তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে বর্তমানে আফগানিস্তানে ২৮ লাখ নারী শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাওলানা আমীর খান মুত্তাকী। তার তথ্যানুসারে, দেশে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি, যার মধ্যে নারী শিক্ষার্থীর এ উপস্থিতি শিক্ষা খাতের বিস্তার ও স্থিতিশীলতার প্রতিফলন।
মাওলানা আমীর খান মুত্তাকী বলেন, “শত শত মাদরাসা ও বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ কোটিতে, যার মধ্যে ২৮ লাখ নারী শিক্ষার্থী রয়েছেন।”
রাজধানী কাবুলে বিজয় দিবস উপলক্ষে লোয়া জিরগা হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক থাকা মানে এই নয় যে আমরা পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের বিরোধী। অন্যরা যোগাযোগে দ্বিধাগ্রস্ত হলে সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। তবে আমাদের কূটনীতিকরা ইতিমধ্যেই কিছু ইউরোপীয় দেশে সফর করেছেন।”
প্রবাসী আফগানদের উদ্দেশে তিনি আহ্বান জানান, তারা যেন “ভ্রম ও মিথ্যা আশা” ত্যাগ করে দেশে ফিরে আসেন। তিনি ঘোষণা দেন, “আফগানিস্তান এখন সত্যিই সব আফগানের জন্য একটি অভিন্ন ঘর।”
অর্থনীতি নিয়ে তিনি বলেন, “সরকারের সব ধরনের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেট এখন সম্পূর্ণরূপে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব থেকে পূরণ করা হচ্ছে। এভাবে দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়েছে।”
কাবুল বিজয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় আসার মাধ্যমে দেশে অন্যায় ও অবিচারের পথ রোধ করা হয়েছে। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট কাবুল বিজয় সমগ্র জাতির বিজয়। আফগান জনগণ খালি হাতে অসংখ্য ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করেছে এবং বর্তমানে দেশে ইসলামী শরিয়াহ কার্যকর করা হচ্ছে।”
সরকারের অর্জন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা, ইসলামী শরিয়াহর বাস্তবায়ন, পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সুদৃঢ়করণ গত চার বছরে ইমারাতে ইসলামিয়ার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। একটি ঐক্যবদ্ধ সামরিক বাহিনী গঠন, ক্ষমতার কেন্দ্রগুলো ভেঙে দেওয়া, মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব থেকে বাজেটের যোগান এবং আফগানি মুদ্রার স্থিতিশীলতা রক্ষা, এসবই ইমারাতে ইসলামিয়ার বড় অর্জন।”
এই আলোচনায় বক্তব্য রাখেন আফগানিস্তানের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মাওলানা আব্দুস সালাম হানাফী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খলিফা সিরাজুদ্দিন হক্কানী এবং সংস্কৃতি উপমন্ত্রী মাওলানা আতীকুল্লাহ আজিজী।