তুরস্ক বলেছে, নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চল থেকে যদি আর্মেনিয়া সেনা প্রত্যাহার না করে তাহলে যে যুদ্ধবিরতি এবং শান্তির প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে তা ব্যর্থ হতে বাধ্য।
শুক্রবার (৯ অক্টোবর) তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন এ মন্তব্য করেন।
এর আগে রাশিয়া ঘোষণা করে যে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য আর্মেনিয়ায় এবং আজারবাইজান সোমবার মস্কোয় বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছে। চলমান সংঘাত বন্ধের লক্ষ্য নিয়ে আমের্নিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে ফ্রান্স, রাশিয়া এবং আমেরিকা।
এ প্রসঙ্গে ইব্রাহিম কালিন বলেন, যদি শুধুমাত্র তারা শান্তি এবং যুদ্ধ বিরতির প্রচেষ্টা চালায় এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করে তাহলে গত ৩০ বছর ধরে যা ঘটে চলেছে তারই পুনরাবৃত্তি ছাড়া আর কিছুই হবে না। তিনি বলেন, আর্মেনিয় দখলদারিত্বের অবসান ঘটানোর ব্যাপারে যদি বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়ে কাজ না করা হয় তাহলে এই শান্তি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে -এটি প্রায় অবধারিত।
অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড অপারেশন ইন ইউরোপ-এর সহযোগিতায় আমেরিকা, ফ্রান্স এবং রাশিয়া গত ৩০ বছর ধরে নাগার্নো-কারাবাখ নিয়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যকার দ্বন্দ্ব মীমাংসার চেষ্টা করে আসছে কিন্তু তাদের সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি। তুরস্ক স্পষ্ট বলছে, গত ৩০ বছর ধরে এই গ্রুপ যে প্রচেষ্টা চালিয়েছে প্রকৃতপক্ষে তা কোনো কার্যকরী কিছুই ছিল না।
আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া শনিবার (১০ অক্টোবর) থেকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যুদ্ধবিরতির অংশ হিসাবে রেড ক্রস মানবিক অভিযানের মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করবে এবং দ্রুত দু’দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হবে। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মস্কোয় দশ ঘণ্টার আলোচনার পরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে। নাগর্নো-কারাবাখের বন্দীদের বিনিময় এবং মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য শনিবার মধ্যাহ্ন থেকেই যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হচ্ছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার মস্কোয় রাশিয়া, আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে ল্যাভরভ, আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেহুন বায়রামভ এবং আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহরব ম্নাস্তাকানিয়ান উপস্থিত ছিলেন।
পূর্ব ভূমধ্যসাগরের শক্তি অধিকার এবং সমুদ্রসীমা নির্ধারণের বিষয়ে উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থার (ন্যাটো) দুই সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর এই প্রথম তুরস্ক ও গ্রীসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) তুরস্কের সরকারী গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছ, তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুট কাভুসোগলু তার গ্রীক প্রতিপক্ষ নিকোস দেন্ডিয়াসের সাথে স্লোভাকিয়ার রাজধানী ব্র্যাটিস্লাভায় বৈঠক করেছেন।
বৈঠকে তারা দ্বিপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। এছাড়াও মন্ত্রীরা দু’দেশের মধ্যে নতুন করে আরেক দফা আলোচনার জন্য একটি তারিখ নির্ধারণের বিষয়েও আলোচনা করেছেন যা দু’দেশের উত্তেজনা নিরসনের দিকে ইতিবাচক পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেয়।
ভারতের মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম) প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বিহার বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে বলেছেন, এমন দিনও আসবে যখন কোনও মুসলিমকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন।
