শনিবার | ২৭ সেপ্টেম্বর | ২০২৫

ধর্ষণ-চুরি-লুটপাট-চাঁদাবাজির নাম রাজনীতি হতে পারে না : মুফতী ফয়জুল করীম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী ফয়জুল করীম বলেছেন, ধর্ষণ, চুরি, লুটপাট ও চাঁদাবাজির নাম রাজনীতি হতে পারে না। এসব হচ্ছে জুলুম ও ডাকাততন্ত্র, যা কোনো রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা হতে পারে না। গত ৫৩ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা দেশকে শোষণ করেছে, অন্যায়-অবিচার চালিয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করেছে। প্রায় ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরের সালথা উপজেলা সদরে সালথা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে ফয়জুল করীম বলেন, কমিশন বলছে, পিআর পদ্ধতি সংবিধানে নেই। কিন্তু আপনি নিজেই তো সংবিধানে নেই! সংবিধান অনুযায়ী, সরকার পরিবর্তনের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে এবং সেই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নির্ধারিত হবেন। অথচ নির্বাচন কমিশনের বর্তমান নিয়োগ হয়েছে তিন মাস পার হওয়ার পর যা সংবিধান লঙ্ঘনেরই শামিল।

ফয়জুল করীম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নেই মানে, প্রধান বিচারপতি নেই, ডিজিএফআই ও এনএসআই প্রধান নেই, আইজিপি নেই এমনকি বায়তুল মোকাররমের ইমামও নেই। এটা কি রাষ্ট্র? রাষ্ট্র হলে, তার একটি কুকুরও না খেয়ে মারা গেলে সরকারের জবাবদিহি করতে হয়। সেটাই প্রকৃত রাষ্ট্র।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা বহু দলের শাসন দেখেছি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, এমনকি আয়ুব খান, শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমানের শাসনও দেখেছি। কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাগ্য কখনোই বদলায়নি। আগে একদল চাঁদাবাজি করেছে, এখন আরেক দল করছে। ধর্ষণের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। শুধু দলের নাম ও নেতার মুখ বদলেছে, কিন্তু নীতি বদলায়নি।

তিনি আরও বলেন, আমরা আর চোর-ডাকাতদের ক্ষমতায় দেখতে চাই না। শুধু নেতা নয়, নীতির পরিবর্তন চাই। চোরের বদলে আরেক চোর, বা ডাকাতের বদলে আরেক ডাকাত আনলে চলবে না। প্রকৃত পরিবর্তন আনতে হলে ইসলামী দলকে ক্ষমতায় আনতে হবে।

বাংলাদেশের আদালত ও বিচার ব্যবস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজকের আদালতগুলোর অবস্থা ভয়াবহ। যে যখন ক্ষমতায় থাকে, বিচারকরা তার পক্ষেই রায় দেন। যদি সরকারি দলের কেউ হন, তাহলে খুন করেও মুক্ত থাকবেন। আর যদি না হন, তাহলে নির্দোষ হলেও জেলে পচে মরতে হবে। এটা কোনো ন্যায়বিচার হতে পারে না।

ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা) আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক হাফেজ মুহাম্মদ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, ফরিদপুর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি মুফতী মোস্তফা কামাল ফরিদপুরী, শাকপালদিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা লিয়াকত আলী এবং উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল ফজল মুরাদ।

spot_img
spot_img

এই বিভাগের

spot_img