সোমবার | ৩০ জুন | ২০২৫

মানুষের জীবন-জীবিকা নিয়ে তামাশা করা বন্ধ করুন, আলেমদের দ্রুত মুক্তি দিন : জমিয়ত

spot_imgspot_img

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দেশের মানুষ আজ চরম দুঃসময় পার করছে। মানুষের জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই। চা-শ্রমিকেরা ৩০০টাকা মজুরীর জন্য আজ আন্দোলন করছে। বিদ্যুৎ সংকটে পর্যুদস্ত জনজীবন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী, তার উপর আবার হুট করে নজিরবিহীন পরিমাণে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি! অথচ বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য প্রতিনিয়ত নিম্নমুখী। অনেক আলেম এক বছরেরও অধিক কাল পর্যন্ত কারাবন্দী। এই অবস্থা দেশের জন্য অশনি সংকেত। সরকার চরমভাবে ব্যর্থ। পরিস্থিতি বিবেচনায় আজ গণমানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলার জন্য আমরা দলের পক্ষ থেকে রাজপথে কর্মসূচী দিতে বাধ্য হয়েছি। সরকারের কাছে আমাদের স্পষ্ট দাবী, মানুষের জীবন-জীবিকা নিয়ে তামাশা করা বন্ধ করুন! কারাবন্দী আলেমদের দ্রুত মুক্তি দিন! জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জনগণ সহ্য করতে পারছেন না, অতএব এ অমানবিক সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন! প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনুন! নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের জনদাবী মেনে নিন!

আজ (১৯ আগস্ট) শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে জমিয়ত নেতারা এসব কথা বলেন। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অব্যাহত লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে এবং কারাবন্দী আলেমদের মুক্তির দাবীতে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক।

সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, সরকার মানুষের সাথে দায়িত্বশীল আচরণ করছে না। সর্বক্ষেত্রে অযোগ্যতা ও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না।

সরকারকে অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধ করার আহবান জানিয়ে মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, অভিভাবকের আসনে বসে সংবেদনশীল আচরণ না করার পরিণতি ভয়াবহ।

মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী তাঁর বক্তব্যে বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা কেন বিশ্ববাজারের বর্তমান মূল্য বিবেচনায় আনলেন না-এই প্রশ্নের কোন সদুত্তর আজ দেশের মানুষ পাচ্ছেন না। ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জনগণ মানেনি। এ থেকে সরকারের বুঝা উচিৎ-মানুষ কতটা সংক্ষুব্ধ।

তিনি বলেন, স্কুল কলেজ থেকে ধর্মশিক্ষা বাদ দেওয়ার কোন দুরভিসন্ধি এ দেশে কার্যকর করতে দেওয়া হবে না।

জমিয়তের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, আমরা আজ গণমানুষের অধিকার আদায়ে রাজপথে এসেছি। মানুষের দুর্ভোগ ও দুর্দশার বাস্তবতা স্বীকার না করে ‘বেহেশতে আছি’ বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়।

তিনি বলেন, দেশের বর্তমান সংকট ও সমস্যাকে হালকা করে দেখার কোন সুযোগ নেই। সরকারকে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অসহনীয় যানজট কমাতে হবে। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করতে হবে। চা-শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবী মেনে নিতে হবে। অতীতের মত প্রহসনের নির্বাচন করার চিন্তা বাদ দিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের জনদাবী মেনে নিতে হবে।

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, দলের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মতিউর রহমান গাজিপুরী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী নাসীরুদ্দীন খান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী বশীরুল হাসান খাদিমানী, পাঠাগার সম্পাদক মাওলানা হেদায়েতুল ইসলাম প্রমূখ।

উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মাহবুবুল আলম, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা ইখলাসুর রহমান রিয়াদ, সাব্বির আহমদ, রিদওয়ান মাজহারী, কাউসার আহমদ, সাদ বিন জাকির, নূর হোসাইন সবুজ ও ইয়াকুব কামাল প্রৃমূখ।

সমাবেশ শেষে জমিয়তের একটি মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত গিয়ে মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img