ওয়াইসি বলেন, এখন নেতৃত্ব তৈরি করা দরকার। আমাদের দলের নেতারা যখন জয়লাভ করবেন, তখন একটি প্ল্যাটফর্ম পাওয়া যাবে এবং সেখান থেকে যাত্রা শুরু হবে। আমরাও সেটাই করছি। আমরা তৃণমূলস্তরে নেতৃত্ব তৈরি করতে যাচ্ছি। আমরা বিহারে এটা প্রয়োগ করছি। আমরা সকলেই বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে কুশওয়াহা সাহেবই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন।
বিহারে মুসলিম জনসংখ্যা ১৬.৮৭ শতাংশ। অন্যদিকে, যাদব সম্প্রদায়ের সংখ্যা ১৪ শতাংশের কাছাকাছি। মাত্র ৪ শতাংশ রয়েছেন কূর্মি সম্প্রদায়ের মানুষজন। আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদব ও তার পরিবার বিহারে ১৫ বছর ধরে শাসন ক্ষমতায় ছিলেন। অন্যদিকে, জেডেইউ নেতা নীতিশ কুমার গত ১৫ বছর ধরে বিহারে ক্ষমতায় আছেন। তিনি কূর্মি সম্প্রদায়ের মানুষ। এই ১৪ শতাংশ ও ৪ শতাংশের মানুষজন বিহারের ক্ষমতায় ৩০ বছর ধরে থাকলেও রাজ্যে কমপক্ষে ১৭ শতাংশ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ থাকা সত্ত্বেও মুসলিমদের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী না করে ৬ শতাংশের কুশওয়াহ সম্প্রদায়ের আরএলএসপি নেতা উপেন্দ্র কুশওয়াহকে এবার বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিহারে আনুষ্ঠানিকভাবে জোটের ঘোষণা করেছে উপেন্দ্র কুশওয়াহার দল আরএলএসপি, আসাদউদ্দিন ওয়াইসির ‘মিম’, মায়াবতীর বিএসপিসহ চার দল। জোটের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গ্র্যান্ড ডেমোক্রেটিক সেক্যুলার ফ্রন্ট’। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হয়েছে উপেন্দ্র কুশওয়াহকে।
ওয়াইসি বলেন, বিহারে নীতীশ কুমার এবং বিজেপি’র ১৫ বছর এবং আরজেডি-কংগ্রেসের ১৫ বছর শাসন করার পরেও দরিদ্ররা উপকৃত হয়নি। রাজ্য এখনও সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। আমরা বিহারের ভবিষ্যতের জন্য এই জোট গঠন করেছি এবং আমরা সাফল্যের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
ভারতের আসামে সরকারি মাদরাসা বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যত চূড়ান্ত করেছে হিন্দুত্ববাদী বিজেপির রাজ্য সরকার।
গত বুধবার( ৭ অক্টোবর) রাজ্যের মধ্য শিক্ষা বিভাগের উপসচিব এস এন দাস মধ্য শিক্ষা বিভাগের ডিরেক্টরের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, রাজ্যের সরকারি মাদরাসাগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য ১৪৮ জন চুক্তিভিত্তিক মাদরাসা শিক্ষককে মধ্য শিক্ষার অধীনস্থ সাধারণ স্কুলগুলোতে বদলি করা হবে।
অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) গুয়াহাটিতে আসামের শিক্ষামন্ত্রী ও হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতা ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেছেন, রাজ্যের সরকারি মাদরাসাগুলো বন্ধ হবেই। ধর্মগ্রন্থের পাঠ নেওয়া হবে সরকারের টাকায়, এই পরম্পরা আমরা বন্ধ করবই।
এ প্রসঙ্গে এআইইউডিএফ প্রধান মাওলানা বদরউদ্দিন আজমল বৃহস্পতিবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, সরকার এখন যে সিদ্ধান্তই নিক, ক্ষমতায় এলে তারা সব সরকারি মাদরাসা খুলে দেবেন। মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা শতাব্দী প্রাচীন বলে মন্তব্য করে তারা সরকারি সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন। এতেও কাজ না হলে ক্ষমতায় এলেই ক্যাবিনেটে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সব সরকারি মাদরাসা খুলে দেওয়া হবে বলে মাওলানা বদরউদ্দিন আজমল মন্তব্য করেছেন।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের শেষ নাগাদ আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সব সেনা প্রত্যাহার করা হবে বলে যে ঘোষণা দিয়েছেন তা নাকচ করে দিয়েছে ন্যাটো সামরিক জোট।
সংস্থার মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, সম্মিলিত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হবে, একক সিদ্ধান্তে নয়। বুধবার ট্রাম্প বলেছেন, চলতি বছরের ক্রিসমাস অনুষ্ঠানের মধ্যেই আমেরিকা তার সমস্ত সেনা দেশে ফিরিয়ে আনবে।
ট্রাম্পের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ন্যাটো মহাসচিব বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আফগানিস্তানের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি যখন অনুমোদন দেবে ঠিক তখনই শুধুমাত্র দেশটিতে ন্যাটো সামরিক জোট তাদের মিশন শেষ করবে।
