাধারণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই; উচ্চবিত্ত, শিল্পপতি কেউই রেহাই পাচ্ছে না।

আ স ম রব বলেন, লকডাউন করে করোনা পরিস্থিতির বা লকডাউনের মূল উদ্দেশ্য সফল হয়েছে নাকি ব্যর্থ হয়েছে এনিয়ে কোনো মূল্যায়ন না করেই সরকার অবিবেচকের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। সরকারের অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের জন্য জাতিকে চরম মাশুল দিতে হবে।

তিনি বলেন, লকডাউনের মূল উদ্দেশ্য ছিল করোনার বিস্তার রোধ করা। সে কাজটি গত দু’মাসে মোটেই সুচারুরূপে সম্পাদন করা হয়নি। এককথায় গত দু’মাসের লকডাউন বৃথাই গিয়েছে।

জেএসডি সভাপতি বলেন, লকডাউন প্রত্যাহারের পূর্বে অবশ্যই চিন্তা করা উচিত সংক্রমণ বাড়বে কিনা এবং বর্ধিত সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষমতা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আছে কিনা।

তিনি বলেন, এ যদি আমাদের সক্ষমতার মধ্যে থাকে কেবল তখনই লকডাউন প্রত্যাহার বিবেচনা করা যেতে পারতো। এ বিষয়ে সরকার গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সুপারিশ এড়িয়ে যাওয়া একটা ভুল পদক্ষেপ।

আ স ম রব বলেন, বিশ্বের সকল দেশে করোনা পরিস্থিতি যখন তাদের অনুকূলে এসেছে, তখনই কেবল তারা লকডাউন প্রত্যাহারে ধাপে ধাপে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অথচ একমাত্র আমাদের দেশেই যখন করোনায় আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী, তখন সরকার অবিবেচকের ন্যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে।

বিবৃতিতে বিরাজমান পরিস্থিতিতে জরুরি করণীয় চারটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যথেষ্ট সংখ্যক করোনা পরীক্ষা করার জন্য প্রতি জেলায় ল্যাব স্থাপন করতে হবে।

জেএসডি সভাপতি বলেন, নিরন্ন মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে হবে যাতে তাদের বাইরে বের হবার প্রয়োজন না হয়। তিনি বলেন, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মোতাবেক ধাপে ধাপে লকডাউন প্রশ্নে পদক্ষেপ নিতে হবে। ‘ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা’ সংস্কারের জন্য অবিলম্বে ‘জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি।

ইস্তাম্বুল বিজয় : সাহাবায়ে কেরাম থেকে উসমানী খেলাফত

0

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয়ই কনস্টান্টিনোপল বিজিত হবে। সে বাহিনীর আমীর কতইনা উত্তম আমীর। সে বাহিনী কতইনা উৎকৃষ্টতম বাহিনী।” (মুসনাদে আহমদ ৪/৩৩৫, হাদীস: ১৮৯৫৭

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক বর্ণিত ভবিষ্যতবাণীকে বাস্তবায়ন এবং গৌরবময় বিজয় ও সুসংবাদ প্রাপ্ত উৎকৃষ্টতম দলের সৌভাগ্যবান আমীর ও সদস্যদের একজন হওয়ার আশায় ইসলামের শুরু লগ্ন থেকেই মুসলিম বীর মুজাহিদগণ কনস্টান্টিনোপল বিজয় করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন। আর এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘনিষ্ঠ সাহাবীদের অন্যতম, হযরত আবু আইয়ুব আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু।

হযরত আবু আইয়ুব আনসারী রাযি. যিনি মদিনার আনসার সাহাবাগণের মাঝে অন্যতম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিজরতের পর তিনিই প্রথম রাসূলের মেহমানদারী করার সৌভাগ্য অর্জন করেন।

৬৭৪ খৃষ্টাব্দে যখন প্রথম মুসলিম বাহিনী কনস্টান্টিনোপল অভিমুখে অভিযান শুরু করে হযরত আবু আইয়ুব আনসারী রাযি. ৮৬ বছরের বায়ো-বৃদ্ধ বয়সেও তরবারী হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। লক্ষ্য একটাই ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভবিষ্যৎবাণীর গর্বিত অংশীদার হওয়া। কিন্তু যুদ্ধ চলাকালীন তিনি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তিনি ওছিয়ত করেন, তাঁর কবর যেনো কনস্টান্টিনোপলের প্রবেশপথে দেওয়া হয়। যাতে কনস্টান্টিনোপল বিজয়ী মুসলিম মুজাহিদদের ঘোড়া তাঁর কবর অতিক্রম করে যান।

কনস্টান্টিনোপল বিজয়ে উসমানীয়দের নাম ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকলেও যুগযুগ ধরে মুসলিম শাসকগণ কনস্টান্টিনোপল অভিমুখে অভিযান পরিচালনা করেন।

হযরত উসমান রা. এর শাষণআমলে হযরত মুয়াবিয়া রাযি. কর্তৃক নৌবহর গঠিত হলে গ্রীকদের সাথে সংঘর্ষ হয়। তখন থেকে বাইজেন্টাইনের রাজধানী কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের পরিকল্পনা শুরু হয়।

মুসলমানগণ কনস্টান্টিনোপলে প্রথম অভিযান পরিচালনা করে  উমাইয়া খলিফা হযরত মুয়াবিয়া রাযি. এর শাষণআমলে। ৬৭৪-৭৫ খৃষ্টাব্দে ইয়াজিদের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।

দ্বিতীয়বার ৭১৬-১৭ খৃষ্টাব্দে ৭ম উমাইয়া খলিফা সুলাইমান ইবনে আব্দুল মালিকের শাষণআমলে কনস্টান্টিনোপল অভিমুখে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এবং প্রতিবারই তারা ব্যর্থ হয়।

আব্বাসীয় ৩য় খলিফা আল মাহদি শাহজাদা হারুনুর রশীদের নেতৃত্বে কনস্টান্টিনোপল অবরোধ করেন। ৭৮২ সালের এই অভিযানে আব্বাসীয়রা সাফল্য অর্জন করে। এতে বাইজেন্টাইনরা কর দিতে সম্মত হয়।

খলিফা হারুনের শাসনামলে ততকালীন সম্রাট নাইসিফোরাস কর দিতে অস্বীকৃতি জানালে খলিফা অভিযান চালিয়ে হিরাক্লিয়া দখল করেন। তবুও অজেয় থেকে যায় কনস্টান্টিনোপল।

পরবর্তীতে আব্বাসীয় খেলাফতে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে মুসলমানদের কনস্টান্টিনোপল বিজরের স্বপ্ন অক্ষুণ্ণই থেকে যায়। এছাড়াও সেলজুকরা কনস্টান্টিনোপল অভিমুখে কিছু অভিযান চালিয়েছিল। তবে তা তেমন ফলপ্রসূ হয়নি।

উসমানী যুগ:

নিকোপলিসের যুদ্ধের (১৩৯৬) পর সুলতান প্রথম বায়জিদ কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের সংকল্প করেন। কিন্তু বাইজেন্টাইনদের প্ররোচনায় তৈমুর লং উসমানীয় সাম্রাজ্য ধ্বংসের লক্ষ্যে আঙ্কারায় এগিয়ে আসেন। ১৪০২ সালে বায়জিদ ও তৈমুরের দুটি মুসলিম বাহিনী পরস্পরের মুখোমুখি হোন। এ যাত্রায় উসমানীয়দের হাত থেকে রক্ষা পায় কনস্টান্টিনোপল।

১৪২১ সালে সুলতান দ্বিতীয় মুরাদ উসমানীয় সাম্রাজ্যের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হোন। দ্বিতীয় মুরাদের সিংহাসনে আরোহনের পর বাইজেন্টাইনদের ষড়যন্ত্রে উসমানীয় সাম্রাজ্যে একেরপর এক বিদ্রোহ তৈরি হয়। সুলতান দ্বিতীয় মুরাদ ক্ষুব্ধ হয়ে বাইজেন্টাইনদের কনস্টান্টিনোপল আক্রমণের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হোন।

