ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বিদেশে দক্ষ ও পেশাগত আফগান শ্রমিকদের বৈধ প্রক্রিয়ায় প্রেরণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রাজধানী কাবুলে এ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সরকারের উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি এবং কূটনীতিকরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার এবং শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মোল্লা আব্দুল মান্নান উমরী। এ ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের উপমন্ত্রী ও কর্মকর্তাবৃন্দ, বেসরকারি কর্মসংস্থান সংস্থাগুলোর ইউনিয়নের সভাপতি ও সদস্যরা, এবং কাবুলে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিরাও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার বলেন, “বৈধভাবে বিদেশে আফগান দক্ষ ও পেশাগত শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং এটি কিছুটা হলেও দেশে বেকারত্ব কমাবে।”
তিনি আরও বলেন, “ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান বেকারত্ব কমানোর ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং গত চার বছর ধরে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, অন্যান্য দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ এবং বড় ও ছোট জাতীয় ও বুনিয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
মোল্লা আব্দুল মান্নান উমরী বলেন, “আফগান শ্রমিকরা বিশ্বাসযোগ্য মানুষ। আমি নিশ্চিত, তারা যেসব দেশে কাজ করতে যাবেন, সেখানে সংশ্লিষ্ট দেশের আইন ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কাজ করবেন এবং আমাদের সমাজ ও দেশের সুনাম বহন করবেন।”
তিনি আরও বলেন, “কাতারের সঙ্গে শ্রমিক পাঠানোর বৈধ চুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক সূচনা। এছাড়া সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, তুরস্ক এবং রাশিয়ার সাথেও একই রকম সমঝোতার আলোচনার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, ভবিষ্যতে এসব দেশেও দক্ষ ও পেশাগত শ্রমিক প্রেরণ করা হবে।”
তিনি বলেন, “শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে, বৈধভাবে প্রেরিত শ্রমিকদের সুরক্ষা ও আইনগত অধিকার নিশ্চিত করা হবে এবং একই সঙ্গে বিদেশে অবৈধ অভিবাসন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যাতে আফগান শ্রমিকদের মর্যাদা, সম্মান ও ইজ্জত বজায় থাকে।”
আফগান ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর মুহাম্মাদ নাঈম বলেন, “আমরা সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি। কাতারকে ধন্যবাদ জানাই যে তারা এই পদক্ষেপে সহযোগিতা করেছে। কাতার আফগানদের একজন ঐতিহাসিক বন্ধু হিসেবে প্রমাণ করেছে।”
বেসরকারি কর্মসংস্থান সংস্থার ইউনিয়ন সভাপতি হাজি নূরুল্লাহ ফাদাভি বলেন, “আফগানিস্তান একটি মেধাবী শ্রমশক্তির দেশ, যা শুধু দেশের ভেতরেই নয়, বৈধভাবে বিদেশেও কাজে লাগানো সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, “দীর্ঘ যুদ্ধ, অবকাঠামোর ধ্বংস, খরা এবং সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আফগানদের জোরপূর্বক ও দলবদ্ধভাবে বহিষ্কারের ঘটনা দেশের বেকারত্ব বৃদ্ধির প্রধান কারণ।”
প্রসঙ্গত, কাতারে ২,০০০ জন দক্ষ ও পেশাগত আফগান শ্রমিক প্রেরণের উদ্দেশ্যে কাবুলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল এবং জোন পর্যায়ে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সূত্র : আরটিএ









