আমেরিকা ও ন্যাটো জোটের বিরুদ্ধে লড়তে হাতে তৈরি করা যুদ্ধাস্ত্র প্রদর্শনীর জন্য জাদুঘরে তুলেছে আফগান ইমারাতে ইসলামিয়ার সরকার।
সোমবার (৪ আগস্ট) তলো নিউজের এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগান মুজাহিদীনের হাতে তৈরি যুদ্ধাস্ত্র প্রদর্শনীর জন্য ময়দানে ওয়ারদাখ সামরিক জাদুঘরে তুলেছে ইমারাতে ইসলামিয়ার সরকার। জাদুঘরে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ন্যাটো জোটের বিরুদ্ধে গত ২০ বছরের লড়াইয়ে ব্যবহৃত ২০০ এর অধিক হাতে তৈরি মাইন, অন্যান্য বিস্ফোরক ও সামরিক সরঞ্জাম প্রদর্শিত হচ্ছে। এই প্রদর্শনী দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করছে।
সামরিক জাদুঘরের পরিচালক জিয়াউল হক বলেন, প্রদর্শিত যুদ্ধাস্ত্রগুলোর মধ্যে শত্রুদের কাছ থেকে আটক করা অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামও রয়েছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান আকর্ষণ হলো, মুজাহিদীনদের নিজেদের হাতে তৈরি জিনিসগুলো। যেমন, ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যারেল মাইন, সিমেন্ট মাইন, প্রেসার কুকার মাইন, স্টিকি মাইন সহ বিভিন্ন ধরণের হস্তনির্মিত মাইন।
ময়দানে ওয়ারদাকের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান শফিকুল্লাহ ফজলি বলেন, বিশ্ব পরাশক্তিকে পরাজিত করতে আফগান মুজাহিদীন কোন সরঞ্জামগুলো ব্যবহার করেছিলো তা জাদুঘর পরিদর্শনে আসা দর্শনার্থীদের প্রধান আগ্রহের কারণ। বিশেষত, বিদেশী দর্শনার্থীদের। কোন অস্ত্র ও সরঞ্জাম বলে আফগানরা ২০ বছর যাবত আমেরিকা ও ন্যাটোর বিরুদ্ধে টিকে ছিলো এবং লড়াই চালিয়ে গেছে, এই কৌতুহল তাদের সামরিক জাদুঘরে টেনে আনছে।
তিনি আরো বলেন, সহজ কৌশল ও স্বল্প খরচে তৈরি হওয়া সত্ত্বেও মুজাহিদীনদের হাতে তৈরি মাইনগুলো গত দুই দশক যাবত সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক ও কার্যকর বিস্ফোরক হিসেবে কাজ করেছে। তুমুল ধ্বংসাত্মক কার্যকারিতার জন্য এসব পরিচিত ছিলো। বিশেষত, মুজাহিদীনদের হাতে তৈরি ব্যারেল মাইনগুলো।
সামরিক প্রকৌশলী হিকমাতুল্লাহ হামজা বলেন, ন্যূনতম খরচে বিস্ফোরক তৈরি ও মেরামত করা হলেও এগুলোর মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে শত্রু হতাহত করা যেতো। এমন মাইনও ছিলো যেগুলো তৈরি ও মেরামত করতে মাত্র ৫০০ থেকে ১,০০০ আফগানি খরচ হতো। তবুও ব্যাপক ক্ষতি করা যেতো।
নাজমুদ্দিন নামের এক দর্শনার্থী বলেন, আমরা জাদুঘরের সামরিক জিনিসপত্রগুলো দেখেছি, যা খুবই আকর্ষণীয় ছিলো এবং সবকিছুই হাতে তৈরি ছিলো। গত ২০ বছরের যুদ্ধে মুজাহিদরা এসব ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছেন। তৈরিও করা হয়েছে খুব সহজভাবে।”
ইমারাত সরকারের প্রতিনিধিরা জানান, ময়দানে ওয়ারদাখের সামরিক জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য হল অতীত মূল্যবোধ সংরক্ষণ করা এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।









