বুধবার | ২৯ অক্টোবর | ২০২৫

অস্ত্র মামলায় যুবলীগ নেতা সম্রাটের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

অস্ত্র মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া এ রায় ঘোষণা করেন। তবে সম্রাট পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

রায়র পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের যুব শাখা, যুবলীগ ঢাকা শহর দক্ষিণ ইউনিটের সভাপতি ছিলেন। সেই কারণে তাকে জনসাধারণের শান্তি, প্রগতি এবং জনস্বার্থ রক্ষাকারী নেতা হিসেবে আলাদাভাবে খ্যাতিমান হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু রেকর্ডে আমি যা দেখতে পাচ্ছি তা হল, প্রসিকিউশন তাকে ক্ষমতার অপব্যবহারের একজন প্রতীকী চালক হিসেবে চিত্রিত করেছে।

বিচারক আরও বলেন, তার কাছে বৈদ্যুতিক শক মেশিন, বিশেষ লাঠি এবং অ্যাম্ফিটামিন ভিত্তিক মাদক ইয়াবা ট্যাবলেট ছিল যা গোপন কক্ষে মানুষকে নির্যাতন করার জন্য ব্যবহৃত হত। আমরা নিশ্চিত নই যে তিনি এইগুলো ব্যবহার করে কতজনকে নির্যাতন করেছিলেন যাদের তিনি তার রাজ্যের জন্য হুমকি বলে মনে করেছিলেন। শুধু তাই নয়, এফআইআরে তাকে ক্যাসিনোর সম্রাট হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং ক্যাসিনো ব্যবসার জন্য প্রতিষ্ঠিত প্রায় ১০টি ক্লাবের সাথে তার সম্পৃক্ততা ছিল।

তিনি সরকারি ও বেসরকারি অফিসে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাওযার জন্য একটি শক্তিশালী ক্যাডার বাহিনী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং তাদেরকে পাপের রাজতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ ছাড়াই বজায় রাখার জন্য ব্যবহার করেছিলেন। অতএব, অভিযুক্ত মোঃ ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট একটি অত্যাধুনিক ৭.৬৫ পিস্তল এবং পাঁচ রাউন্ড তাজা গুলি রাখার কারণে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ব্যতীত অন্য কোনও শাস্তি আইনের উদ্দেশ্য পূরণে যথেষ্ট হবে না।

আদালতের পেশকার শাহাদাত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে র‌্যাব সম্রাটকে গ্রেফতার করে। পরে সম্রাটকে নিয়ে তার কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, পিস্তল ও বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর চামড়া উদ্ধার করা হয়।

বন্যপ্রাণীর চামড়া রাখার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত তখন সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। পরদিন, ৭ অক্টোবর র‌্যাব-১-এর ডিএডি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে রমনা থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা করেন।

তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর অস্ত্র মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন র‌্যাব-১-এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) শেখর চন্দ্র মল্লিক। এরপর চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

মামলার বিচারকাজ চলাকালে ১০ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।

সূত্র: বাসস

spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img