বৃহস্পতিবার | ৩১ জুলাই | ২০২৫

শাসকদের ওপর আলেমদের নজরদারি জরুরী : আফগান আমীরুল মু’মিনীন

spot_imgspot_img

ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের আমীরুল মু’মিনীন বা সর্বোচ্চ নেতা শাইখুল হাদীস মাওলানা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা বলেছেন, “তালেবান সরকারের আইন, বিধান ও ফরমান বাস্তবায়নের মাধ্যমেই ফিতনার দরজাগুলো বন্ধ হবে এবং শরীয়াহর পূর্ণ বাস্তবায়নের পথ উন্মুক্ত হবে।” তিনি বলেন, “যদি এসব বাস্তবায়ন করা না হয়, তবে তা জাতির মধ্যে বিভক্তি ও বিশৃঙ্খলার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।”

কান্দাহারে অনুষ্ঠিত আফগানিস্তানের বিভিন্ন জেলার ওলামা প্রতিনিধিদের সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা বলেন, “আমরা বর্তমানে শেষ যামানার ফিতনার যুগে বাস করছি। এ সময় ইসলাম পুনর্জীবন, শরীয়াহর প্রভাব প্রতিষ্ঠা এবং দ্বীনের সঠিক দাওয়াত দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য বিষয়। এখন ওলামায়ে কেরামের দায়িত্ব হলো রাষ্ট্র ও রাজনীতির মাধ্যমেই দ্বীন, ইসলাম এবং শরীয়াহকে প্রতিষ্ঠিত করা।”

তিনি বলেন, “তালেবান চার বছর ধরে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় রয়েছে। দেশে কোনো সংঘাত, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, যুদ্ধ বা বাধা নেই। এখন এই স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে ওলামাগণকে শরীয়াহ বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।”

তিনি বলেন, “জনগণের সমস্যার সমাধানে আন্তরিক ও সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করতে হবে এবং মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ ও বিরোধ দূর করতে হবে।”

আফগান আমীরুল মু’মিনীন বলেন, “নবীদের পর মানবজাতিকে সঠিক পথে পরিচালনার দায়িত্ব আলেমদের কাঁধে। দ্বীনের হেফাজত, ব্যাখ্যা ও প্রসারের দায়িত্ব তাঁদের ওপর অর্পিত হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আল্লাহ তা’আলা আলেমদেরকে শাসকদের ওপর দায়িত্বশীল পর্যবেক্ষক ও তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নিযুক্ত করেছেন, একই সাথে সাধারণ মানুষ ওলামাদের আনুগত্যে বাধ্য। ওলামাদের দায়িত্ব অত্যন্ত ভারী এবং এর হিসাবও কঠিন।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এখন খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগ নয়। তাঁরা ছিলেন মুজতাহিদ, আর আমরা অক্ষম ও দুর্বল। এই সময়ে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই ওলামায়ে কেরামের উচিত নিজেদের মধ্যে ঐক্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।”

তিনি বলেন, “গত বিশ বছরে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করতে বিপুল অর্থ, শক্তি ও কৌশল প্রয়োগ করা হয়েছে। মানুষের মধ্যে শরীয়াহর অনুভূতি, ইসলামী চিন্তাধারা, তাকওয়া, দ্বীনদারি ও ঈমানদারি ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। মাদরাসা ও ওলামাদের ওপর অভিযান চালানো হয়েছে, তাদের নির্মূল করার প্রচেষ্টা চলেছে। অন্যদিকে অশ্লীলতার জন্য পথ উন্মুক্ত করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “যেভাবে আফগানদের ঘরবাড়ি, সম্পদ ও নগরসমূহ ধ্বংস হয়েছে, তেমনি তাদের আত্মিক মূল্যবোধও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এখনো চেষ্টা চলছে ইসলামি শাসনব্যবস্থাকে দুর্বল করতে, ওলামাদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করতে, অপপ্রচার চালিয়ে জনগণের মনে উলামাদের প্রতি অবিশ্বাস তৈরি করতে।”

মাওলানা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা আলেমদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা যেন সময়কে উপলব্ধি করেন এবং এই অনুকূল পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে শরীয়াহর পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য নিজেদের সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। তিনি বলেন, “আজকের স্থিতিশীল ও সংঘাতমুক্ত সময়ই জাতিকে শরীয়াহর আলোয় আলোকিত করার সেরা সুযোগ।”

সূত্র: আরটিএ

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img