চীনের শীর্ষ রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা ফার্মের এক সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ঘুষ নেয়ার কারণে তাকে এই সাজা দেয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
চায়না হুয়ারং ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিংসের সাবেক মহাব্যবস্থাপক বাই তিয়ানহুইকে ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্প অধিগ্রহণ ও অর্থায়নে সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে ১৫৬ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি ঘুষ নেওয়ার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
সিএইচআইএইচ হলো চায়না হুয়ারং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের একটি সহযোগী সংস্থা। যা দেশটির বৃহত্তম সম্পদ ব্যবস্থাপনা তহবিলগুলোর মধ্যে অন্যতম।
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বছরব্যাপী চলা দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল হুয়ারং। এই সংস্থার সাবেক চেয়ারম্যান লাই জিয়াওমিনও ২৫৩ মিলিয়ন ডলার ঘুষ গ্রহণের অপরাধে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হন। হুয়ারংয়ের আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও দুর্নীতি দমন তদন্তের জালে ধরা পড়েছেন।
যদিও চীনে দুর্নীতির জন্য মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে প্রায়শই দুই বছরের জন্য তা স্থগিত রাখা হয় এবং পরে তা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে পরিবর্তিত হয়। তবে বাইয়ের ক্ষেত্রে এই সাজা স্থগিত করা হয়নি। মে ২০২৪ সালে উত্তরাঞ্চলীয় তিয়ানজিন শহরের একটি আদালত বাইকে প্রথম এই সাজা দেয়। তিনি তার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে আপিল করলেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মূল রায় বহাল রাখা হয়।
চীনের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম পিপলস কোর্ট পর্যালোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করে জানিয়েছে, বাইয়ের অপরাধগুলো ছিল অত্যন্ত গুরুতর। সিসিটিভি জানায়, এসপিসি বলেছে, (বাই) অস্বাভাবিক বড় অঙ্কের ঘুষ নিয়েছেন, তার অপরাধের পরিস্থিতি ছিল ব্যতিক্রমভাবে গুরুতর, এর সামাজিক প্রভাব ছিল জঘন্য। রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থে ব্যতিক্রমী উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে।
প্রচারমাধ্যমটি জানায়, মঙ্গলবার সকালে তিয়ানজিনে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বাইয়ের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে কীভাবে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো বিবরণ দেওয়া হয়নি।
চীন মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত পরিসংখ্যানকে রাষ্ট্রের গোপন তথ্য হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করে। তবে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো মনে করে, প্রতি বছর দেশটিতে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
চীনের আর্থিক শিল্পে দীর্ঘদিন ধরে চলা দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সর্বশেষ শিকার হলেন বাই। দেশটির শীর্ষ সিকিউরিটিজ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাবেক প্রধান ই হুইমানকে গত সেপ্টেম্বরে দুর্নীতির তদন্তের আওতায় আনা হয়েছিল। এছাড়া, মার্চ মাসে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকিং জায়ান্ট এভারব্রাইট গ্রুপের সাবেক প্রধান লি শিয়াওপেং ৬০ মিলিয়ন ইউয়ান ঘুষ নেওয়ার জন্য ১৫ বছরের কারাদণ্ড পান। নভেম্বরের ২০২৪ সালে ব্যাংক অফ চায়নার সাবেক চেয়ারম্যান লিউ লিয়াঙ্গে ১২১ মিলিয়ন ইউয়ান ঘুষ গ্রহণের জন্য দুই বছরের স্থগিতাদেশসহ মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন।









