গাজ্জায় চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি ব্যর্থ করতে নতুন অজুহাত সামনে এনেছেন ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। হামাস পরিচালিত জিম্মিদের মুক্তি অনুষ্ঠান অপমানজনক দাবি করে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেয়নি নেতায়নিয়াহু।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) চুক্তি অনুযায়ী হামাস ৬ ইসরাইলিকে মুক্তি দিলেও ৬০২ ফিলিস্তিনির মুক্তি আটকে দেয় নেতানিয়াহিু। এর ফলে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চুক্তি সম্পর্কিত মতবিরোধ আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, হামাস পরিচালিত জিম্মিদের মুক্তি অনুষ্ঠান অপমানজনক হওয়ায় তারা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিতে অস্বীকার করেছেন।
হামাসের জিম্মি মুক্তির অনুষ্ঠান
ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, হামাস যখন ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তি দেয়, তখন তাদেরকে মঞ্চে নিয়ে আসা হয় এবং হাত নেড়ে গাজ্জাবাসীদের উদ্দেশে অভিবাদন জানাতে বাধ্য করা হয়।
নেতানিয়াহু এ বিষয়টি অপমানজনক এবং প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, এটি আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করে। এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জিম্মিদের ব্যবহার করা হচ্ছে, যা ইসরাইলের পক্ষ থেকে একেবারেই নিন্দনীয়।
যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন
হামাস বারবার চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে দাবি করে নেতানিয়াহু কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই অপমানজনক অনুষ্ঠানগুলো বন্ধ না হলে পরবর্তী পর্যায়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি স্থগিত রাখা হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, যতদিন না হামাস এমন অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি দেবে, ততদিন যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরবর্তী ধাপের বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে না।
হামাসের প্রতিক্রিয়া
ইসরাইলের এই সিদ্ধান্তকে চুক্তির বড় লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করে হামাসের মুখপাত্র আবদেল লতিফ আল-কানৌউ বলেন, ইসরাইলের পূর্বনির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে বন্দিদের মুক্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি চুক্তির শর্ত পূরণে ইসরাইলকে বাধ্য করতে মধ্যস্থতাকারীদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
চুক্তির পরবর্তী পর্যায় নিয়ে আলোচনা
যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায় মার্চের শুরুতে শেষ হবে, তবে দ্বিতীয় পর্যায়ের চুক্তি বা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে এখনো কোনো আলোচনা শুরু হয়নি। ইসরাইলি কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি, যা থেকে ইসরাইলের দীর্ঘমেয়াদি উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।
হামাসের রাজনৈতিক শাখার সদস্য বাসেম নাঈম বলেন, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নোংরা খেলা খেলছেন যাতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়ে গাজ্জায় নতুন করে যুদ্ধ শুরু হয়।
মানবিক সহায়তার অবরোধ
চুক্তির প্রথম পর্যায়ের সময়, গাজ্জার বাসিন্দাদের জন্য মানবিক সহায়তা যথাযথভাবে পৌঁছাতে দেওয়া হয়নি এবং ইসরাইল করিডর থেকে সেনা প্রত্যাহার স্থগিত রেখেছে, যার কারণে গাজ্জার মানুষ আরও কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এছাড়া, গাজ্জার হাজার হাজার বেসামরিক নারী ও শিশুর নিহত হওয়ার ঘটনাসহ অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে ইসরাইলকে দায়ী করা হচ্ছে।