১৪২১ সালে তিনি কনস্টান্টিনোপল অবরোধ করেন। এবং বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সুলতান মুরাদ যখন কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের দারপ্রান্তে ঠিক তখনই বাইজেন্টাইনদের প্ররোচনায় এশিয়া মাইনরে ভয়াবহ বিদ্রোহ তৈরি করেন মুরাদের ভাই মোস্তফা। ফিরে এসে শক্ত হাতে বিদ্রোহ দমন করেন মুরাদ। এবং মুস্তফাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। ফলে আবারও রক্ষা পেল কনস্টান্টিনোপল।

সুলতান মুহাম্মাদ ১৪৩২ খৃষ্টাব্দের ৩০ মার্চ তৎকালীন উসমানীয় রাজধানী আন্ড্রিয়ানোপলে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বেলা থেকেই শাহজাদা মুহাম্মাদের জন্য কিছু দ্বীনি শিক্ষক নিযুক্ত করেন সুলতান মুরাদ। তার শিক্ষকদের মাঝে আক শামসুদ্দিন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনিই ছোটবেলা থেকেই সুলতান মুহাম্মাদকে কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের জন্য অনুপ্রাণিত করেন।

১১ বয়সেই সুলতান মুহাম্মাদ এমাসিয়া অঞ্চল শাষণের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৪৪৪ সালের ১২ জুলাই সুলতান দ্বিতীয় মুরাদ ও ইউরোপীয় খৃষ্টানদের মাঝে ১০ বছরের শান্তিচুক্তি হলে নিজ সন্তান ১২ বছর বয়সী সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মাদকে ক্ষমতায় বসিয়ে অবসরে চলে যান দ্বিতীয় মুরাদ।

১২ বছর বয়সী মুহাম্মাদকে ক্ষমতায় দেখে ২ মাসের মধ্যেই শান্তিচুক্তি ভঙ্গ করে উসমানীয় সাম্রাজ্যে আক্রমণ চালায়। এসময় সুলতান মুহাম্মাদ তার পিতাকে পুনরায় ক্ষমতায় বসার অনুরোধ করলে সুলতান মুরাদ অস্বীকৃতি জানান। এসময় সুলতান মুহাম্মাদ ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “যদি আপনি সুলতান হোন তাহলে এগিয়ে এসে আপনার সৈন্যদের নেতৃত্ব দিন। আর যদি আমি সুলতান হয়ে থাকি তাহলে আমি নির্দেশ দিচ্ছি আপনি আমার সৈন্যদের নেতৃত্ব দিন”।

১৪৪৪ খৃষ্টাব্দের ১০ নভেম্বর সুলতান দ্বিতীয় মুরাদ পুনরায় ক্ষমতায় আসেন। এবং ভারনার যুদ্ধে পোল্যান্ডের সম্রাট ভ্লেডিসলো ও সেনাপতি জন হানিয়াডির নেতৃত্বাধীন হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড ও ভালাকিয়ার যৌথ খৃষ্টান বাহিনীকে শোচনীয় ভাবে পরাজিত করেন।

১৪৫১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী সুলতান দ্বিতীয় মুরাদ ইন্তেকাল করলে দ্বিতীয় বারের মতো সিংহাসনে আরোহন করেন সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মাদ। বাইজেন্টাইনরা আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করল। তারা সুলতানকে পূর্বের ন্যায় দুর্বল ভেবে তাদের হাতে বন্দী থাকা সুলতানের ভাইকে মুক্ত করে বিদ্রোহ বাঁধানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সুলতান তাদের সকল ষড়যন্ত্র বানচাল করে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে কনস্টান্টিনোপল অবরোধের প্রস্তুতি নিতে লাগলেন।

কনস্টান্টিনোপল ছিল প্রায় খৃষ্ট বর্ষ ৩ শতক থেকে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ শহর। এর তিন দিকে জল ও এক দিকে স্থল। পূর্বে বসফরাস প্রণালি, উত্তরে গোল্ডেন হর্ন ও দক্ষিণে মারমারা উপসাগর। এটি ছিল ভূমধ্যসাগর ও কৃষ্ণসাগরের সংযোগস্থল এবং বসফরাস প্রণালির তীরে অবস্থিত। এমন গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এটি ছিল তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে দূর্ভেদ্য নগরী।

সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মাদ কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের জন্য তৎকালীন বিশ্বের সর্বোচ্চ যুদ্ধপ্রস্তুতি গ্রহণ করেন। তিনি হাঙ্গেরিয়ান কামান প্রস্তুতকারী ‘আরবান’- এর মাধ্যমে সবচেয়ে দূরপাল্লার কামান তৈরি করেন যা ‘শাহী কামান’ নামে পরিচিত। যথাযথ প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে তিনি ১৪৫৩ সালের ৬ এপ্রিল কনস্টান্টিনোপল অবরোধ করেন।

কনস্টান্টিনোপলের ৩ দিকে জলসীমা থাকায় স্থলভাগেই আক্রমণ শুরু করে উসমানীয় বাহিনী। গোল্ডেন হর্ন গুরুত্বপূর্ণ একটি সমুদ্রবন্দর। এদিক আক্রমণে ভয়ে গোল্ডেন হর্নের মুখে শিকল দিয়ে আটকে দেয় বাইজেন্টাইন বাহিনী। এতে করে উসমানীয় নৌবাহিনী বসফরাস প্রণালি দিয়ে গোল্ডেন হর্নে ঢুকতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়।

গোল্ডেন হর্নে শিকল দিয়ে সুরক্ষা নিশ্চিত করার পর স্থলভাগে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে উসমানীয়দের প্রতিহত করতে থাকে বাইজেন্টাইন বাহিনী। এতে করে কনস্টান্টিনোপলের দুর্ভেদ্য প্রাচীর কোনোভাবেই অতিক্রম করতে পারছিলেন না উসমানীয় রা। সুলতান মুহাম্মাদের একের পর এক রণকৌশল খুব সফলভাবেই ভেস্তে দিচ্ছিলো বাইজেন্টাইন বাহিনী।

স্বপ্নে আবু আইয়ুব আনসারী (রাযি.):
লাগাতার অবরোধ করে কনস্টান্টিনোপল দখল করতে না পেরে একরকমের অস্বস্তিবোধ করছিলেন উসমানীয় সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মাদ। সেনাদের ক্লান্তি ও লাশের সারি ক্রমাগত দীর্ঘ হয়ে যাওয়ায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন সুলতান। তখন কিছুদিন তিনি আধ্যাত্মিক ধ্যানে মশগুল থেকে আল্লাহর কাছে কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের জন্য দু’আ করতে থাকেন। এর মধ্যে তিনি স্বপ্নে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয় সাহাবী হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (রাযি.) কে দেখতে পান। তিনি সুলতান মুহাম্মাদকে কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের অনুপ্রেরণা যোগান এবং কনস্টান্টিনোপলের অদূরে নিজ কবরের সন্ধান দেন। পরবর্তীতে স্বপ্নে নির্দেশিত স্থানে মাটি খুঁড়ে আবু আইয়ুব আনসারী (রাযি.) এর কবরের বিষয়টি নিশ্চিত হয়।

সুলতান মুহাম্মাদের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ও কনস্টান্টিনোপল বিজয়:
আগেই বলা হয়েছে গোল্ডেন হর্নের মুখে শিকল দিয়ে বাধা দেওয়ার কারণে শুধু স্থলভাগেই আক্রমণ সীমাবদ্ধ রাখতে হয়েছে উসমানীয়দের। গোল্ডেন হর্নের দিক থেকে আক্রমণের উদ্দেশ্যে সুলতান মুহাম্মাদ এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি স্থলপথে জাহাজ চালিয়ে বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছিলেন।

তিনি রাতের আধারে গাছের টুকরোয় চর্বি দিয়ে পিচ্ছিল করে তাতে ৮০ টি রণতরী বসফরাস থেকে প্রায় ১০ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে গোল্ডেন হর্ন সমুদ্র বন্দরে নিয়ে আসেন।

অবশেষে গোল্ডেন হর্ন ও স্থলভাগ দুদিকেই আক্রমণের সুযোগ তৈরি করে উসমানীয়রা। বাইজেন্টাইনরা টের পেয়ে গোল্ডেন হর্নে সেনা মোতায়েন করলে অন্যদিকে প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে।

