রবিবার, জুন ৮, ২০২৫

সিরিয়ায় আসাদ বিদায়ের পর আনন্দময় ঈদুল আজহা পালন

spot_imgspot_img

স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতনের পর প্রথমবারের মতো সিরিয়ার জনগণ ঈদুল আজহা পালন করেছে। দেশটির রাজধানী দামেস্কসহ অন্যান্য শহরের মসজিদ ও ঈদগাহে মানুষের আগমন ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। ঈদের আগে থেকেই তারা আনন্দ করেছ।

স্থানীয়রা সিরিয়া টিভিকে জানান, দামেস্কে ঈদের আগের রাতে আল-হামিদিয়াহ বাজারে ছিল উপচে পড়া ভিড়। বাজারে ছিল প্রাণবন্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশ। ব্যবসায়ীরা জানান, আগের বছরের তুলনায় এবার বিক্রি অনেক ভালো হয়েছে।

দীর্ঘ প্রায় ১৩ বছর গৃহযুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ পেরিয়ে সিরিয়া পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে দেশটি। এর মাঝেই মানুষের কেনাকাটা ও সামাজিক কার্যকলাপে স্পষ্ট ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।

আল-হামিদিয়াহ বাজারের একজন কাপড়ের দোকানদার ইমাদ আল-জেইন বলেন, “আজ মানুষ তাদের প্রবাসী আত্মীয়স্বজনের সহায়তায় কাপড় কিনতে পারছে। ডলারের দরপতনের কারণে দামও কিছুটা কমেছে। আগে এক মিলিয়ন লিরা দিয়ে চারটা জিনিস কেনা যেত, এখন পাঁচ বা ছয়টা জিনিস কেনা সম্ভব।” তিনি আরও বলেন, “পুরনো সরকারের চাঁদাবাজি ও অতিরিক্ত শুল্ক এখন আর নেই — এটাই বড় পরিবর্তন।”

অনেক প্রবাসী সিরিয়ান এই ঈদে দেশে ফিরে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছেন। রিম আল-মুহাম্মদ বলেন, আমার ভাই, যাকে আগে আসাদের গোয়েন্দারা খুঁজছিল, অবশেষে কুয়েত থেকে ফিরে এসেছে। আট বছর পর এবার আমরা একসঙ্গে ঈদ করছি।

নিরাপত্তা বাহিনী প্রধান বাজারগুলোর প্রবেশপথে নিয়োজিত ছিল, তবে তারা কারও উৎসব ব্যাহত করেনি। বাগদাদ স্ট্রিটে একটি চেকপয়েন্টে নিরাপত্তাকর্মীরা পথচারীদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেন — যা আগের শাসনামলে অকল্পনীয় ছিল।

রাষ্ট্রপতি আহমাদ আল-শারা জাতির উদ্দেশে এক বার্তায় বলেন, স্বাধীন সিরিয়ান জনগণ, আমি আপনাদের ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানাই — অত্যাচারী শাসনের পতনের পর এটি আমাদের প্রথম ঈদ। আমরা একসাথে এমন একটি দেশ গড়ে তুলব, যা আপনাদের ত্যাগের যোগ্য। ঈদ মোবারক।

পরিবারের লোকেরা পার্ক, জনসমাগম এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। এবং শহীদের কবর জিয়ারত করে। এটি সিরিয়ার একটি ঐতিহ্য যা আসাদের পতনের আগেও সীমিতভাবে পালন হতো। অনেক বছর পর দেশটিতে এই ঐতিহ্য ফিরে এসেছে।

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img