ভারতে মসজিদ ও মুসলিমদের জনকল্যাণ ফান্ডের উৎস ধূলিস্যাৎ অব্যাহত রেখেছে মোদির নেতৃত্বাধীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন ও নগর কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (১৬ আগস্ট) মুসলিম মিররের এক প্রতিবেদনে মহারাষ্ট্রের নূর এলাহি মসজিদের ১৩টি দোকান গুড়িয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মহারাষ্ট্র নগর কর্তৃপক্ষের আবাসন ও এলাকা উন্নয়ন বিভাগ (এমএইচএডিএ) গত বুধবার নূর এলাহি মসজিদের ১৩টি দোকান গুড়িয়ে দিয়েছে, যা কয়েক দশক যাবত মানখুর্দ লিংক রোডে অবস্থিত ছিলো।
মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়, ২৩ বছর যাবত এসব দোকান মসজিদের মালিকানাধীন। দোকানগুলো মসজিদ, মসজিদ সংলগ্ন মাদরাসার আয় ও জনকল্যাণমূলক ফান্ডের উৎস হিসেবে ভূমিকা রাখতো। কিন্তু গত ২৭ জুন, হঠাৎ একটি নোটিশ জারি করে দাবী করা হয় যে, দোকানগুলো অবৈধভাবে নির্মিত। জমির কিছু অংশ আবাসন ও এলাকা উন্নয়ন বিভাগ (এমএইচএডিএ) এর অনুমোদন না নিয়ে দোকান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
মসজিদের ট্রাস্টিরা নোটিশে বর্ণিত আবাসন ও এলাকা উন্নয়ন বিভাগ (এমএইচএডিএ) এর অভিযোগ অস্বীকার করেন। এর স্বপক্ষে তারা বলেন, সাংসদ দিনা পাতিল মসজিদের এসব সম্পত্তি রক্ষা করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি এমএইচএডিএর সিইওর সাথে কথা বললে জানানো হয় যে, তবে আপনাকে উপর থেকে আসা চাপের সম্মুখীন হতে হবে।
ট্রাস্টিরা ক্ষোভ নিয়ে বলেন, এরা কারা? কে তাদের উপর থেকে চাপ দিচ্ছে? চাপের কারণেই কি এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? এটা কি মসজিদের সম্পত্তি ভেঙে ফেলার বৈধ কারণ হতে পারে? পুলিশ ও এমএইচএডিএ কর্তৃপক্ষকে আমাদের এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
মসজিদের কোষাধ্যক্ষ ফাইয়াজ আহমেদ কর্তৃপক্ষের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নোটিশের ভুয়া অভিযোগের বিপরীতে মসজিদের সম্পত্তি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমরা ছুটাছুটি করছিলাম। কিন্তু কখনো কল্পনা করিনি যে, কর্তৃপক্ষ এত বড় আকারে ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে। দাবীকৃত জমিতে থাকা স্থাপনার পাশাপাশি সব দোকান গুড়িয়ে দিবে।
এছাড়া মসজিদ কর্তৃপক্ষ মসজিদ-মাদরাসার আয় ও জনকল্যাণমূলক ফান্ডের উৎস হিসেবে ভূমিকা রাখা এসব দোকানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পেছনে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতা নীতিশ রানে ও কিরীট সুমাইয়াকে দায়ী করেন।মসজিদের মালিকানাধীন দোকানগুলোর জমি নিজেদের করে নিতে তারা চাপ প্রয়োগ করে এমএইচএডিএ মারফত গুড়িয়ে দিয়েছে।
আরো অভিযোগ করা হয় যে, এক্ষেত্রে এমএইচএডিএ প্রথমে মসজিদকে এর লাগোয়া সম্পত্তি থেকে পৃথক করে দেয়। পরবর্তীতে এক পর্যায়ে ঘোষণা দেয় যে, এসব দোকান বা জমি অবৈধ। সম্পত্তিকে আলাদা করে একে উপরের চাপে তারা অবৈধ ঘোষণা দেয়। এভাবেই তারা আমাদের নিশানা বানিয়েছে।
নূর এলাহি মসজিদ কর্তৃপক্ষ, উক্ত মসজিদ ও মসজিদ সংশ্লিষ্ট অবশিষ্ট সম্পত্তি রক্ষায় আপ্রাণ চেষ্টা ও হিন্দুত্ববাদী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।