ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের আমীরুল মু’মিনীন বা সর্বোচ্চ নেতা মাওলানা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা বলেছেন, আলেম ও শাসকশ্রেণি যদি সৎ ও শুদ্ধ থাকে, তাহলে গোটা সমাজ সৎ ও শুদ্ধ হবে। পক্ষান্তরে, তারা যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে সাধারণ মানুষও সেদিকেই ঝুঁকে পড়ে। তাই সমাজ সংস্কারের জন্য প্রথমেই আলেম ও শাসকদের নিজেদের সংশোধন প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার কান্দাহার প্রদেশের প্রাদেশিক গভর্নরের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। সমাবেশে কান্দাহারের ১৫টি জেলার আলেম ও দায়ীগণ উপস্থিত ছিলেন। সরকারি বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
সমাবেশে আলেমদের মর্যাদা ও তাদের দায়িত্বের গুরুত্ব তুলে ধরে মাওলানা আখুন্দজাদা বলেন, “আলেমগণ পৃথিবীর বুকে আল্লাহর সবচেয়ে সম্মানিত বান্দা, আর তাদের দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা যেন সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন।”
তিনি আলেমদের আহ্বান জানান, তারা যেন জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মানুষকে ট্রাফিক দুর্ঘটনার ভয়াবহতা সম্পর্কে জানান। অসচেতনতার কারণে যেন মানুষ নিজের কিংবা অন্যের জীবন বিপন্ন না করে ফেলে।

পূর্ববর্তী শাসকদের সমালোচনা করে মাওলানা আখুন্দজাদা বলেন, তারা দুর্নীতি ও নৈতিক অবক্ষয়কে উৎসাহিত করেছিল। ফলে জনগণ ইসলামী শিক্ষা থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, “এমনকি আজকের দিনে শরিয়াহর কোনো কোনো বিধানও অনেক মানুষের কাছে অপরিচিত মনে হয়।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ইমারাতে ইসলামিয়ার আওতায় বর্তমানে যেসব আইন ও বিধান কার্যকর রয়েছে, সবই শরিয়াহ-ভিত্তিক। প্রতিটি আইন আলেম ও বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পর্যালোচনা করা হয়।”
শায়খ হিবতুল্লাহ আরও বলেন, “আমাদের সবার সম্মিলিতভাবে ইসলামের খেদমত করতে হবে, জনগণকে শিক্ষা দিতে হবে এবং সমাজ সংস্কারের পথে কাজ করতে হবে। এজন্য আমাদের একতা ও ‘আমর বিল মা‘রুফ ও নাহি আনিল মুনকার’-এর পুনর্জাগরণ প্রয়োজন।”
বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি আলেমদের প্রতি আহ্বান জানান, “তোমাদের দায়িত্ব হলো মানুষকে সুন্নতের দিকে আহ্বান জানানো, এবং তাদের চেহারা ও জীবনধারা যেন শরিয়াহ অনুযায়ী গড়ে ওঠে, সেটা নিশ্চিত করা। এর অংশ হিসেবে দাড়ি রাখা এবং পাগড়ি পরা ইসলামী পরিচয় হিসেবে ধরে রাখা আবশ্যক।”
সমাবেশে প্রদত্ত এই বক্তব্যের মাধ্যমে শায়খ হিবতুল্লাহ আখুন্দজাদা আবারও আলেমদের কেন্দ্রীয় ভূমিকার ওপর জোর দেন এবং ইমারাতে ইসলামিয়ার সমাজ বিনির্মাণের কর্মপন্থাকে স্পষ্ট করেন। তাঁর বক্তব্যে ইসলামী আদর্শে পরিচালিত রাষ্ট্রব্যবস্থার কাঠামো, নৈতিকতা ও দাওয়াতি দায়িত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
সূত্র : আরিয়ানা নিউজ