তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান শুক্রবার দৃঢ়ভাবে বলেছেন, উসমানী আমল থেকে সংরক্ষিত জেরুজালেমের প্রত্নফলক ইসরাইলকে দেওয়া হবে না। তিনি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দাবিকে ‘নির্লজ্জ’ আখ্যা দিয়ে স্পষ্ট করেন যে, জেরুজালেম থেকে ইসরাইলকে একটি কঙ্করও দেওয়া হবে না।
এরদোগান বলেন, “আমরা জেরুজালেমের একটি কঙ্করও দেব না, তাহলে খোদাই করা ওই ফলকের তো প্রশ্নই আসে না।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এই ফলক তো নয়ই, আমরা তোমাকে পবিত্র জেরুজালেম থেকে একটুখানি ছোট পাথরও দেব না।”
তুরস্কের অবস্থান হলো, জেরুজালেম থেকে কোনো প্রত্নবস্তু কেবল ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকেই দেওয়া যেতে পারে। কারণ ১৯৬৭ সাল থেকে শহরটি ইসরাইলি দখলে রয়েছে এবং এ শহরের ওপর ইসরাইলের কোনো বৈধ কর্তৃত্ব নেই।
বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু বলেন, তুরস্ক এমন একটি প্রত্নফলক সংরক্ষণ করছে যা ইহুদিদের জেরুজালেমের সঙ্গে সম্পর্ক প্রমাণ করে। তিনি আরও জানান, ১৯৯৮ সালে তিনি তৎকালীন তুর্কি প্রধানমন্ত্রী মেসুদ ইয়িলমাজের কাছে ফলকটি “যে কোনো মূল্যে, যেকোনো বিনিময়ে” চেয়েছিলেন। তবে ইয়িলমাজ তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এটি সম্ভব নয়।
নেতানিয়াহুর ভাষ্য, ওই প্রত্যাখ্যানের কারণ ছিল ইসলামি প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা। সে সময় ইস্তাম্বুলের মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন রজব তাইয়্যেব এরদোগান।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা নেতানিয়াহুর এই বর্ণনাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে নাকচ করেছেন। বৈঠকে উপস্থিত সাবেক সংসদ সদস্য ফেইজি ইশবাসারান স্পষ্ট করে বলেন, “এমন কোনো আলাপই হয়নি। নেতানিয়াহু গল্প বানাচ্ছেন।”
যদিও এই গল্প এরদোগানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য সাজানো হয়েছিল, কিন্তু বাস্তব হলো, ইসরাইল একাধিকবার আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রত্নফলকটি চেয়ে এসেছে। সর্বশেষ অনুরোধ করা হয় ২০২২ সালের ৯ মার্চ, ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট ইসহাক হার্জগ আঙ্কারা সফরের পর। তখন ইসরাইলি গণমাধ্যমে প্রচার হয় যে, একটি প্রাথমিক সমঝোতায় তুরস্ক ফলকটি ইসরাইলকে দেবে এবং বিনিময়ে আরেকটি প্রত্নবস্তু পাবে।
কিন্তু আঙ্কারা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, খোদাই করা ওই প্রত্নফলকটি পূর্ব জেরুজালেমে পাওয়া গেছে এবং “কোনো অবস্থাতেই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আবিষ্কৃত প্রত্নবস্তু ইসরাইলের মতো তৃতীয় রাষ্ট্রে হস্তান্তর করা সম্ভব নয়।”
সূত্র :আল জাজিরা









