শুক্রবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৫

বিশ্বের সকল ইসলামী সরকারের উপর জিহাদ ফরজ হয়ে গিয়েছে: মুফতী ত্বকী উসমানী

বিশ্বের সকল ইসলামী সরকারের উপর জিহাদ ফরজ হয়ে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী আলেম ও পাকিস্তান শরীয়াহ কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি মুফতী তকী উসমানী।

তিনি বলেন, আমাদের সরকার সহ বিশ্বের সকল ইসলামী সরকারের উপর এখন জিহাদ ফরজ হয়ে গিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ইসলামাবাদে জাতীয় ফিলিস্তিন সম্মেলনে বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

পাকিস্তান শরীয়াহ কোর্টের এই সাবেক প্রধান বিচারপতি মুসলিম বিশ্বের সরকারদের প্রতি ও আন্তর্জাতিক মুসলিম উলামা ইউনিয়নের সাম্প্রতিক জিহাদের ফতোয়ার যারা বিরোধিতা করেছেন তাদের উদ্দেশ্যে ধিক্কার জানিয়ে আরো বলেন, ৫৫ হাজারেরও বেশি কালেমা পাঠকারী মুসলিমকে জবাই হতে দেখেও কি আপনাদের উপর এখনো জিহাদ ফরজ হবে না? ফিলিস্তিনিদের জন্য জান-মাল লাগিয়ে দেওয়া মুসলিম উম্মাহর সকলের উপর ফরজ।

তিনি আরো বলেন, এক বছর আগেও ফিলিস্তিনের জিহাদের সমর্থনে কনভেনশন সেন্টারে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। যেখান থেকে সম্মিলিতভাবে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, আমরা ফিলিস্তিনিদের পাশে আছি। আমরা তাদের সবধরণের সাহায্য করবো। কিন্তু বাস্তবতা হলো কার্যকরী পদক্ষেপের বদলে আমরা শুধু সম্মেলনে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছি। অথচ আজ এখানে জড়ো হওয়ার পরিবর্তে আমাদের উচিত ছিলো ফিলিস্তিনে থাকা। সেখানে একত্রিত হওয়া।

এটি দুঃখজনক ও লজ্জার যে আমরা বাস্তবিক অর্থে ফিলিস্তিনি মুজাহিদদের কোনো সাহায্য করতে পারছি না। মুসলিম উম্মাহ আজ শুধু দর্শক হয়ে আছে। শুধু নিন্দা জ্ঞাপন করছে। তারা শুধু প্রস্তাব ও সম্মেলনে লিপ্ত। অথচ মুখের কথায় দায়মুক্তির সুযোগ বহু আগেই ফুরিয়ে গেছে। ৫৫ হাজারের বেশি মুসলিমকে জবাই হতে দেখার পর এখনো কি জিহাদ ফরজ হবে না?

পাকিস্তান বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে থাকা এই প্রখ্যাত আলেম আরো বলেন, মুসলিম উম্মাহর প্রথম কেবলা রক্ষায় লড়াইরত মুজাহিদদের কেউ কোনো সাহায্য করতে পারেনি। অথচ উচিত ছিল উম্মাহর কেবলা রক্ষায় পুরো উম্মাহ জিহাদের ঘোষণা দেওয়ার।

কেনো এখনো মুসলিম দেশগুলোকে ইসরাইল-আমেরিকার চুক্তি মেনে চলতে হবে এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, গাজ্জায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি হওয়ার পরও বোমাবর্ষণ চলছে। জায়োনিস্ট ইসরাইল কোনো নৈতিকতা ও আন্তর্জাতিক আইনের ধার ধারছে না। তারা ও তাদের দোসররা কোনো ধর্ম, বিশ্বাস ও চুক্তির মান রাখছে না। উল্টো আমেরিকার অস্ত্র ও সার্বিক সহায়তায় জারজ রাষ্ট্রটি মুসলিম দেশগুলোকে ভীত করে রেখেছে।

গাজ্জার এক চিকিৎসকের বার্তা এসেছে, “গাজা শেষ নিঃশ্বাস নিচ্ছে, আমরা তোমাদের অনেক অপেক্ষা করেছি। কিন্তু তোমরা আসোনি – আল্লাহ হাফেজ।”

আজ গাজ্জা দখলের ও একে মুসলিমদের গণকবরে পরিণত করার পরিকল্পনা প্রকাশ পাচ্ছে। ট্রাম্প বলছে গাজ্জাকে ফিলিস্তিনিমুক্ত করে একে বিনোদন নগরীতে পরিণত করবে। যেনো সে পুরো পৃথিবীকে নিজের সম্পত্তি মনে করছে।

আমাদের গাজ্জাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এজন্য আবশ্যিকভাবে জায়োনিস্ট ইসরাইল ও তাদের সমর্থন করে এমন কোম্পানিগুলোর পণ্য সম্পূর্ণরূপে বয়কট করতে হবে। বয়কট ও প্রতিবাদ কর্মসূচি যেন শান্তিপূর্ণ হয়। অন্যের জান-মালের যেনো কোনো ক্ষতি না হয়।

এছাড়াও বলেন, পাকিস্তান কখনো ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়নি। পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা একে অবৈধ সন্তান বলেছেন। কোনোভাবেই আমাদের এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে না, ইসরায়েল যত শক্তিশালীই হোক না কেনো।

পাকিস্তান সরকারের প্রতি দ্রুত ফরজ হুকুম আদায়ে পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের সাথে ইসরাইলের যখন কোনো চুক্তি নেই তবে ভয় কিসের? কিসের এত অপরাগতা?

পরবর্তীতে পাকিস্তান সহ পুরো মুসলিম বিশ্বের সরকারদের উদ্দেশ্য করে বলেন, তারা যেহেতু হেসেখেলে চুক্তি ভঙ্গ করেছে তবে আমরা কেনো চুক্তির বাধ্যবাধকতায় পড়ছি?

সূত্র: জিও নিউজ

spot_imgspot_img

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img
spot_img