২০২৭ সালের মধ্যেই অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের।
আজ থেকে প্রায় ২৬ বছর পূর্বে এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস-এর প্রতিষ্ঠাতা শহীদ শায়খ আহমাদ ইয়াসীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
১৯৯৯ সালে এক আরব মিডিয়াকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে শায়খ আহমাদ ইয়াসীন রহ. কে প্রশ্ন করা হয়েছিল- ইসরাইলের ভবিষ্যত প্রসঙ্গে। শায়খ তখন উত্তরে বলেছিলেন, ইসরাইল রাষ্ট্রের ভিত্তি হলো জুলুম ও নিপীড়নের উপর। আর জুলুমের উপর প্রতিষ্ঠিত কোনো কিছু কখনই টিকে থাকতে পারে না; এর ধ্বংস অনির্বার্য।
শায়খ আহমাদ ইয়াসীন রহ. বলেন, দুনিয়ার কোনো পরাশক্তিই শেষ পর্যন্ত বহাল থাকতে পারে না। মানুষ যেমন শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে উপনীত হয় অত:পর, যৌবন এবং বার্ধক্য। এরপর অনির্বার্য পরিণতি। তেমনই রাষ্ট্রগুলোর ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য।
শায়খকে তখন উপস্থাপক প্রশ্ন করেন- তবে ইসরাইল বর্তমানে কোন পর্যায়ে আছে? উত্তরে শায়খ বলেন, ইসরাইল আগত শতাব্দীর (একবিংশ) এক চতুর্থাংশের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, ২০২৭ সালে ইসরাইলের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।
উপস্থাপক শায়খের নিকট হতে এই নির্দিষ্ট সালের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেননা, আমি কুরআনের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসী। কুরআন আমাদের বার্তা দেয় যে, ৪০ বছর পর পর সকল জাতির ভাগ্য পরিবর্তন হয়।
তিনি আরও বলেন, ইসরাইলের শুরুর প্রথম ৪০ বছরে নাকাবা ও বিপর্যয় সংগঠিত হয়েছে। এবং পরবর্তী ৪০ বছরে ইন্তিফাদা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা হয়েছে। এর পরবর্তী ৪০ বছরের মধ্যেই আমরা ইসরাইলের ধ্বংস দেখবো।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে ইসরাইল কর্তৃক জোরপূর্বক উচ্ছেদ করাকে নাকাবা বলা হয়।। ১৯৮৭ সালে গাজ্জায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনাকে প্রথম ইন্তিফাদা বলা হয়। প্রথম ইন্তিফাদা ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত চলমান ছিল।
অন্যদিকে ১৯৮৭ সালেই গাজ্জায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস প্রতিষ্ঠা করেন শায়খ আহমাদ ইয়াসীন রহ.। শায়খ রহ. শৈশবেই অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন- তা সত্ত্বেও তিনি হিম্মত ও মনোবল হারান নি। ১৯৮২ সালে প্রথমবারের মতো পক্ষাঘাতগ্রস্থ শায়খকে ধরে নিয়ে যায় ইসরাইলি বাহিনী। পরে তিনি এক বন্দী বিনিময় চু্ক্তির আওতায় ৩ বছর পর মু্ক্তি পান। এরপর আবারও ১৯৯১ সালে তাঁকে ধরে নিয়ে যায় ইসরাইলী বাহিনী। সে সময় তাঁকে ১৫ বছরের সাজা! দেয় ইসরাইলি আদালত। পরে জর্ডানে হামাস নেতা খালেদ মি‘শালকে হত্যাচেষ্টাকারী গ্রেপ্তারকৃত মোসাদ এজেন্টদের মুক্তি দেওয়ার পরিবর্তে ১৯৯৭ সালে শায়খকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় ইসরাইল।
২০০৪ সালের ২২ মার্চ ফজরের নামাজে মসজিদে যাওয়ার সময় গাজ্জায় মিসাইল ছুঁড়ে দুই ছেলেসহ শায়খ আহমাদ ইয়াসীনকে শহীদ করে বিশ্ব মানবতার শত্রু ইসরাইল।
“এই পথ আমরা বেছে নিয়েছি- এর শেষ শাহাদাত বা বিজয়ের মাধ্যমেই হতে পারে”
সূত্র: জিও নিউজ