২৮ মে ১৪৫৩ ঈসাব্দের রাতে সুলতান মুহাম্মাদ কনস্টান্টিনোপলে চূড়ান্ত হামলার ঘোষণা দেন। ২৯ মে সকালে উসমানীয়দের একের পর এক হামলায় পর্যদুস্ত হয় বাইজেন্টাইন বাহিনী। সেসময় সাধারণ মানুষ এমনকি নারীরা পর্যন্ত উসমানীয়দের প্রতিহত করতে রণক্ষেত্রে নেমে আসে।

দুর্গের প্রাচীর ভেদ করার পর সুলতান মুহাম্মাদ তার বিশেষ জেনিসারি বাহিনী নিয়ে এগিয়ে আসেন। তাদের অন্যতম বীর সেনা হাসান আগা বীরত্বের সাথে বাইজেন্টাইন সেনাদের প্রতিহত করে দুর্গে উসমানীয়দের চাঁদ খচিত পতাকা উড্ডীন করতে সক্ষম হোন। কথিত আছে সেন্ট রোমান্স (বর্তমানে তোপকাপি প্রাসাদ) এর উপর সর্বপ্রথম উসমানীয় প্রতাকা উড্ডীন হয়। দুর্গে পতাকা দেখে উসমানীয়দের স্পৃহা বেড়ে যায় এবং তারা অগ্রসর হলে যুদ্ধের চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারণ হয়ে যায়।

রোমান সম্রাট কনস্টাইন আসন্ন পরাজয় দেখতে পেয়ে নিজের বিশেষ রাজকীয় পোশাক খুলে যুদ্ধে আবর্তিত হন। এবং মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে ১১শ বছরের বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সমাপ্তি ঘটে এবং মুসলমানদের জন্য এক নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়।

২৯ মে সুলতান মুহাম্মাদ বিজয়ী বেশে কনস্টান্টিনোপলে প্রবেশ করেন। তিনি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। তিনি নারী- শিশুদের প্রতি যে দয়া দেখিয়েছেন তা খৃষ্টান ইতিহাসবিদরাও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।

সুলতান মুহাম্মাদ শহরের নাম পরিবর্তন করে ইসলাম বুল তথা ইসলামের শহর রাখেন। পরবর্তীতে তা পরিবর্তন হয়ে বর্তমানের ইস্তাম্বুল নামে পরিচিত। তিনি তার সাম্রাজ্যের রাজধানী আন্ড্রিয়ানোপল থেকে ইস্তাম্বুলে স্থানান্তরিত করেন। তখন থেকে তিনি মুহাম্মাদ আল ফাতিহ তথা বিজেতা মুহাম্মাদ নামে পরিচিত।

দেশে একদিনে রেকর্ড ২৫২৩ জনের করোনা শনাক্ত, মৃত্যু ২৩

0

দেশে ২৪ ঘন্টায় রেকর্ড ২৫২৩ জনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

একদিনে আক্রান্তের দিক থেকে এখন পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে বেশি।

এনিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪২৮৪৪ জনে।

আক্রান্তের হার ২২.৩৩ শতাংশ।

এসময়ের মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১১৩০১ টি।

আজ এক অনলাইন ব্রিফিং-এর মাধ্যমে এ তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।

এছাড়া, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

এনিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৮২ জনে।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা

0

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসী ও বিশ্বের সকল মুসলমানদের শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এক বাণীতে এই শুভেচ্ছা জানান তারা। পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের এই মহামারিতে গণজমায়েত এড়িয়ে ঘরে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।

বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‌‘ঈদুল ফিতর মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা ও সংযম পালনের পর অপার খুশি আর আনন্দের বারতা নিয়ে আমাদের মাঝে সমাগত হয় পবিত্র ঈদুল ফিতর। দিনটি বড়ই আনন্দের, খুশির। এ আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে সবার মাঝে, গ্রামগঞ্জে, সারা বাংলায়, সারা বিশ্বে।’

তিনি বলেন, ‘শহরবাসী মানুষ শিকড়ের টানে ফিরে যান আপনজনের কাছে, মিলিত হয় আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে। এদিন সকল শ্রেণি পেশার মানুষ এক কাতারে শামিল হন। ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নেন। ঈদ সবার মধ্যে গড়ে তোলে সৌহার্দ, সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধন। ঈদুল ফিতরের শিক্ষা সকলের মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক, গড়ে উঠুক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ-এ প্রত্যাশা করি।’