স্টলটেনবার্গ বলেন, আমরা সবাই একসাথে সিদ্ধান্ত নিয়ে আফগান যুদ্ধ শুরু করেছি এবং ভবিষ্যতে সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারেও সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
চীনের সাহায্যে কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি বানাচ্ছে পাকিস্তান। লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) ভারতকে চাপে রাখতেই পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে চীন। ভারতীয় গোয়েন্দা ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং’ (‘র’) এর বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।
খবরে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে চীনের সহায়তায় ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্রসহ নানা সামরিক পরিকাঠামো বানাচ্ছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
গত মাসে ভারতের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকারের কাছে ওই রিপোর্ট পেশ করেছে ‘র’। তাতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের লাসাডন্না ঢোক অঞ্চলে চীনের ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’ (পিএলএ)-র সহায়তায় ‘ভ‚মি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র’ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র বানানো হচ্ছে। বাঘ জেলায় মোতায়েন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেডের সদর দফতরের অদূরের ওই ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি বানানোর কাজে ১৩০ জন পাকিস্তান সেনা এবং ৪০ এর মতো অসামরিক নির্মাণ-কর্মী জড়িত রয়েছেন বলেও প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে।
আমেরিকার কাছ থেকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ক্রয়ে একটি আনুষ্ঠানিক আবেদন জমা দিয়েছে কাতার। এই চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত তিন ব্যক্তির বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এমন খবর দিয়েছে।
তবে এই চুক্তি কার্যকর করা হলে সৌদি আরব ও ইহুদীবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দিতে পারে। গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে লকহিড মার্টিন কোম্পানির জেট কিনতে পারস্য উপসাগরীয় দেশটি আবেদন করেছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, নীতিগতভাবে, প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা সামগ্রী বিক্রি ও হস্তান্তরের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসকে জানানোর আগে আমেরিকা কোনো মন্তব্য কিংবা নিশ্চিত করে না।
আর ওয়াশিংটনে কাতারের দূতাবাস থেকেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তির বরাতে রয়টার্স বলছে, অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে কাতারের সঙ্গে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বারবার সামনে চলে এসেছে। কাজেই অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের ক্ষেত্রে এটি চুক্তিভঙ্গকারীর ভূমিকা রাখতে পারে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ক্ষমতা দেয়া ও টিকিয়ে রাখার মালিক একমাত্র সৃষ্টিকর্তা। সরকারকে সময় দেয়ার বিএনপি কে? সরকার টিকে আছে জনগণের ইচ্ছায়, কারো দয়ায় নয়।
শুক্রবার বিকালে সংসদ ভবন এলাকায় সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে সরকারকে আর সময় দেয়া যাবে না বলে হুশিয়ারি দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জণগণের আস্থা নিয়ে সরকার পরিচালনা করছে। এদেশের মাটির অনেক গভীরে আওয়ামী লীগের শেকড়। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ অপরাধীদের আশ্রয় দেয় না। আওয়ামী লীগ জনগণের ভালোবাসায় টিকে আছে, টিকে থাকবে।
‘সরকার অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে’ বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়তো দিচ্ছেই না বরং শাস্তির বিধান আরও কঠোর করতে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী মন্ত্রিসভায় আইন সংশোধনের প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে।
