বিশ্বের কাছে দখলকৃত ফিলিস্তিনের বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃত পশ্চিম তীরের মাহমুদ আব্বাস সরকারের আওকাফ মন্ত্রণালয় ঐতিহাসিক ইবরাহীমী মসজিদের কর্তৃত্ব গণহত্যা চালিয়ে যাওয়া বিশ্ব মানবতার শত্রু ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে দাবী করছে অবৈধ রাষ্ট্রটির সরকার।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) গণহত্যা ও দখলদারিত্ব কার্যক্রমের মাঝেই এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, মসজিদ কর্তৃপক্ষকে দখলদার ইসরাইল জানিয়েছে, এর কর্তৃত্ব তাদের কাছে হস্তান্তর করেছে ফিলিস্তিন সরকারের আওকাফ মন্ত্রণালয়। তাই মসজিদ আঙ্গিনা নামে পরিচিত অংশে স্থগিত থাকা ছাদ আচ্ছাদনের কাজ পুনরায় শুরু করা হবে।
পশ্চিম তীরের হেবরনে অবস্থিত ঐতিহাসিক ইবরাহীমী মসজিদ দখলের পায়তারা প্রকাশ্যে আসে ৩১ বছর আগে ১৯৯৪ এর ২৫ ফেব্রুয়ারিতে। ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের সেনারা ফজরের নামাজের সময় মসজিদে সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে ২৯ জন ফিলিস্তিনি শাহাদাত হোন।
তৎকালীন ইয়াসিন আরাফাতের সরকারের সাথে ১৯৯৩ সালে চুক্তিতে যাওয়ার পরও পরবর্তীতে ফিলিস্তিনের বলে স্বীকৃত অংশে, তাও মসজিদের মতো পবিত্র স্থানে হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করায় একটি কমিটি গঠিত হয়। কমিটিটি অবৈধ রাষ্ট্রটির পক্ষপাতিত্ব করে। তদন্তের সময় ইবরাহিমী মসজিদের পুরো ওয়াকফ এলাকা বন্ধ রাখা হলেও ইসরাইলের উগ্র ইহুদিবাদী অবৈধ শরণার্থীরা এর একটি অংশ দখল করে নেয়। মসজিদের পেছনে উত্তর দিকের ওয়াকফ এলাকা যা ‘আঙ্গিনা’ নামে পরিচিত, প্রার্থনার জন্য তাবু স্থাপন করে। এভাবে মসজিদের উত্তরের দুই তৃতীয়াংশ জায়গা দখল করে নেয়, যেখানে মসজিদের আজান ঘরও অন্তর্ভুক্ত।
এক্ষেত্রে তদন্ত কমিটির পক্ষপাতিত্ব, অসারতা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় মসজিদ কর্তৃপক্ষ ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বিভিন্ন শর্তে তাবু স্থাপিত অংশটিতে ইহুদি ও ইহুদিবাদীদের প্রার্থনার অনুমতি দেয়। সিদ্ধান্ত হয়, বছরে তাদের ধর্মীয় উপাসনার ১০ দিন শুধুমাত্র এখানে তারা প্রবেশ করতে পারবে। তবে মুসলিমদের ইবাদাতের কোনো অংশে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। ছুটির দিন ও ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোতেও তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে, যদিও এই দিনগুলো তাদের প্রার্থনার দিন হোক না কেনো।
মসজিদ কর্তৃপক্ষ তাদের ছাড় দিলেও তারা সময়ে সময়ে মসজিদ ও মসজিদের ওয়াকফিয়া অংশে তাদের সন্ত্রাসী তাণ্ডব অব্যাহত রাখে। তাবু স্থাপিত অংশকে ইট পাথরের স্থায়ী সিনেগগ বা ইহুদি উপাসনালয়ে পরিণত করার কাজ চালিয়ে যায়। সর্বশেষ ২০২৪ এর ৯ জুলাই তারা সিনেগগের উপরে ছাদ নির্মাণের চেষ্টা চালায়। কিন্তু ব্যাপক প্রতিবাদ ও চাপের মুখে তা স্থগিত করতে বাধ্য হয়। মসজিদের কর্তৃত্ব হস্তান্তর করা হয়েছে দাবীর মধ্যদিয়ে তারা এই সিনেগগেরই স্থগিত থাকা ছাদের নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করতে যাচ্ছে, নিয়ম ও আইন অনুসারে যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
সূত্র: আল জাজিরা