রক্তপিপাসু স্বৈরশাসক বাশার আসাদ সরকারের পতনের পর প্রথমবারের মতো সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের ঐতিহাসিক উমাইয়া মসজিদে তারাবিহ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে শত শত সিরীয় নাগরিক অংশগ্রহণ করেন।
পবিত্র রমজান উপলক্ষে সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার পর মসজিদটি মুসল্লিদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। শুক্রবার দিবাগত রাত প্রথম তারাবিহ নামাজ শেষে সেখানে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
শাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক রাগাদ ফয়সাল তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “বাশার আসাদ সরকারের পতনের পর এই প্রথমবার আমরা স্বাধীনভাবে রমজান পালন করছি। এটি আমাদের জন্য সত্যিই আনন্দের মুহূর্ত।”
অনেক বছর পর উমাইয়া মসজিদে প্রবেশের অনুভূতি প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমাদের বাড়ি মসজিদের কাছেই ছিল, কিন্তু ভয় ও আতঙ্কের কারণে আগে এখানে আসতে পারতাম না। আজ, যখন মসজিদ আমাদের হয়ে গেছে, তখনই এখানে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা অবশেষে নিপীড়ন থেকে মুক্ত হয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “আগে এই মসজিদ আমাদের ছিল না। এর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখতাম, সেখানে এমন লোকজন ছিল, যারা আমাদের মতো নয়।”
সিরিয়ার দামেস্কের পূর্ব গৌতার বাসিন্দা বাহা কুরদোশ বলেন, “এটি আমাদের প্রথম রমজান, যা আমরা বাশার আসাদ ছাড়া পালন করছি। এই প্রথম আমরা অনুভব করছি, আমাদের দেশ সত্যিই আমাদেরই। আমাদের ভূমির প্রতিটি ইঞ্চি আমাদের। এর চেয়ে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না।”
তিনি আরও বলেন, “রমজানের এই খুশি জনগণের মাঝেও স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। সবাই আনন্দিত, আমরাও অনেক বেশি আনন্দিত। আমরা চাই, দেশের সকল মানুষের অবস্থার উন্নতি হোক।”
বাহা কুরদোশ অতীতের রমজানের স্মৃতি মনে করে বলেন, “সে সময় রমজান অনেক কঠিন ছিল। আলহামদুলিল্লাহ, সেই অন্ধকার দিন শেষ হয়েছে। তখন আমরা দুঃখ-কষ্ট, অভাব ও দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাতাম।”
সিরিয়ার চিকিৎসক রাওয়া আকাশে বলেন, “বাশার আসাদ সরকারের পতনের পর এবারই প্রথম আমরা স্বাধীনভাবে রমজান পালন করছি। এটি এমন এক অনুভূতি, যা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।”
তিনি আরও বলেন, “আগে আমরা ঘরে বসেই তারাবিহ নামাজ পড়তাম। কিন্তু এখন আমরা আনন্দিত, গর্বিত, কারণ উমাইয়া মসজিদ এখন আমাদের। পুরো দামেস্কই পরিবর্তিত হয়ে গেছে।”
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি