মুজাহিদীন ও নিপীড়িত মুসলিমদের মুক্ত করতে সোমালিয়ার সবচেয়ে সুরক্ষিত কারাগারে অভিনব অভিযান পরিচালনা করেছে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আল-শাবাব।
সম্প্রতি আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্দীদের ছাড়িয়ে নিতে রাজধানী মোগাদিশুর ভূ-গর্ভে অবস্থিত সোমালিয়ার সবচেয়ে সুরক্ষিত কারাগারে এযাবতকালের সবচেয়ে বড় হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত শাবাবের যোদ্ধারা।
সোমালিয়ার সরকার জানায়, গাড়ি বিস্ফোরণের মাধ্যমে তারা হামলার সূচনা করে। প্রায় ৬ ঘন্টা যাবত তাদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর লড়াই অব্যাহত থাকে। এত ব্যাপক পরিমাণে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণ হয়, যা ইতোপূর্বে দেখা যায়নি। তবে হামলা করতে আসা ৭ জনই নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে পরিশেষে নিহত হয়।
দেশটির সরকার শাবাবের হামলাকারীদের নিহত হওয়ার কথা জানালেও নিরাপত্তা বাহিনীর হতাহতের বিষয়টি চেপে যায়। শাবাব তাদের বন্দীদের মুক্ত করতে সফল হয়েছে কি না সেই সম্পর্কেও মুখ খুলেনি।
অপরদিকে আল ফিরদাউসে প্রকাশিত সশস্ত্র গোষ্ঠীটির বিবৃতি থেকে জানা যায়, তারা মুজাহিদীন ও নিপীড়িত মুসলিমদের সরকারের ভয়াবহ নির্যাতন থেকে মুক্ত করতে দেশের সবচেয়ে সুরক্ষিত কারাগার গোদকা জালিয়োতে আত্মঘাতী হামলা পরিচালনা করেছে এবং বন্দীদের মুক্ত করতে সফল হয়েছে।
গোষ্ঠীটি এর প্রমাণ স্বরূপ মুক্ত হওয়া এক বন্দীর বার্তাও প্রকাশ করে। যিনি বলেন, “আমি ভূ-গর্ভস্থ ‘গোদকা জালিয়ো’ কারাগারে আটক বন্দিদের একজন। আজ আল্লাহর অনুগ্রহে মুজাহিদীনরা আমাকে মুক্ত করেছেন। আমি জানি না, জীবনে এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কিছু হতে পারে কিনা। এক ঘণ্টা আগেও আমি দুঃখ-কষ্টে ছিলাম, আর এখন আনন্দ-সাচ্ছন্দ্যে আছি। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, যেনো তাঁর পথে যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হওয়ার সৌভাগ্য আমাকে দান করেন।”
হামলার বিবরণ প্রসঙ্গে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, হামলাকারীরা উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের পোশাকে বিশেষ গোয়েন্দাদের মতো গাড়িতে এসেছিলো। ফলে সহজেই সকল তল্লাশি চৌকি অতিক্রম করতে পেরেছিলো।
কারাগারের এক নিরাপত্তা কর্মী জানান, তারা গোয়েন্দাদের গাড়ি আসছে দেখতে পান। এক পর্যায়ে বিশাল বিশাল বিস্ফোরণও ঘটে, যার ফলে কারাগার কেঁপে উঠছিলো। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা বাহিনীর অসংখ্য সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছিলো। হামলাকারীদের সাথে কয়েক ঘন্টা যাবত সংঘর্ষ অব্যাহত ছিলো।
উল্লেখ্য, আল শাবাব সশস্ত্র গোষ্ঠীটি আন্তর্জাতিক ভাবে আল কায়েদার আফ্রিকান শাখা হিসেবে পরিচিত এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত। তবে সংগঠনটি দাবী করে থাকে যে, তারা আফ্রিকা থেকে ইউরোপীয় অমুসলিম শক্তির উপনিবেশ দূর করতে ও ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।