রাজনৈতিক কারণে আর ধর্মের অপব্যবহারের মাধ্যমে মগজ ধোলাই অব্যাহত রাখতে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বিরোধিতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের বছরে রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে বিরোধিতা করা হচ্ছে। আরেকটি পক্ষ রয়েছে— যারা ধর্মটাকে অপব্যবহার করে সংকীর্ণ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য।’
বুধবার (২৯ মার্চ) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে “জাতীয় শিক্ষাক্রম বিস্তরণ ও দেশব্যাপী প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ” শীর্ষক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।
প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে যেমন ষড়যন্ত্র হয়েছে, তেমনই নতুন শিক্ষাক্রম নিয়েও অনেক বাধা তৈরি হচ্ছে। আমাকে এবং বইয়ের লেখক জাফর ইকবাল ভাইসহ (শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল) বেশ কয়েকজনকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন— চামড়া মোটা করতে হবে, পিঠে কুলা বাঁধতে হবে। কিন্তু আমরা দমে যাবার পাত্র নই। আমাদের দেশকে এগিয়ে নেবার জন্য, নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবার জন্য, আর যে স্বপ্ন নিয়ে এত ত্যাগের বিনিময়ে দেশটি তৈরি হয়েছিল, সেই স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছাবার জন্য— আমাদের যা কিছু এখন করণীয়, তা আমাদের করতেই হবে। এটা আমাদের কর্তব্য। এটা আমাদের দায়িত্ব। এটা আমাদের পালন করতেই হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটি তো নির্বাচনের বছর, রাজনৈতিক বিরোধিতা তো আছেই। সব দেশেই থাকে, আমাদের দেশেও আছে। আমাদের দেশের ধরনটা হয়তো ভিন্ন, টক্সিট। এখানে (বাংলাদেশে) বিরোধিতা করলে একটি পক্ষ আছে— যারা আমাদের পক্ষটাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়। গ্রেনেড মেরে, বোমা মেরে গুলি করে, নানান পদ্ধতিতে। নির্বাচন সামনে, তারা খুব সক্রিয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে খুব বেশি ইস্যু-টিস্যু পাওয়া যাচ্ছে না। কাজেই শিক্ষাক্রম ও বইয়ের ওপর বিরোধিতা করার একটা প্রচেষ্টা করা হয়েছে। আরেকটা পক্ষ যারা ধর্মটাকে অপব্যবহার করে, সংকীর্ণ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য। যদি শিক্ষার্থীরা ভাবতে শিখে যায়, আমাদের শিক্ষার্থীরা ভলো-মন্দ, সাদা-কালোর তফাৎ করতে যদি শিখে যায়, শিক্ষার্থীরা যদি সুক্ষ্ম চিন্তা করতে শেখে, তাহলে তাদের মগজ ধোলাই আর করা যাবে না। এই চক্রের মূল কাজ হলো মগজ ধোলাই। সেটি করা যাবে না, সেজন্য তাদের খুব আপত্তি।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন— মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ফারুক, মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সারা দেশের প্রধান শিক্ষকরা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।