মঙ্গলবার, জুন ২৪, ২০২৫

আফগান ও সিরিয়ার বিপ্লবী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত

spot_imgspot_img

ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান ও সিরিয়ার যুদ্ধজয়ী ঐতিহাসিক সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মাঝে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (২২ জুন) আল ইমারাহ-র খবরে একথা জানানো হয়।

খবরে বলা হয়, গত ২১ জুন শনিবার তুরস্কে অনুষ্ঠিত ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এর ৫১ তম অধিবেশনের ফাকে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাওলানা আমির খান মুত্তাকী ও সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আস’আদ হাসান শাইবানীর একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আফগান পররাষ্ট্র মুখপাত্র হাফেজ জিয়া আহমদ তাকাল জানান, বৈঠকে তারা কুশল বিনিময় করেন। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা করেন। আফগান ও সিরিয়ার মধ্যকার সম্পর্ককে ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।

দীর্ঘ ও কঠিন লড়াইয়ে সাফল্যের মাধ্যমে নিজ নিজ দেশের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করেন।

প্রেসিডেন্ট আহমদ শার’আ ও ইমারাতে ইসলামিয়ার সরকার উভয়ে নিজেদের চ্যালেঞ্জগুলো উতরে যেতে ও ভবিষ্যতের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে সক্ষম হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, সিরিয়ায় তাহরিরুশ শামের মতো খেলাফতবাদী দলকে নেতৃত্ব দেওয়া আহমদ শার’আ জুলানীর সরকার ও আফগানিস্তানের তালেবান নেতৃত্বাধীন ইমারাতে ইসলামিয়ার সরকার উভয়ই নিজ নিজ দেশের জন্য দীর্ঘ লড়াই লড়েছে। যেখানে তালেবান নেতৃত্বাধীন ইমারাত সরকারের প্রতিপক্ষ ছিলো আমেরিকা ও ন্যাটো জোট, যারা ২০২১ সালে ২০ বছর যুদ্ধ করেও পরাজয় বরণ করে আফগানিস্তান ছাড়তে বাধ্য হয়।

অপরদিকে আহমদ শার’আ জুলানীর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের প্রতিপক্ষ ছিলো, বাশার আল আসাদের পক্ষে থাকা সিরিয়ার সরকারি বাহিনী, ইরান ও রাশিয়া। ২০২৪ এর ডিসেম্বরে দীর্ঘ ১৪ বছর যুদ্ধের পর তাদেরও পরাজয় হয়। বাশার আল আসাদ সিরিয়া ছেড়ে পালিয়ে যায়। তার পক্ষাবলম্বন করা দেশ ইরান ও রাশিয়াও নিজেদের বাহিনী গুটিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষই নিজ নিজ দেশে সরকার গঠন করে।

এক্ষেত্রে তালেবান নেতৃত্বাধীন ইমারাত সরকার আফগানিস্তানে সম্পূর্ণভাবে সুস্পষ্ট শরীয়াহ শাসন চালু করলেও জুলানীর সরকার সরাসরি সে পথে হাটেনি। যদিও যুদ্ধকালীন সময় সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর জুলানী তাতে আফগানিস্তানের মতো পরিপূর্ণ শরীয়াহ শাসন কায়েম করেছিলেন।

আফগানিস্তান ও সিরিয়া দেশ দুটি ধর্ম, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ভৌগোলিক অবস্থানের মতো বিভিন্ন কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বৃহত্তর শাম ও খুরাসানভুক্ত ভূখণ্ড হওয়ায় দেশ দুটির গুরুত্ব মুসলিমদের কাছে আরো বেড়ে যায়।

কেননা হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, শেষ জমানায় হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের আগমন ঘটবে শামেরই কোনো এক মসজিদে। হাদিস বিশারদ ও বিশেষজ্ঞদের বর্ণনা মতে, যা বর্তমান সিরিয়ার উমাইয়া জামে মসজিদ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

এছাড়া হযরত ঈসা (আ.) এর আগমনের পূর্বে কালো পতাকাবাহী একটি দুর্দমনীয় মুসলিম বাহিনী শামে গিয়ে ইমাম মাহদীর সাথে যোগ দিবে, হাদিসে যা খোরাসান অঞ্চল থেকে বের হওয়ার বর্ণনা পাওয়া যায়। বর্তমান ইরানের একটি অংশ ও আফগানিস্তান এর মূল ভূখণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অপর একটি ভবিষ্যতবাণীর জন্যও আফগানিস্তান বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা তিনি বলেছেন, তার উম্মতের একটি দল সর্বদা বিজয়ী হবে। কেউ তাদের পরাজিত করতে পারবে না। আর পৃথিবীর ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, আফগানিস্তানই একমাত্র দেশ যারা কখনো কারো বিরুদ্ধে পরাজয় বরণ করেনি, প্রতিপক্ষ যত শক্তিশালী ও যত বড় পরাশক্তিই হোক না কেনো।

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img