সত্য ও ভালোবাসা দিয়ে ভিন্নমতকে মোকাবিলা করার সংস্কৃতি কামনা করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান (গোলাম মোহাম্মদ) জিএম কাদের।
তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার নামে, ব্যক্তিগত হিংসা চরিতার্থ করার বা ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য অন্যায়ভাবে জুলুম, নির্যাতন করা হচ্ছে। তার ফলে, সারা দেশে অরাজকতা ও হানাহানি ছড়িয়ে পড়েছে।’
‘অশান্তির বিষবাষ্প ক্রমান্বয়ে বাড়ছে ও প্রতিনিয়ত সমাজকে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে নিমজ্জিত করছে।’
আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, এই শুভ দিনে আমরা এর অবসান চাই। ইসলামের শ্বাশত শান্তির বাণীতে উদ্বুদ্ধ হয়ে, প্রতিহিংসার অবসান চাই। শক্তি প্রয়োগে নয়, সত্য দিয়ে ভালোবাসা দিয়ে ভিন্নমতকে মোকাবিলা করার সংস্কৃতি সৃষ্টি হোক, এ কামনা করি।
তিনি বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেছেন হিজরী ৫৭০ সালের ১২ রবিউল আউয়াল মাসে এবং হিজরী ৬৩২ সালের ১২ রবিউল আউয়াল অর্থাৎ একই তারিখে মৃত্যুবরণ করেছেন। এই মহামানবের জন্ম ও মৃত্যু একই তারিখে এটা একটা নিদর্শন বা বৈশিষ্ট্য। তাঁর জীবনে আরও কয়টি বিশেষত্ব আছে, যেমন জন্মের পূর্বেই তাঁর পিতার মৃত্যু হয়েছিল এবং শিশুকালেই ৬ বছরে মাকে হারান। ফলে তাঁর শিশুকাল থেকেই এতিম ছিলেন। আর একটি বৈশিষ্ট্য ছিল, তিনি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করেন নি।
এই দুইটি বৈশিষ্ট্যকে এভাবেই বিশ্লেষণ করা যায় যে, আল্লাহ যাকে সমগ্রমানব জাতির অভিভাবক হিসেবে প্রেরণ করেছেন আল্লাহ ছাড়া তাঁর কোনো অভিভাবক থাকা স্বাভাবিক নয়। একইসঙ্গে বলা যায়, আল্লাহ যাকে সমগ্র মানবজাতির শিক্ষক হিসেবে মনোনীত করেছেন আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ তাঁর কোনো শিক্ষা গুরু হতে পারে না। পৃথিবীর সৃষ্টিলগ্ন থেকে কেয়ামত পর্যন্ত সমস্ত মানবগোষ্ঠীর জন্য অভিভাবক ও শিক্ষক হিসেবেই আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আবির্ভাব ঘটেছিল।
জিএম কাদের বলেন, ‘ওনার মাধ্যমে আল্লাহ এ বিশ্বে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তন করেছেন। ইসলাম অর্থ শান্তি। আল্লাহ তাঁর অগণিত সৃষ্টির মধ্যে মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে এ বিশ্বে প্রেরণ করেছেন। মানবজাতি আল্লাহর সবচেয়ে বেশি প্রিয় ও আদরের সৃষ্টি। সে কারণে আল্লাহ যে কোন পরিস্থিতিতে মানবজাতির কল্যান পছন্দ করবেন, এটাই স্বাভাবিক।’
তিনি বলেন, “ইসলাম” সমাজে অন্যায়, অবিচার, নির্যাতন, নিপীড়ন প্রতিরোধ ও প্রতিহত করে ন্যায় বিচার ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্টার মাধ্যমে শান্তি স্থাপনের তাগিদ দেয়। একই সঙ্গে অপরাধী অনুতপ্ত হৃদয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তাকে ক্ষমা করে শান্তির পক্ষে কাজ করার সুযোগও দেয়। ইসলাম প্রতিহিংসার পক্ষে নয়। বরং নিরপেক্ষভাবে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমার মাধ্যমে শান্তি স্থাপনকে উৎসাহিত করে।
মহান রাব্বুল আলামিন, আল্লাহ, “শান্তির পথ প্রদর্শক ইসলাম ধর্মকে” প্রতিষ্ঠা-বাস্তবায়নের দায়িত্ব দান করেছেন এমন ব্যক্তির হাতে, যাকে তিনি সমগ্র মানবজাতির শিক্ষক ও অভিভাবক হিসেবে প্রস্তত করেছেন। হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর জীবনকালে অনেক ক্ষেত্রেই তাঁর বিরোধীতাকারীদের বন্ধুত্ব দিয়ে ভালোবাসা দিয়ে জয় করেছিলেন।