রবিবার, মে ১১, ২০২৫

পাকিস্তানের পাল্টাঘাতে কাঁপছে সীমান্ত, চীনের অস্ত্র কি বদলে দিচ্ছে যুদ্ধের চিত্র?

spot_imgspot_img

দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের নতুন ধাপে একটি অনুল্লিখিত কিন্তু ক্রমবর্ধমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে চীন। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক পাল্টাপাল্টি হামলা, ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিক্রিয়া এবং বিমানঘাঁটি ধ্বংসের ঘটনায় চীনের সামরিক প্রযুক্তি ও কৌশল পরোক্ষভাবে এই সংঘাতকে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে গেছে।

ব্রিটিশ সামরিক বিশ্লেষক শন বেল এই প্রসঙ্গে বলেন, “চীনের ভূমিকা সত্যিই মুগ্ধকর।” তার ভাষ্য অনুযায়ী, ভারত প্রাথমিকভাবে ফাইটার জেট হারানোর কথা অস্বীকার করলেও, ধীরে ধীরে আরও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ সামনে আসছে।

তিনি জানান, বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে যে, চীনে তৈরি একটি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ভারতের একটি ফ্রান্সের নির্মিত রাফায়েল জেটকে ভূপাতিত করেছে। যদি এটি সত্য হয়, তাহলে এটি হবে চীনা রপ্তানিকৃত অস্ত্রে একটি পশ্চিমা যুদ্ধবিমান ধ্বংসের প্রথম নজির, যা পশ্চিমা দুনিয়ার জন্য এক গভীর উদ্বেগের ইঙ্গিত।

পাকিস্তান বর্তমানে ‘অপারেশন বুনয়ানুল মারসুস’ পরিচালনা করছে, যা ভারতীয় আগ্রাসনের জবাবে সমন্বিত সামরিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে চালু করা হয়েছে।

এই অভিযানে পাকিস্তান লক্ষ্যভিত্তিক হামলায় ভারতের সিরসা বিমানঘাঁটি ধ্বংস করেছে এবং রাজৌরিতে ভারতীয় সামরিক গোয়েন্দা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে নিশানা করেছে বলে নিরাপত্তা সূত্র নিশ্চিত করেছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলছেন, “আজ আমরা ভারতের বিরুদ্ধে যথাযথ জবাব দিয়েছি এবং নিরীহ মানুষের রক্তের প্রতিশোধ নিয়েছি।”

তিনি নিশ্চিত করেছেন যে পাকিস্তান মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর, বিশেষ করে যেখান থেকে পাকিস্তানে হামলা করা হয়েছিল।

এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, “যদি ভারত থামে, তাহলে আমরাও থামব।” তিনি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, পাকিস্তান এমন একটি শান্তি চায় যেখানে কারো আধিপত্য থাকবে না।

এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জি-৭ জোট ভারতের ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইসলামাবাদে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরুর জন্য সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন।

চীন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ, এবং পাকিস্তান তার অন্যতম প্রধান ক্রেতা। চীনের তৈরি যুদ্ধবিমান, যেমন জেএফ-১৭ এবং তাদের রপ্তানিকৃত এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল পশ্চিমা সামরিক প্রযুক্তির সঙ্গে টক্কর দেওয়ার মতো সক্ষমতা অর্জন করছে বলে মনে করা হচ্ছে।

যদি ভারতীয় রাফায়েল জেট সত্যিই চীনা প্রযুক্তির হামলায় ভূপাতিত হয়ে থাকে, তাহলে সেটি শুধু ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব নয়, বরং চীন-যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক ভারসাম্যের মধ্যে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।

সূত্র : আল জাজিরা

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img