শনিবার, মে ১০, ২০২৫

সুদানের চলমান সংঘর্ষ নিয়ে যা বলছে মুসলিম দেশগুলো

spot_imgspot_img

উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির আধা-সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। চলমান এই সংঘাতে দেশটিতে ৫৬ জন নিহত ও প্রায় ২০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। সশস্ত্র বাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে কয়েক দিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজমান ছিল। এ সংঘর্ষের প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মুসলিম বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ।

তুরস্ক:
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, “আমরা সুদানের চলমান সমস্যা সমাধানে সমস্ত দলগুলোর প্রতি শান্তি ও সংলাপের পথ বেছে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। জাতীয় পুনর্মিলনের মাধ্যমে একটি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান পাওয়া সম্ভব। বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সুদানের জনগণের পাশে সব সময় থাকবে তুরস্ক যেমনটি পূর্বেও ছিল।”

মিসর:
মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে সুদানে চলমান সংঘর্ষের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ও সব পক্ষকে সংযম প্রকাশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

সৌদি আরব:
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান এক টুইট বার্তায় “সুদানের ভাইদের দ্রুত সামরিক অভিযান বন্ধ করার” আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও উত্তেজনা এড়াতে ভাতৃপ্রতিম সুদানী জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।

সংযুক্ত আরব আমিরাত:
আরব আমিরাত সুদানের সব পক্ষকে সংযম ও সংলাপের মাধ্যমে এ সংকট অবসানের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।

তিউনিসিয়া:
তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে সুদানী দলগুলোকে “সর্বোচ্চ মাত্রায় সংযম” দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।

আরব লীগ:
আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল গীত সুদানে উভয় পক্ষের অস্ত্র ব্যবহারের নিন্দা করেছেন। পাশাপাশি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিরও আহ্বান জানিয়েছেন।

গত শনিবার (১৫ এপ্রিল) হঠাৎ করেই ক্ষমতাসীন সামরিক শাসকগোষ্ঠীর সেনাবাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) এর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। যার ফলে পুরো দেশ জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

আরএসএফ এর কমান্ডার জেনারেল মুহাম্মাদ হামদান দাগালো সুদানের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থানের অভিযোগ আনেন। তার দাবি সেনাবাহিনীই অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেছে ও আরএসএফ সেনাদের সংঘর্ষে বাধ্য করেছে। এছাড়াও তিনি জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়েছেন।

কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এই লড়াই কখন শেষ হবে তার কোন নিশ্চয়তা আমি দিতে পারছি না, তবে যতটা সম্ভব কম ক্ষতির মধ্য দিয়ে আমরা এই লড়াই শেষ করতে চাই।”

যদিও সুদানের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

অন্যদিকে সুদানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ হামদাক উভয়পক্ষকে সংঘর্ষ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “স্বদেশের মানুষের মৃতদেহের উপর দিয়ে কেউ বিজয়ী হতে পারবেনা।”

উল্লেখ্য, সুদানের উভয় বাহিনীর মধ্যে এই লড়াই চলমান থাকলে তা শুধু সেখানেই নয় আশেপাশের অঞ্চলকেও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। যার ফলে প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে উপসাগরীয় দেশগুলোরও জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সূত্র: আরব নিউজ, আনাদোলু নিউজ এজেন্সি, সিএনএন, দি গার্ডিয়ান ও বিবিসি

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img