আজ ৯ জিলহজ, বৃহস্পতিবার (৫ জুন) পালিত হচ্ছে পবিত্র হজ্বের মূল দিন ইয়াওমে আরাফা। সৌদি আরবের মক্কার অদূরে অবস্থিত ঐতিহাসিক আরাফাতের প্রান্তরে সমবেত হয়েছেন বিশ্বের ১৮০টিরও বেশি দেশের প্রায় ১৯ লাখ মুসলমান। ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ তাকবিরের ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে আরাফার আকাশ-বাতাস।
গতকাল বুধবার মিনায় হাজীদের জড়ো হওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় হজ্বের আনুষ্ঠানিকতা। সেখানে তাঁবুতে অবস্থান করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, তাসবিহ ও দোয়ার মধ্য দিয়ে কাটান তারা।
আজ ভোরে হাজীরা মিনা থেকে রওনা হন আরাফার উদ্দেশ্যে, হেঁটে, বাসে কিংবা হুইলচেয়ারে। সকলের কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছিল একক আল্লাহর উদ্দেশ্যে আত্মসমর্পণের ঘোষণা: “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক…”
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন“হজ্ব হলো আরাফা”। এই প্রান্তরেই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায়ী হজ্বে মানবতার মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক খুতবা দিয়েছিলেন। আজও সেই জায়গায় হাজীরা দাঁড়িয়ে আছেন, আল্লাহর দরবারে কান্না, তাওবা ও দোয়ায় ব্যস্ত। এখানে না আসলে হজ্ব সম্পূর্ণ হয় না। তাই এই দিনটিকে বলা হয় হজ্বের হৃদয়।
আজকের হজ্বের খুতবা প্রদান করবেন মসজিদুল হারামের খতিব শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদ। বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য সৌদি সরকার এ বছর খুতবাটি ৩৫টি ভাষায় সরাসরি অনুবাদ হবে।
বাংলা অনুবাদক হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশের চারজন আলেম ড. খলীলুর রহমান, আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান, মুবিনুর রহমান ও নাজমুস সাকিব। তাদের প্রত্যেকেই মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।
আজ সূর্যাস্তের পর হাজীরা আরাফাত থেকে মুজদালিফা রওনা হবেন। সেখানে মাগরিব ও এশা একত্রে আদায় করে খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করবেন। পরদিন মিনায় ফিরে হাজীরা জামারায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন, আল্লাহর নামে কুরবানি করবেন, মাথা মুণ্ডন করবেন এবং তাওয়াফে জিয়ারত করবেন। ১১ ও ১২ জিলহজে প্রতিদিন তিনটি জামারায় পাথর নিক্ষেপ করে শেষ করবেন হজের আনুষ্ঠানিকতা, আর কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফ দিয়ে ফিরে যাবেন আপন ঠিকানায়।