আবদুল হামিদ বলেন, ‘ইসলাম শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম। এখানে হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, কূপমন্ডকতার কোনো স্থান নেই। মানবিক মূল্যবোধ, পারস্পরিক সহাবস্থান, পর মত সহিষ্ণুতা ও সাম্যসহ বিশ্বজনীন কল্যাণকে ইসলাম ধারণ করে। ইসলামের এই সুমহান বার্তা ও আদর্শ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ইসলামের মর্মার্থ ও অন্তর্নিহিত তাৎপর্য মানবতার মুক্তির দিশারি হিসেবে দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ুক, বিশ্ব ভরে উঠুক শান্তি আর সৌহার্দে- পবিত্র ঈদুল ফিতরে এ প্রত্যাশা করি।’

দেশবাসীর প্রতি যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে ঈদুল ফিতর উদযাপনের আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

তিনি আরও বলেন, ‘নিজে ভালো থাকি-অন্যকে ভালো রাখি- এটাই হোক এবারের ঈদে সকলের প্রত্যাশা।’

এদিকে, বাণীতে দেশবাসী ও বিশ্বের সকল মুসলমানদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর উত্তরোত্তর উন্নতি, সমৃদ্ধি ও অব্যাহত শান্তি কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদ শান্তি সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের অনুপম শিক্ষা দেয়। হিংসা ও হানাহানি ভুলে মানুষ সাম্য, মৈত্রী ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ঈদ ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলের জীবনে আনন্দের বার্তা বয়ে নিয়ে আসে। ঈদের আনন্দ আমাদের সবার।’

তিনি বলেন, ‘ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মুসলমানদের আত্মশুদ্ধি, সংযম, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মেলবন্ধন লাভ করুক-এটাই হোক ঈদ উৎসবের ঐকান্তিক কামনা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘হাসি-খুশি ও ঈদের অনাবিল আনন্দে প্রতিটি মানুষের জীবন পূর্ণতায় ভরে উঠুক। বিশ্বের সকল মানুষের সুখ-শান্তি কল্যাণ ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি হোক-আজকের দিনে আমি মহান আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনা করি।’

তিনি বলেন, ‘অস্বাভাবিক পরিবেশে এবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছি। করোনাভাইরাস সমগ্র বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এক অদৃশ্য ভাইরাস মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা বাধ্য হচ্ছি নিজ নিজ অবস্থানে ধৈর্য সহকারে অবস্থান করতে যাতে অপরকে সংক্রমিত না করি বা নিজে সংক্রমিত না হই। এই বিপদের সময় আমাদের স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার, নার্স, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ যারা জীবন বাজি রেখে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আল্লাহ বিপদে মানুষের ধৈর্য পরীক্ষা করেন। শুধু বাংলাদেশ নয় সমগ্র বিশ্ব আজ বিপদগ্রস্ত। এ সময় সকলকে অসীম ধৈর্য নিয়ে সহনশীল ও সহানুভূতিশীল মনে একে অপরকে সাহায্য করে যেতে হবে।’

আজ ঈদ

0

আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর। ৩০ দিন সিয়াম সাধনার পর আজ সারা দেশে উদযাপিত হচ্ছে মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ উল ফিতর।

ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। ফিতরের এক অর্থ ভঙ্গ করা। ঈদুল ফিতরের অর্থ রোজার সমাপ্তি ঘটানোর আনন্দ। অর্থাৎ দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা, তারাবির নামাজ, জাকাত-ফিতরা আদায়ের পর মুসলিম উম্মাহ রোজা ভঙ্গ করে মহান আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নিয়ামতের শুকরিয়াস্বরূপ যে আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে তাই ঈদুল ফিতর। এই আনন্দ কর্মশেষে সাফল্যের আনন্দ। এই আনন্দ প্রাপ্তির আনন্দ। এই আনন্দ আল্লাহর তাকওয়া অর্জনের সাফল্যের আনন্দ। তারপরও ঈদের আনন্দ সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উৎসবে রূপ নেয়। তাই এই আনন্দ হয়ে ওঠে সার্বজনীন।

কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে সেই সার্বজনীন সামাজিক আনন্দ সেভাবে ভাগাভাগি করা যাচ্ছে না।

এক মাস টানা সিয়াম সাধনা শেষে ঈদের অনাবিল আনন্দ বয়ে আনে এক অপার্থিব অনুভূতি। এ আনন্দ পরকালীন জীবনের জন্য শান্তি ও মুক্তি লাভের এক অনন্য আধ্যাত্মিক অনুভূতির। তাই রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের রমজান শেষে শাওয়ালের নতুন চাঁদ দেখামাত্রই খুশির জোয়ার বয়ে যায় প্রতিটি রোজাদারের দেহ-মনে। এই আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে ধনী-নির্ধন ছোট-বড় সবার মধ্যে। প্রতিটি প্রাণে দোলা দেয় ঈদ আনন্দ।

ঈদুল ফিতর বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসব। মানবতার মুক্তির দিশারি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের প্রচলন করেন। বোখারি ও মুসলিম শরিফের হাদিসে এসেছে- মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক জাতিরই উৎসবের দিন আছে। আর আমাদের উৎসব হলো ঈদ। হিজরি দ্বিতীয় সন থেকে মুসলমানরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করে আসছে।

ইনসাফের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আওয়ার ইসলাম সম্পাদকের শুভেচ্ছা বার্তা

0

হুমায়ুন আইয়ুব | সম্পাদক : আওয়ার ইসলাম


বাংলাদেশের সংবাদপত্র একটি শিল্প। সেই শিল্পের নতুন পলক হলো দেশের ইসলামী ভাবধারার মিডিয়াগুলো। এই শিল্পের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য ইসলামী মিডিয়াগুলো কাজ করছে। ইনসাফসহ বর্তমানে ইসলামী ভাবধারার যেসকল অনলাইন মিডিয়াগুলো কাজ করছে তারা সবাই একে অপরের সহযোদ্ধা। আমি আওয়ার ইসলামের সম্পাদক হিসেবে মনে করি, আমার বন্ধু মাহফুজ খন্দকার, শরিফ মুহাম্মাদ, আমি এবং আমরা যারা এ অঙ্গনে আছি সকলেই সহযোদ্ধা, একে অপরের সম্পূরক ও সহযোগী। আমরা একে অপরকে সবসময় পাশে চাই, বন্ধুসুলভ আচরণ চাই।

আমরা যেনো বাংলাদেশের মূলধারার সংবাদপত্র গুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করতে পারি। বিশেষ করে আমাদের আলেম উলামা এবং ইসলামী অঙ্গনকে যেনো আমরা আরো শক্তিশালী করতে চাই, ঐক্যবদ্ধ করতে চাই। ইসলামকে আরো সুন্দরভাবে জাতির সামনে উপস্থাপন করতে চাই। সেই লক্ষ্যে আমরা একে অপরের সম্পূরক হিসেবে কাজ করছি এবং করে যাবো ইনশাআল্লাহ্।

আর ইনসাফ সম্পর্কে বলতে গেলে, তারা দায়িত্বশীল সাংবাদিকতাটাই করে যাচ্ছে। দায়সারা বা ভুল সংবাদ পরিবেশন না করে সবসময়ই তারা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে আসছে। আমি মনে করি এটা ইনসাফের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। ইনসাফকে আমি কোন পরামর্শ দিতে চাইনা কেননা ইনসাফের সম্পাদক অনেক শক্তিমান ও দীপ্তিমান একজন সম্পাদক। তাই আমি কোন পরামর্শ না দিয়ে শুধু চাই পত্রিকাটির পথচলা অতীতের চেয়ে ভবিষ্যতে আরো উজ্জ্বল হোক। সাথে সাথে আমার প্রত্যাশা, ইনসাফ নাগরিক সাংবাদিকতা ও নাগরিক সংবাদপত্রের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে উঠুক।

ইনসাফের এই ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে তার অগ্রযাত্রা আরো সুন্দর হোক, তার অতীত যতোটা উজ্জ্বল ছিলো এরচেয়েও বেশি উজ্জ্বল আগামী তৈরি হোক এটাই আমার প্রত্যাশা। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ইনসাফের সম্পাদকসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা ও আন্তরিক মোবারকবাদ জ্ঞাপন করছি।

