ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলি বাহিনীর হাতে বন্দি থাকা অবস্থায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন গাজ্জাগামী ত্রাণবাহী জাহাজের ইতালীয় ক্যাপ্টেন ও অ্যাক্টিভিস্ট তোমাসো বোরতোলাচ্ছি। গাজ্জার জন্য মানবিক সহায়তা নিয়ে যাওয়ার সময় আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে তাদের জাহাজটি অপহরণ করা হয়েছিল।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা (জিএসএফ) নামের এই ত্রাণবহরে প্রায় ৪৪টি জাহাজ এবং বিভিন্ন দেশের কয়েকশ অ্যাক্টিভিস্ট ছিলেন। দলটি গত ৩০শে আগস্ট বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। এরপর গত ১ অক্টোবর রাতে ইসরাইলি বাহিনী জাহাজগুলো আটক করে এবং বোরতোলাজ্জিসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। ৪ অক্টোবর তাদের কয়েকজনকে মুক্তি দিয়ে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
মুক্তির পর ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইতালীয় এই ক্যাপ্টেন জানান, কারাগারে থাকা অবস্থায় অর্জিত অভিজ্ঞতা এবং তার তুর্কি সহকর্মীদের ঈমান তাকে ইসলাম গ্রহণে অনুপ্রাণিত করেছে। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি ফিলিস্তিনি কেফিয়াহ পরে তার নতুন বিশ্বাস ও অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গীরা তুরস্কের এবং প্রায় সবাই মুসলিম ছিলেন। তারা যখন নামাজ পড়ছিলেন, তখন ইসরাইলি পুলিশ এসে তাদের বাধা দেয়। আমার মনে হয়েছিল এর প্রতিবাদ করা প্রয়োজন, এবং এরপরই আমি আমার বন্ধুর সাথে শাহাদা পাঠ করি।’
জানা গেছে, শাহাদা পাঠ করার আগে তোমাসো বোরতোলাজ্জি জানতে চেয়েছিলেন, তার শরীরে ট্যাটু থাকা সত্ত্বেও আল্লাহ তাকে মুসলিম হিসেবে গ্রহণ করবেন কিনা। তার তুর্কি সঙ্গী বাকির দেভিলি তাকে আশ্বস্ত করেন, বিশ্বাস চেহারার ওপর নয়, বরং ঈমানের ওপর নির্ভর করে। দেভিলি জানান, বোরতোলাজ্জি একটি প্রিজন ভ্যানে থাকা অবস্থায় ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, ‘প্রিজন ভ্যানেই সে শাহাদা পাঠ করে মুসলিম হয়। যখন সবাই তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছিল, তখন ইসরাইলি পুলিশ তাকে একটি সেলে ছুড়ে ফেলে দেয়।’
বোরতোলাজ্জি তার ইসলাম গ্রহণকে এক গভীর স্বচ্ছতা ও মানসিক শান্তির মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল যেন আমি নতুন করে জন্মেছি।’
উল্লেখ্য, এর আগেও ফিলিস্তিনিদের জীবনাচার দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০২৩ সালের নভেম্বরে আমেরিকান অ্যাক্টিভিস্ট ও টিকটকার মেগান রাইস ইসলাম গ্রহণ করেন। এর পরের মাসে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের একটি মসজিদে প্রায় ৩০ জন নারী একইভাবে ইসলামে দীক্ষিত হন।