গত ২০ মাসে আমেরিকার পূর্ণ সমর্থনে একাধিক মুসলিম রাষ্ট্রে ৩৫ হাজারেরও বেশি হামলা চালিয়েছে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল। ফিলিস্তিন, লেবানন, সিরিয়া, ইরান ও ইয়েমেনে একের পর এক বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী।
সম্প্রতি আমেরিকাভিত্তিক গবেষণা সংস্থা আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডাটা প্রোজেক্ট (অঈখঊউ) এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল ৩৫ হাজারেরও বেশি সামরিক হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে শুধু ফিলিস্তিনেই হামলা হয়েছে ১৮ হাজার ২৩৫ বার। লেবাননে ১৫ হাজার ৫২০ বার, সিরিয়ায় ৬১৬ বার, ইরানে ৫৮ বার এবং ইয়েমেনে ৩৯ বার হামলা চালিয়েছে দেশটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব হামলা শুধু সামরিক আগ্রাসন নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক ভারসাম্য, নিরাপত্তা ও মানবিক কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। অনেকের মতে, এই ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি থামাতে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্তরে সম্মিলিত কূটনৈতিক উদ্যোগের এখনই প্রয়োজন।
ফিলিস্তিন
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজ্জায় বোমা হামলা চালিয়ে নারী-শিশুসহ ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। এ সময় আহত হয়েছে আরও লাখ ৩ হাজারের বেশি মানুষ। পশ্চিম তীরেও চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ইসরাইলি আগ্রাসনে ধ্বংস হয়েছে বহু ভবন। নিহত হয়েছে প্রায় ১ হাজার মানুষ, যার মধ্যে ২০০-এর বেশি শিশু রয়েছে।
লেবানন
গত ২০ মাসে লেবানন সীমান্ত এলাকায় হিজবুল্লাহর সাথে ইসরাইলি বাহিনীর বাহিনীর১৩ হাজার ৬০০ বার সংঘর্ষ হয়েছে। যার ৮৩ শতাংশ হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে হাজার হাজার প্রাণহানি ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটেছে।
সিরিয়া
সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদের পতনের পর ইসরাইলি বাহিনী দেশটির বিমানঘাঁটি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও কৌশলগত স্থাপনাগুলোতে প্রায় ২০০ হামলা চালিয়েছে। এতে দেশটির সামরিক অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইয়েমেন
ইয়েমেনের রাজধানী সানায় একাধিকবার বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। দেশটির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ হুতি-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোকে বিশেষ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরাইল আধুনিক মার্কিন যুদ্ধবিমান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই হামলাগুলো চালিয়ে যাচ্ছে। পাল্টা প্রতিরোধে ইরান, সিরিয়া ও ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের এই টানা সংঘাত দীর্ঘমেয়াদি ও আরও জটিল হয়ে উঠছে।
তাদের মতে, অঞ্চলটির নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ এবং সংহত কূটনৈতিক চেষ্টাই একমাত্র কার্যকর পথ হতে পারে।