(শ্রুতি লিখন)

যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকুক ইনসাফ

0

মারুফ আল মাহমুদ | শিক্ষার্থী: জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা


বাংলাদেশের ইসলামী ঘরনার প্রথম ও জনপ্রিয় অনলাইন পত্রিকা ইনসাফ হাঁটি-হাঁটি পা-পা করে অর্ধযুগ পেরিয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পত্রিকাটির সব সাংবাদিক এবং যারা এ পত্রিকা প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত আছেন তাদের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। পাশাপাশি ইনসাফ টুয়েন্টিফোরের পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদেরও অর্ধযুগপূর্তির শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

ইনসাফ বাংলাদেশের ইসলামী ঘরনার পাঠকের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় অনলাইন পত্রিকার স্থান দখল করে নিয়েছে। সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে ইনসাফ টুয়েন্টিফোর সবসময় বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে চেষ্টা করে। একই সঙ্গে সত্য তুলে ধরতে আপোষহীন ভূমিকা পালন করে আসছে ইনসাফ।

এ পত্রিকার প্রতিবেদনে দল-মত নির্বিশেষে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখায় সবার প্রশংসা অর্জন করেছে। প্রতিষ্ঠার পর অল্পদিনে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছে। এবং অর্ধযুগ পেরিয়েও তা ধরে রেখেছে।
সেই জনপ্রিয়তার মূল কারণ সংবাদ পরিবেশনে পত্রিকাটির আপসহীন অবস্থান ধরে রাখা।

হলুদ মিডিয়ার দৌরাত্ম্যে যখন ইসলামি অঙ্গন দিশেহারা। একের পর এক মিডিয়া হামলায় জর্জরিত হচ্ছিলাম আমরা! ঠিক তখনি মরুভূমির বুকে মিডিয়ার অঙ্কুর রোপন করেছিলো ইনসাফ সম্পাদক সাইয়্যেদ মাহফুজ খন্দকার ভাই। সেই গাছ আজ অর্ধযুগ পেরিয়ে মহীরুহে রুপান্তরিত হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ, ভবিষৎে ইনসাফ হবে ইসলামি ঘরনার মিডিয়ার দিকপাল।

আগামী দিনেও ইনসাফের এর এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং ইসলামী অঙ্গনে ইনসাফ মিডিয়ার অবস্থানকে শক্তিশালী ও দৃঢ় করবে এটাই আমার বিশ্বাস। আমি ইনসাফ টুয়েন্টিফোর ডটকমের সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করি।

ইনসাফ আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে সংবাদমাধ্যমের একটি নতুন ধারার সাথে

0

মহিউদ্দিন কাসেমী | লেখক, অনুবাদক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট


ইসলামী ঘরানার প্রথম পূর্ণাঙ্গ অনলাইন পত্রিকা ইনসাফের অর্থযুগ পূর্তি উপলক্ষে ইনসাফ পরিবারের জন্য রইলো আন্তরিক অভিনন্দন ও মোবারকবাদ।

ইনসাফের সাহসী যাত্রা আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে সংবাদমাধ্যমের একটি নতুন ধারার সাথে। বর্তমানের হলুদ সাংবাদিকতা ও কপিবাজির মহড়ায় নিজেদের অনন্যতা প্রমাণ করতে পারা ইনসাফের একটি বড় সফলতা।

একটি পত্রিকা একটি গোষ্ঠির প্রতিনিধিত্ব করবে এমন মানসিকতার বাইরে এসে তরুণ-যুবা ও বিভিন্ন মতধারার মানুষদের মতবিনিময়ের মাধ্যমে পরিণত হতে পারা নিঃসন্দেহে ঈর্ষণীয়। এক্ষেত্রেও ইনসাফের অনন্যতা অনস্বীকার্য।

আমি পত্রিকাটির উত্তরোত্তর অগ্রগতি ও দীর্ঘ অধিষ্ঠান কামনা করি। পত্রিকাটির আগামীর পথচলা হোক আরো দীপ্তিময় ও বর্ণাঢ্য।