বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৩, ২০২৫

আসাদের পতনের পর খালিদ বিন ওয়ালিদ মসজিদে প্রথমবারের মতো তারাবিহ নামাজ আদায়

বাশার আসাদ সরকারের পতনের পর প্রথমবারের মতো সিরিয়ার হোমস প্রদেশে অবস্থিত ইসলামের মহান সেনাপতি খালিদ বিন ওয়ালিদ রাঃ-এর মাজার সংলগ্ন মসজিদে তারাবিহ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার দিবাগত রাতে রমজানের শুরু উপলক্ষে হোমসের মানুষ খালিদ বিন ওয়ালিদ মসজিদে সমবেত হয়ে তারাবিহ নামাজ আদায় করেন। মসজিদটি রমজানের আনন্দ প্রকাশ করতে আলো দিয়ে সাজানো হয়, আর স্থানীয়রা আতশবাজি ফুটিয়ে উৎসব উদযাপন করেন।

ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে, তবুও আমরা খুশি
আসাদ সরকারের পতনের ৮ বছর পর হোমসে ফিরে আসা আবু বকর সাক্কা বলেন, “স্বাধীনভাবে ইবাদত করতে পারা এক অপুর্ব অনুভূতি।”

তিনি আরও বলেন, “হোমসে হাজার হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন। আমি যদি বিয়ে করতাম, তবুও এতটা খুশি হতাম না। আমাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে, শহরও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, কিন্তু তবুও আমরা আনন্দিত।”

আমি খুশি নই, যেন উড়ে বেড়াচ্ছি!
মেলাজ হুরিয়্যাহ বলেন, “আমি যখন হালেপের সাক্ষাৎকারগুলো দেখতাম, তখন অনেকে বলত, ‘আমাদের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।’ তখন তাদের কথা পুরোপুরি বুঝতে পারতাম না। কিন্তু হোমসে ফিরে আসার পর বুঝতে পারছি, তারা ঠিকই বলেছিল। সত্যিই আমার অনুভূতি প্রকাশ করার মতো কোনো শব্দ নেই।”

১০ বছর পর তুরস্ক থেকে হোমসে ফিরে আসা ইউসুফ তাহা বলেন, “দুই মাস হলো আমি ফিরে এসেছি। আগের মতো নেই, এখন পরিবেশ অনেক সুন্দর। আমরা স্বাধীন। ১০ বছর পর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পেরে আমি দারুণ খুশি।”

১০ বছর পর মাতৃভূমিতে ফিরে গর্বিত
মোস্তাফা মোস্তাফা, যিনি ১০ বছর পর তুরস্কের মার্সিন থেকে হোমসে ফিরেছেন, বলেন, “আমি তুর্কিদের, বিশেষ করে মার্সিনবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার অনুভূতি অসাধারণ। আমি আমার মাতৃভূমিতে ফিরেছি। এখানে আমরা অনেক শহীদ দিয়েছি। তাই এই ভূমি আমাদেরই।”

গৌরব, সম্মান ও স্বাধীনতার অনুভূতি একসঙ্গে অনুভব করছি
ইবরাহিম শাফিক, যিনি ২০১৫ সালে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন, বলেন, “আসাদ সরকারের পতনের পর মানুষ সত্যিই আনন্দিত।”

তিনি আরও বলেন, “খালিদ বিন ওয়ালিদ মসজিদ হোমসবাসীর কাছে বিশেষ মর্যাদার স্থান। এই রমজান অন্যগুলোর মতো নয়। আমি একইসঙ্গে গৌরব, সম্মান ও স্বাধীনতার অনুভূতি উপভোগ করছি। এখন শান্তি ফিরে এসেছে, আমরা নির্ভয়ে চলাফেরা করতে পারছি। আগে ছিল শুধু ভয় আর আতঙ্ক, সামাজিক জীবন ছিল না বললেই চলে। শহীদদের জন্য প্রার্থনা করি, আল্লাহ তাদের রহম করুন।”

রমজান আমাদের ও মুসলিম বিশ্বের জন্য শান্তি ও কল্যাণ বয়ে আনুক
রিহাম খালিদ, যিনি সন্ধ্যা থেকেই মসজিদে অবস্থান করছিলেন, বলেন, “আমি দোয়া করি, এই রমজান আমাদের ও পুরো মুসলিম উম্মাহর জন্য কল্যাণ ও শান্তি বয়ে আনুক।”

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

spot_imgspot_img

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img
spot_img