সিলেটে দিন দিন করোনা রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। সাথে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা।
এরমধ্যে বিভিন্ন সংকটের কারণে বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।
এমন পরিস্থিতিতে কিছুদিন আগে করোনা চিকিৎসার জন্য সিলেটে বেসরকারি দু’টি হাসপাতাল অধিগ্রহণের কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
যদিও শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালেই ভরসা রাখতে হচ্ছে পুরো সিলেট বিভাগের রোগীদের।
এ অবস্থায় সিলেটে করোনার রোগীদের জন্য ৫০০ শয্যার হাসপাতাল চেয়ে দুই মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। করোনার ‘রেড জোন’ সিলেটে করোনার সংক্রমণ দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি গতকাল মঙ্গলবার (৯ জুন) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও সিলেট-১ আসনের সাংসদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বরাবরে এ চিঠি প্রেরণ করেন।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, চিঠিটি মঙ্গলবার বিকেলে ই-মেইলে ও ডাকযোগে দুই মন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। এ চিঠির অনুলিপি সিলেট বিভাগীয় কমিশনার বরাবরেও প্রেরণ করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকে ১০০ শয্যার সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে সরকারিভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যে হারে রোগী বাড়ছে, তাতে সরকারিভাবে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল এখন প্রয়োজন। এটি হতে পারে সরকারি ও বেসরকারি কোনো হাসপাতালকে একীভূত করে সরকারিভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মাধ্যমে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যয় নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষজনের জন্য সহনীয় নয়। তাই সরকারি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ক্ষেত্র বাড়াতে হবে। তা না হলে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে।’
এ বিষয়ে জানতে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলে রিসিভ করেননি।
পরে সিলেটে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম আজ বুধবার (১০ জুন) সিলেটভিউ-কে জানান, করোনার ভয়াবহ বিস্তারে সিলেটের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র মহোদয় সিলেটের জন্য ৫০০ শয্যার হাসপাতাল চেয়ে দুই মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। চিঠির উত্তর এখনও আসেনি বা এ বিষয়ে কিছু এখনও জানা যায়নি।
তিনি বলেন, সিলেটের বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে এই চাওয়াটা সরকারের পক্ষ থেকে পূরণ করা উচিৎ।
এক প্রশ্নের জবাবে সিসিক’র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, কোনো নির্দিষ্ট হাসপাতালের নাম উল্লেখ করা হয়নি আবেদনে। সরকার যদি চায় বেসরকারি কোনো হাসপাতালকে অধিগ্রহণ করেও এটি করতে পারে। সিলেটে এই মুহুর্তে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল না হলে করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে।’
উল্লেখ্য, করোনা চিকিৎসার জন্য কিছু দিন আগে সিলেটের নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মাউন্ট এডোরা হসপিটাল অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় লোকজনের আপত্তির মুখে নগরের নয়াসড়কস্থ মাউন্ট এডোরা হাসপাতাল অধিগ্রহণ থেকে পিছু হটেন সংশ্লিষ্টরা। তবে ৩০০ শয্যার নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়ার ব্যাপারে দফায় দফায় সভা-আলোচনা ও চিঠি চালাচালি হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাসপাতালটি অধিক টাকা চাচ্ছে এমনটি দাবি করে অধিগ্রহণ থেকে সরে আসে সরকার।
তবে নর্থ ইস্ট নিয়ে এখনও আশাবাদি সিসিক। এ বিষয়ে ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, নর্থ ইস্টকে অধিগ্রহণের প্রক্রিয়াটি এখনও শেষ হয়নি। এখনও আলোচনা চলছে। দুই পক্ষ সমঝোতায় আসলে নর্থ ইস্টকেও প্রস্তাবিত ৫০০ শয্যার করোনা হাসপাতাল করা যেতে পারে।









