রবিবার | ১৬ নভেম্বর | ২০২৫

ব্যারল প্রতি প্রায় ২৫ ডলার কমে অপরিশোধিত তেল বিক্রি করছে আফগানিস্তান

বৈশ্বিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক মন্দার মাঝেও ব্যারল প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য থেকে প্রায় ২৫ ডলার কমে অপরিশোধিত তেল বিক্রি করছে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান। গত সপ্তাহে ৬০০ টন ক্রুড ওয়েল বা অপরিশোধিত তেলের নিলাম করে দেশটি।

খনিজ ও জালানি মন্ত্রী মাওলানা শাহাবুদ্দিন দিলাওয়ার সংবাদমাধ্যমকে জানান, আমু দরিয়ার কাশকারি কূপ থেকে উত্তোলিত ৬০০ টন তেলের নিলাম করেছে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান। টেন্ডার উত্তীর্ণ কোম্পানির কাছে আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য থেকেও ব্যারল প্রতি প্রায় ২৫ ডলার সস্তায় এই তেল বিক্রি করা হয়।

পাকিস্তান থেকে আকস্মিক আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর কারণে অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে রয়েছে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি। তা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কম মূল্যে ৬০০ টন তেল বিক্রি করে আফগান সরকার ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করেছে।

আফগান তেল ও খনী মন্ত্রী জানিয়েছেন হেরাত প্রদেশের ১১টি ভিন্ন ভিন্ন এলাকার তেল ক্ষেত্রগুলো থেকেও অচিরেই তেল উত্তোলন শুরু করা।

মাওলানা শাহাবুদ্দিন দিলাওয়ার বলেন, আল্লাহ প্রদত্ত এই সম্পদ আফগানিস্তানের তেল গ্যাসের চাহিদা মিটিয়ে বহির্বিশ্বে রপ্তানির মাধ্যমে ইমারাতে ইসলামিয়াকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলবে। ইনশাআল্লাহ আগামী ৩ বছরের মধ্যে সর্বক্ষেত্রে আমরা আমাদের নিজেদের পেট্রোল, ডিজেল, বিটুমিন ও ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করার সক্ষমতা অর্জন করবো।

আফগান খনি ও জালানি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে আমু দরিয়া অঞ্চলের তেল ক্ষেত্র থেকে বর্তমানে দৈনিক ১ লক্ষ টন তেল উত্তোলন করা হচ্ছে। অচিরেই এতে আরো ২৪টি কূপ খনন করা হবে এবং এর পরিমাণ দৈনিক ২ লক্ষ টনে গিয়ে পৌঁছবে।

অপরিশোধিত তেল জালানি এবং খনিজ তেল নামেও পরিচিত। খনিজ তেলে বিভিন্ন ধরণের উপাদান বিদ্যমান থাকে। উপাদানগুলোর স্ফুটনাঙ্কও ভিন্ন ভিন্ন হয়। প্রাথমিকভাবে এই খনিজ তেল ব্যবহারের উপযোগী থাকে না। ব্যবহার উপযোগী করার জন্য তেল পরিশোধনাগারে এর বিভিন্ন অংশকে আংশিক পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়। স্ফুটনাংকের উপর ভিত্তি করে তেল পরিশোধনাগারে পৃথকীকৃত বিভিন্ন অংশের নাম হয় পর্যায়ক্রমে পেট্রলিয়াম গ্যাস,পেট্রোল বা গ্যাসোলিন, ন্যাপথা, কেরোসিন, ডিজেল ওয়েল, লুব্রিকেটিং ওয়েল ও বিটুমিন। যা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

শিল্পোন্নত দেশগুলো জ্বালানি চাহিদা মেটাতে ও অর্থ সাশ্রয়ে সরাসরি অপরিশোধিত তেল ক্রয় করে এর মজুদ করে থাকে। নিজস্ব পরিশোধনাগারে পরিশোধনের মাধ্যমে এর থেকে পেট্রোল, ন্যাপথা, কেরোসিন, ডিজেল, লুব্রিকেন্ট ও বিটুমিন আলাদা করে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করে।


আজমীর শরীফ খ্যাত বিখ্যাত সুফি বুজুর্গ খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী (রহ.) এর মাজারকে এবার মন্দির দাবী করলো ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। মহারানা প্রতাপ সেনা নামের একটি উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল মাজারটিকে মন্দির দাবী করে পদযাত্রার ঘোষণা দিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, মহারানা প্রতাপ সেনা নামের উগ্র হিন্দুত্ববাদী দলটি দাবী করেছে, রাজস্থানের আজমীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক দরগাহটি এক সময় হিন্দু মন্দির ছিলো। পরবর্তীতে মুসলিমরা মন্দিরটিকে দরগাহতে রূপান্তরিত করেছে।

দলটির নেতারা তাদের দাবীর স্বপক্ষে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ, কিছু বিতর্কিত ঐতিহাসিক বর্ণনা ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অনুসন্ধানকে যুক্তি ও প্রমাণ স্বরূপ সামনে নিয়ে আসে। যদিও তাদের উপস্থাপনকৃত এসব বিতর্কিত ঐতিহাসিক বর্ণনা ও যুক্তিপ্রমাণ মূলধারার ঐতিহাসিকদের দ্বারা বহুকাল আগেই প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এরপরও তারা আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি নিজেদের দাবীতে অনড় থেকে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও মুসলিম আধ্যাত্মিক গন্তব্য হিসেবে পরিচিত আজমির শরীফ অভিমুখে পদযাত্রার ঘোষণা দিয়েছে।

আজমীর শরীফের পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ হিন্দুত্ববাদীদের এই দাবীকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। দরগাহ কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, আজমীর শরীফ শতাব্দীর পর শতাব্দী ঐক্য ও বিশুদ্ধ আধ্যাত্মিকতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দরগাহ অথবা দরগাহ সংলগ্ন পরিবেশ পাল্টে ফেলার প্রচেষ্টা ভালো ফলাফল বয়ে আনবে না। দেশের সামাজিক কাঠামোতে এর প্রভাব ও পরিণতি হবে সুদূরপ্রসারী।

অপরদিকে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের দরগাহ অভিমুখে পদযাত্রা ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় দরগাহ কর্তৃপক্ষের বিবৃতি আসায় সতর্ক অবস্থানে থাকার ঘোষণা দেয় রাজস্থানের স্থানীয় সরকার ও প্রশাসন। আহবান জানায় সকলকে শান্ত পরিবেশ ও সম্প্রীতি বজায় রাখার। যেকোনো ধরণের সহিংসতা এড়াতে মোতায়েন করে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী।

সূত্র: মুসলিম মিরর

spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img