সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারা দেশে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও আপসহীন এই নেত্রীর মৃত্যুতে দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো তাকে ভারত বিরোধী বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিহিত করছে।
সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, খালেদা জিয়া তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলেও তিনি সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী দেশ ভারতে গিয়েছিলেন মাত্র দুইবার।
সংবাদ মাধ্যমটির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, খালেদা জিয়ার শাসনামলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ছিল উত্তপ্ত। তিনি ভারতের বদলে চীন ও মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতেন।
প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ভারতের বদলে তিনি চীন ও ইসলামিক বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ার দিকে মনযোগ দেন।
এছাড়া গঙ্গা পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন। খালেদা জিয়া সবসময় বলতেন ভারতের ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশ তার প্রাপ্য গঙ্গার পানি পাচ্ছে না। কলকাতা বন্দরে পানি সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে হুগলি নদীতে গঙ্গার পানির প্রবাহ ঘুরিয়ে দেয় ভারত।
গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে তিনি জাতিসংঘ এবং ইসলামিক দেশগুলোর কাছে এ ব্যাপারে বাংলাদেশের অবস্থান উত্থাপন করতেন এবং ভারতকে চাপ দিতে বলতেন।
১৯৯২ সালের প্রথম ভারত সফরে তাকে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও বলেন, অনেক বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে বাস করেন। জবাবে খালেদা জিয়া সরাসরি বলেছিলেন, ভারতে বাঙ্গালিরাও বাংলা বোঝেন, বাংলায় কথা বলেন, যার অর্থ এই নয় যে তারা বাংলাদেশি।
এছাড়া বাংলাদেশে ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার তীব্র বিরোধী ছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেছিলেন, টোল ছাড়া ভারতীয় ট্রাক প্রবেশের যে সুযোগ ভারত চায় এটি বাংলাদেশের জন্য ‘দাসত্বের’ সমান।
নিজের শাসনামলে বাংলাদেশের ভূখণ্ড দিয়ে ভারতকে তাদের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহের জন্য তিনি কোনো ট্রানজিট সুবিধা দেননি। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ভারতকে এমন সুবিধা দিলে এটি বাংলাদেশের নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলে দেবে।
সূত্র : আমার দেশ











