বিশ্বব্যাপী ২০২৫ সালে সাংবাদিক হত্যার মোট প্রায় অর্ধেকের জন্য দায়ী ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলি সেনাবাহিনী।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) প্যারিসভিত্তিক অধিকারগোষ্ঠী রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্যারিসভিত্তিক আন্তর্জাতিক এই সংস্থা জানায়, চলতি বছরে বিশ্বব্যাপী সাংবাদিক হত্যার সংখ্যা ভয়াবহভাবে বেড়েছে। গত এক বছরে ৬৭ জন গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন; তাদের অন্তত ৫৩ জন সশস্ত্র গোষ্ঠী ও সংগঠিত অপরাধচক্রের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের শিকার।
আরএসএফ জানায়, গত ১২ মাসে নিহত সাংবাদিকদের ৪৩ শতাংশই গাজ্জায় ইসরাইলি বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হাতে প্রায় ২২০ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৫ জনকে সরাসরি পেশাগত কারণে বা দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় হত্যা করা হয়েছে।।
গাজ্জা গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গণহত্যামূলক এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজ্জায় অন্তত ২৫৭ ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে।
বিদেশি সাংবাদিক বন্দি করাতেও ইসরাইল দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। আরএসএফ জানায়, ২০২৫ সালে ২০ জন ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে কারাবন্দি করা হয়েছে। গত দুই বছরে গাজ্জা ও অধিকৃত পশ্চিম তীর থেকে আরও ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজ্জায় ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৭০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭১ হাজারের বেশি মানুষ।
প্রতিবেদনটি জানায়, সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ মেক্সিকো, যেখানে এ বছর ৯ সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। আর চীন হলো সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারাগার। এখানে বর্তমানে ১২১ জন সাংবাদিক বন্দি।
আরএসএফ বলছে, সাংবাদিকরা নিজেদের দেশেই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। নিহতদের মধ্যে দুজন ছাড়া সবাই নিজ দেশে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সুদানে চলমান সংঘাতে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে। আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস ২০২৫ সালে চার সাংবাদিককে হত্যা করেছে; দুজনকে আবার অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে।
সিরিয়া নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটিতে মোট ১৩৫ সাংবাদিকের মধ্যে এখনো ৩৭ জন নিখোঁজ। বাশার আল–আসাদের শাসনামলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল অথবা আইএসআইএস (দায়েশ)-এর হাতে জিম্মি হয়ে তারা নিখোঁজ হন।
সূত্র: আনাদোলু









