শনিবার, জুন ৭, ২০২৫

জাতীয় পর্যায়ের সাফল্যে চুয়াডাঙ্গা সায়েন্স অ্যান্ড রোবোটিকস ক্লাব

spot_imgspot_img

প্রযুক্তি চর্চা সাধারণত শহরকেন্দ্রিক বিষয় হিসেবে বিবেচিত হলেও, সীমান্তবর্তী ছোট জেলা চুয়াডাঙ্গার একদল তরুণ প্রমাণ করেছেন—সফলতার জন্য জায়গা নয়, প্রয়োজন সাহস, নিষ্ঠা ও স্বপ্নের প্রতি অটল বিশ্বাস। এই বিশ্বাসের জোরেই তারা পৌঁছে গেছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উদ্ভাবনী মঞ্চে।

চুয়াডাঙ্গা সায়েন্স অ্যান্ড রোবোটিকস ক্লাব ইতিমধ্যেই জেলার সীমানা ছাড়িয়ে দেশের প্রযুক্তিনির্ভর তরুণ উদ্যোগগুলোর অন্যতম হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।

অর্জন করেছে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য। এর মধ্যে রয়েছে, ইসমাইল-আল আজারি সায়েন্স ফেস্ট ২০২৫-এ প্রথম রানারআপ, ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা ও প্রযুক্তি সপ্তাহ (জেলা পর্যায়)-এ প্রথম স্থান, এবং WICE ২০২৫ (বাংলাদেশ জাতীয় রাউন্ড)-এ তিনটি রৌপ্য পদক, তিনটি ব্রোঞ্জ পদক ও একটি বিশেষ সম্মাননা।

ক্লাবের প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে—রোবোটিকস, সেন্সরনির্ভর স্মার্ট সল্যুশন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, রিমোট নিয়ন্ত্রিত সিস্টেম এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-নির্ভর উদ্ভাবন।

জানা গেছে, ক্লাবটির পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রাখছেন এর প্রতিষ্ঠাতা মো. জাহিদ হাসান জিহাদ। শুরু থেকেই তিনি নিজ খরচে ক্লাব পরিচালনা করে আসছেন। যন্ত্রাংশ সংগ্রহ, যাতায়াত ও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ—সবকিছুতেই রয়েছে তার আত্মত্যাগ ও নেতৃত্ব।

ক্লাবের কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন কয়েকজন সদস্য। রোবোটিক ডিজাইন: মুসবিতুল ইসলাম সিফাত, কাঠামো নির্মাণ: আব্দুল করিম, প্রোগ্রামিং: মেহেরাব হোসাইন, ইলেকট্রনিক্স ও মডেলিং: মো. সিফাত, উপস্থাপন ও ডকুমেন্টেশন: মো. নাসিম বিশ্বাস, পরিকল্পনা: সাব্বির রহমান এবং মিডিয়া কাভারেজ: মো. হাসিবুল হাসান।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার তরুণ লেখক ও গবেষক মাসুদ রানা সাগর (শেখ সাগর) বলেন, অপরচুনিটির সাগরে ডুবে যারা শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে তারা একরকম, আর যারা শত সংকট মোকাবিলা করে বিজয়ী হয় তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন। চুয়াডাঙ্গার প্রান্তিক অঞ্চল থেকে উঠে আসা এই ছেলেরা নিজেদের সাহস ও দক্ষতা দিয়ে রাজধানীর তরুণদের সঙ্গেও পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলার সামর্থ্য দেখিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গাবাসী হয়তো এখনই তাদের গুরুত্ব বুঝে উঠতে পারবে না। তারা জেলার বর্তমান সময়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে। তবে ভবিষ্যতের প্রজন্ম নিঃসন্দেহে তাদের অনুসরণ করবে।

তার ভাষ্য মতে, এই ক্লাব কেবল চুয়াডাঙ্গার গর্ব নয়—এটি একদিন জাতীয় সম্পদে রূপ নিতে পারে, যদি তারা সঠিক সহায়তা ও স্বীকৃতি পায়।

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img