তিনি বলেন, কোনো অপরাধ সংগঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনছে। বিএনপি মাঠে নামার আগেই সরকার অপরাধীদের গ্রেফতার অভিযান শুরু করে দেয়। দলীয় পরিচয় অপরাধীদের শাস্তি থেকে রেহাই দিতে পারবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, সরকার কারো হাতে ইস্যু তুলে দিবে না। যারা ধর্ষকদের বিচারের নামে আন্দোলনে নেমে ভিন্ন ভাষায় কথা বলে, জনসচেতনতা তৈরির পরিবর্তে সরকার পরিবর্তনের কথা বলে প্রকারান্তরে তারা ধর্ষকদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে।
সিলেটের এমসি কলেজে সংঘটিত ধর্ষণসহ সারা দেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগের মহাসমাবেশ থেকে ৯ দফা দাবি জানিয়েছে বামধারার ছাত্র সংগঠনগুলো।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণাও দেয়া হয়।
‘ধর্ষণ ও নির্যাতন বিরোধী বাংলাদেশ’ ব্যানারে শুক্রবার বিকালে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ধর্ষণবিরোধী সমাবেশ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগসহ নয় দফা দাবি জানায় সংগঠনগুলো।
সেইসাথে আগামী ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত নানা কর্মসূচিরও ঘোষণা দেয়া হয় সমাবেশ থেকে।
মহাসমাবেশ থেকে ধর্ষণ ও নিপীড়ন বন্ধে নয় দফা দাবি উত্থাপন করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স।
নয় দফা দাবিগুলো হল- ১. সারা দেশে অব্যাহত ধর্ষণ-নারীর প্রতি সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধ ও বিচারে ‘ব্যর্থ’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। ২. পাহাড়-সমতলে আদিবাসী নারীদের ওপর সামরিক-বেসামরিক সব ধরনের যৌন ও সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে। ৩. হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতনবিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। সিডো সনদে স্বাক্ষর ও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সব আইন ও প্রথা বিলোপ করতে হবে। ৪. ধর্মীয়সহ সব ধরনের সভা-সমাবেশে নারীবিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন বন্ধ করতে হবে। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে বিটিসিএলের কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক চর্চায় সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে। ৫. তদন্তকালীন সময়ে ভিকটিমকে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ভিকটিমের আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ৬. অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে অনিষ্পন্ন সব মামলা দ্রুত নিষ্পন্ন করতে হবে। ৭. ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন ১৮৭২-১৫৫ (৪) ধারা বিলোপ করতে হবে এবং মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে। ৮. পাঠ্যপুস্তকে নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈষম্যমূলক যে কোনো প্রবন্ধ, নিবন্ধ, পরিচ্ছেদ, ছবি, নির্দেশনা ও শব্দ চয়ন পরিহার করতে হবে। ৯. গ্রামীণ সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স বলেন, আমরা সারা দেশে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক জাগরণ তৈরি করব। ধর্ষণকে উচ্ছেদ করে ছাড়ব এ দেশ থেকে।
আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে দাবি মেনে নেয়া না হলে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ অভিমুখে ধর্ষণবিরোধী লংমার্চ করা হবে বলে হুশিয়ারি দেন ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়।
তিনি বলেন, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে ধর্ষণ ও নির্যাতনবিরোধী বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে বাম ধারার ছাত্র সংগঠনগুলো প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেবে। এছাড়া ১১ অক্টোবর ধর্ষণবিরোধী আলোকচিত্র প্রদর্শনী, ১২ অক্টোবর সাংস্কৃতিক সমাবেশ, ১৩ অক্টোবর চলচ্চিত্র উৎসব, ১৪ অক্টোবর নারী সমাবেশ এবং ১৫ অক্টোবর সারা ঢাকায় ধর্ষণবিরোধী সাইকেল র্যালির কর্মসূচি পালন করা হবে।