তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানকে মুসলিম উম্মাহর কন্ঠস্বর আখ্যা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এরদোগানের আগমন উপলক্ষে ইসলামাবাদে পাক-তুর্কি বিজনেস ফোরামের এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
শাহবাজ শরীফ বলেন, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান মুসলিম উম্মাহর কন্ঠস্বর। দখলকৃত ফিলিস্তিন ও কাশ্মীর ইস্যুতে তিনি সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। এমনকি উপমহাদেশের মুসলিমরা যখন স্বাধীনতার জন্য লড়ছিলো তখনও তার দেশ তুরস্ক কোনো দ্বিধা ছাড়া মুসলিমদের সাহায্য করেছিলো।
তিনি আরো বলেন, পাকিস্তান ও তুরস্কের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক রয়েছে। আমরা একে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। এর অংশ হিসেবে দেশটির বিনিয়োগকারীদের সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করবে পাকিস্তান।
এছাড়া এরদোগানের নেতৃত্বে তুরস্ক প্রতিনিয়ত উন্নতি করছে ও উন্নয়নের শিখরে চড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সাইপ্রাস ইস্যুতে পাকিস্তান তুরস্ককে সমর্থন করে বলে জানান। বিতর্কিত অঞ্চলটির ন্যায্য অধিকার তুরস্কের বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অপরদিকে ২য় বার পাকিস্তান সফরে আসা মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেন, পাকিস্তানে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। এটি আমাদের দ্বিতীয় বাড়ি। কায়েদ-এ-আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং আল্লামা ইকবাল আমাদেরও মহান নেতা।’
এছাড়াও বলেন, ‘কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে পাকিস্তানের প্রচেষ্টাকে আমরা সমর্থন করি। সাইপ্রাস ইস্যুতে পাকিস্তানের সমর্থন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
ফিলিস্তিন ইস্যুতে বলেন, ‘ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের সহায়তা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বিশ্বের প্রতিটি ফোরামে ফিলিস্তিনের পক্ষে আমরা একসাথে সোচ্চার হয়েছি। আমরা পূর্ব জেরুজালেম বা পবিত্র কুদসকে রাজধানী করে স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।’
দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ তুরস্কের ভূমিকম্প-প্রভাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন, যা দুই দেশের জনগণের গভীর সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটায়। পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশাল ত্যাগ স্বীকার করেছে এবং আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রচেষ্টাকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে আমরা একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব। তুরস্কের “মারিফ ফাউন্ডেশনের” স্কুলগুলো পাকিস্তানের শিক্ষা খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বাণিজ্যিক সম্পর্কোন্নয়নের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ পারস্পরিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। দু’দেশের মাঝে ২৪টি চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আমার আলোচনা হয়েছে। আমরা তুর্কি বিনিয়োগকারীদের পাকিস্তানে বিনিয়োগে উৎসাহিত করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা খাত ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।’
সূত্র: এআরওয়াই নিউজ, আনাদোলু