প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও বিশিষ্ট সুফি সাধক মাওলানা পীর হাফেজ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দী মুজাদ্দিদী (৭২) ইন্তেকাল করেছেন, ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) তিনি ইন্তেকাল করেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ শিষ্য (খলিফা) শায়খ বিলালের বরাতে মাওলানা তালহা কাসেমী নকশবন্দী মুজাদ্দিদী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মাওলানা জুলফিকার আহমদ ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ঝাং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি নকশবন্দী মুজাদ্দিদী তরিকার অন্যতম প্রভাবশালী ও মর্যাদাবান ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ইসলামী জ্ঞানে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে তিনি কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক আত্মশুদ্ধি এবং আধ্যাত্মিক সংস্কারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। নফসের পরিশুদ্ধি, নৈতিক জীবনযাপন এবং আল্লাহর সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলাই ছিল তাঁর দাওয়াতের মূল বার্তা।
তিনি ঝাং শহরে ‘জামিয়া মাহাদুল ফকির আল-ইসলামি’ প্রতিষ্ঠা ও পৃষ্ঠপোষকতা করেন। প্রতিষ্ঠানটি ইসলামী শিক্ষা, তাসাউফ (সুফিবাদ) এবং নৈতিক চরিত্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে তিনি তাঁর অনুসারীদের নফস নিয়ন্ত্রণ, গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা, কৃতজ্ঞতা চর্চা এবং আত্মসমালোচনার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির পথে পরিচালিত করেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাঁর বয়ান ও দাওয়াতমূলক বক্তব্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে কয়েক মিলিয়ন মানুষ তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে উপকৃত হন। আত্মিক সংস্কার ও আধ্যাত্মিক উন্নয়ন বিষয়ে তাঁর শিক্ষা আজও বিশ্বজুড়ে অসংখ্য ভক্ত ও শিক্ষার্থীর জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে রয়েছে।
মাওলানা জুলফিকার আহমদের স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তাঁর ইন্তেকালের খবরে আলেম সমাজ, শিষ্যবৃন্দ ও অনুসারীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। ইসলামী জ্ঞানচর্চা ও আধ্যাত্মিক পুনর্জাগরণে অবিস্মরণীয় অবদানের জন্য তাঁরা গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন।
তাঁর জানাজা ও দাফনের সময়সূচি পরিবার অথবা নকশবন্দী মুজাদ্দিদী তরিকার প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে এখনো জানানো হয়নি।
সূত্র: মুসলিম মিরর










