রবিবার, মে ১৮, ২০২৫

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের চোখে সমুদ্রে ফেলে শরণার্থীদের বাংলাদেশে বিতাড়ন সাজানো গল্প

spot_imgspot_img

সাগরে ফেলে দেওয়ার মতো নির্মম উপায়ে উগ্র হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার কর্তৃক শরণার্থীদের বাংলাদেশে বিতাড়নকে সাজানো গল্প আখ্যা দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

শনিবার (১৭ মে) সরকার কর্তৃক শরণার্থী বহিষ্কারে স্থগিতাদেশ জারির লক্ষ্যে করা এক আবেদনের বিপরীতে সর্বোচ্চ আইনকেন্দ্রটির পক্ষ থেকে একথা বলা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কলিন গঞ্জালভেস নির্মম উপায়ে মোদি সরকারের জোরপূর্বক শরণার্থী বিতাড়ণের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে সম্প্রতি একটি আবেদন করেন। কিন্তু তার আবেদনের প্রেক্ষাপটকে সাজানো গল্প বলে ‘জরুরী শুনানির’ দিন ধার্য্য করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়।

তার আবেদন ও অনুরোধের বিপরীতে বলা হয়, “প্রতিদিন আমাদের কাছে নতুন গল্প হাজির করা হচ্ছে। এটিও সূক্ষ্মভাবে তৈরি একটি গল্প। আপনার অভিযোগ প্রমাণের জন্য আমাদের কাছে প্রমাণ নিয়ে আসুন।”

আদালতের এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে জবাবে আইনজীবী গঞ্জালভেস বলেছিলেন, “ফোন মারফত তথ্যটি পাওয়া গিয়েছে।”

প্রত্যুত্তরে আদালত আপত্তি জানিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করে, “কে তাদের দেখেছিলো? আবেদনকারীই বা কীভাবে ফিরে এলেন?”

সুপ্রিম কোর্টের এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর দাখিল করা আবেদন অনুসারে, সম্প্রতি ৪৩ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নয়াদিল্লিতে আটক করে দেশটির সরকার। পরবর্তীতে তাদের আন্দামান সাগরে নিয়ে লাইফ জ্যাকেট পড়িয়ে সাঁতার কাটতে বাধ্য করা হয়। আন্তর্জাতিক জলসীমায় মৃত্যু মুখে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এতে আরো বলা হয়, মাকতুব মিডিয়া প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে শরণার্থীদের সকলে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক উচ্চ কমিশনার (UNHCR) এর সাথে নিবন্ধিত ছিলেন এবং তাদের পরিচয়পত্র ছিল।

জাতিসংঘ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে এতে এই অভিযোগও করা হয় যে, শরণার্থীদের ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে সমুদ্রে ফেলা হয়েছিলো।

কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং এন কোটেশ্বর সিংয়ের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ একে সাজানো গল্প আখ্যা দিয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কলিন গঞ্জালভেসের জরুরী শুনানি ও স্থগিতাদেশের আবেদন অগ্রাহ্য করে। এর জন্য ৩ বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের প্রয়োজন হবে বলে জানায়। বরং অন্যান্য আবেদনের সাথে যুক্ত করে আগামী ৩১ জুলাই সাধারণ শুনানি হবে উল্লেখ করে।

সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, গত ৮ মে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানায়, তারা ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পুশ ইন করা কমপক্ষে ১২৩ জন ব্যক্তিকে আটক করেছে। তন্মধ্যে বাংলাদেশের সীমানার ভেতর পুশ ইন করা ব্যক্তির সংখ্যা ৭৮ জন। যাদের মধ্যে আবার ৩ জন ভারতের নাগরিক।

সূত্র: মুসলিম মিরর

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img