শুক্রবার | ১৭ অক্টোবর | ২০২৫

রাকসুতে ২৩ পদের ২০টিতে ছাত্রশিবিরের ভূমিধস বিজয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ২৩টি পদের মধ্যে ২০টিতেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল। বাকি তিনটি পদে জয়ী হয়েছেন সাবেক সমন্বয়ক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহউদ্দিন আম্মার (জিএস), ক্রীড়া সম্পাদক পদে নার্গিস আক্তার এবং বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক পদে তোফায়েল আহমেদ তোহা।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক সেতাউর রহমান রাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।

শীর্ষ তিন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে না পেরে এ বিশ্ববিদ্যালয়েও ভরাডুবি হয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের।

দীর্ঘ ৩৪ বছর পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’-এর মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ১২ হাজার ৬৮৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের শেখ নূর উদ্দীন আবির পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৯৭ ভোট। ভোটের ব্যবধান দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৯০।

অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহউদ্দিন আম্মার জয়ী হয়েছেন ১১ হাজার ৫৩৭ ভোট পেয়ে। তার নিকটতম শিবির সমর্থিত প্রার্থী ফজলে রাব্বি ফাহিম রেজা পেয়েছেন ৫ হাজার ৭২৯ ভোট। ব্যবধান দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮০৮ ভোটে।

সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে শিবির সমর্থিত সালমান সাব্বির ৬ হাজার ৯৭১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, ছাত্রদল সমর্থিত জাহিন বিশ্বাস এষা পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৪১ ভোট। ব্যবধান মাত্র ১ হাজার ৩০ ভোট।

ঘোষিত ফলাফলের পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায়। দীর্ঘ বিরতির পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক চর্চার নতুন সূচনা।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি একাডেমিক ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। দিনভর অভিযোগ–বিক্ষোভের পর রাতে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ভোট গণনা শুরু হয় এবং ধাপে ধাপে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ২৮ হাজার ৯০১ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬ এবং ছাত্রী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ জন। ভোট পড়েছে ৬৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ছয়টি নারী হলে ভোট পড়ার হার ছিল ৬৩ দশমিক ২৪ শতাংশ।

রাকসুর ২৩ পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ২৪৭ জন প্রার্থী। এছাড়া হল সংসদের ১৫ পদে ১৭টি হলে ৫৯৭ জন এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫ পদে ৫৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

একনজরে ভোটের ফল:
ভিপি – মোস্তাকুর রহমান জাহিদ
জিএস – সালাউদ্দিন আম্মার
এজিএস – এস এম সালমান সাব্বির
ক্রীড়া সম্পাদক – নার্গিস খাতুন
সহক্রীড়া সম্পাদক – আবু সাইদ মোহাম্মদ
সাংস্কৃতিক সম্পাদক – জাহিদ হাসান
সহসাংস্কৃতিক সম্পাদক – মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম
মহিলা সম্পাদক – সাইয়্যেদা হাফসা
সহমহিলা সম্পাদক – সামিয়া জাহান
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক – বি এন নাজমুস সাকিব
সহতথ্য ও গবেষণা সম্পাদক – সিফাত আবু সালেহ
মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক – মোহাম্মদ মোজাহিদ ইসলাম
সহমিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক – আসাদুল্লাহ
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক – তোফায়েল আহমেদ তোফা
সহবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক – মোজাহিদুল ইসলাম সায়েম
বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক – ইমরান মিয়া লস্কর
সহবিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক – মোহাম্মফ নয়ন হোসেন
পরিবেশ ও সমাজসেবা সম্পাদক – আবদুল্লাহ আল মাসুদ
সহপরিবেশ ও সমাজসেবা সম্পাদক – মাসুমা ইসলাম মুমু

চার কার্যনির্বাহী সদস্য:
মোহাম্মদ দীপ মাহবুব
মোহাম্মদ ইমজিয়াল হক কামালী
সুজন চন্দ্র
এবি এম খালেদ

সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি:
সালাউউদ্দীন আম্মার
মুস্তাকুর রহমান জাহিদ
ফাহিম রেজা
আকিল বিন তালেব
সালমান সাব্বির

spot_img
spot_img

এই বিভাগের

spot_img