হুথিদের সাথে চুক্তির জেরে মধ্যপ্রাচ্য ত্যাগ করছে ইসরাইলের সুরক্ষায় এর জলসীমায় অবস্থান করা মার্কিন বিমানবাহী রণতরী হ্যারি এস. ট্রুম্যান।
শুক্রবার (১৬ মে) আল জাজিরার খবরে একথা জানানো হয়।
খবরে বলা হয়, ইয়েমেনের হুথিদের সাথে চুক্তির জেরে একজন মার্কিন কর্মকর্তা আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, বিমানবাহী রণতরী হ্যারি এস. ট্রুম্যান মধ্যপ্রাচ্য থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে এবং এর বিকল্প প্রতিস্থাপনেরও কোনো পরিকল্পনা নেই দেশটির।
তিনি বলেন, ইসরাইলের উপর অব্যাহত আক্রমণ সত্ত্বেও চুক্তি হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইয়েমেনের হুথিরা পারস্পরিক আক্রমণ থেকে বিরত থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এছাড়া ইসরাইলের দায়সারাভাবের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ইসরাইল হুথিদের উপর চালানো কোনো আক্রমণের পূর্বে ওয়াশিংটনকে অবহিত করে না।
মার্কিন সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়, শুক্রবারও ওয়াশিংটন ও পেন্টাগনকে কোনো রকমের বার্তা না দিয়ে উপসাগরীয় দেশটিতে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলী সেনারা। বিমানযোগে হামলা চালিয়ে দেশটির হুথি নিয়ন্ত্রিত অংশের হুদাইদাহ এবং সালিফ বন্দরের সরকারী অবকাঠামো ধ্বংস করেছে।
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে হুথিদের পরিচালিত হামলা থেকে ইসরাইল সংশ্লিষ্ট জাহাজ রক্ষা ও ইয়েমেনের গোষ্ঠীটির উপর হামলা পরিচালনায় মার্কিন সেনাদের সহায়তার লক্ষ্যে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ট্রুম্যান এতদিন মধ্যপ্রাচ্যের জলসীমায় অবস্থান করছিলো। গাজ্জায় গণহত্যা চালিয়ে অবৈধ রাষ্ট্রটির সুরক্ষায় ভূমধ্যসাগরে অবস্থান করায় মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলোতেও হামলা অব্যাহত রেখেছিলো হুথিরা। এর ফলে বিমানবাহী রণতরী থেকে বিমানযোগে দেশটিতে সরাসরি হামলা শুরু করে আমেরিকা। চলতে থাকে পাল্টাপাল্টি হামলা। সম্প্রতি ওমানের মধ্যস্থতায় এর অবসান ঘটে। ইয়েমেনের হুথি ও আমেরিকার মাঝে সম্পাদিত হয় যুদ্ধবিরতি চুক্তি। ঘোষণা করা হয় যে, চুক্তি অনুসারে কোনো পক্ষই একে অপরকে আক্রমণ করবে না। আমেরিকান জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হবে না। ফলে নৌচলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে।
চুক্তি হওয়ায় ইসরাইলে হামলা বন্ধ রাখা হবে কি না এই প্রসঙ্গে হুথিদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, চুক্তিতে ইসরাইলের কোনো উল্লেখ নেই। ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরাইলে হামলা অব্যাহত রাখা হবে।
ট্রাম্পও একে শুধুমাত্র আমেরিকা ও হুথি গোষ্ঠীর মধ্যকার চুক্তি বলে গোষ্ঠীটির হামলা থেকে ইসরাইলকে রক্ষায় নিজেদের দায়মুক্তির ঘোষণা দিয়েছিলেন। যার ফলে তার বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের মধ্যপ্রাচ্য সফরের পূর্বে প্রথমবারের মতো অবৈধ রাষ্ট্রটির সাথে আমেরিকার দূরত্ব ও মনমালিন্য প্রকাশ পায়।