মঙ্গলবার, জুন ৩, ২০২৫

ভারতে বোরখা গায়ে মুসলিম সেজে মন্দিরে আতঙ্ক ছড়ানোর সময় এক হিন্দু যুবক আটক

spot_imgspot_img

ভারতে বোরখা গায়ে মুসলিম সেজে মন্দিরে আতঙ্ক ছড়ানোর সময় এক হিন্দু যুবককে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার (৩০ মে) মুসলিম মিররের খবরে একথা জানানো হয়।

খবরে বলা হয়, উগ্র হিন্দুত্ববাদী মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যের নিয়ন্ত্রণাধীন উত্তর প্রদেশের শামলি জেলার বরখান্দি গ্রামে গত ২৩ মে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বীরোঁ ওয়ালে মন্দিরে বোরখা গায়ে মুসলিম সেজে এক হিন্দু যুবকের আতঙ্ক ছড়ানোর ঘটনা ঘটে।

বোরখা গায়ে মন্দিরে মন্দিরে আতঙ্ক ছড়ানোর বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক উদ্বেগ ও ক্ষোভের জন্ম দেয়। এতে স্থানীয় হিন্দুদের মাঝে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তাকে আটকের পর দেখা যায় সে কোনো নারী নয় বরং পুরুষ এবং মুসলিম নয় বরং হিন্দু। হরিয়ানার ইয়ামুনানগরে তার বসবাস। নাম, সুনীল। সে দাবী করে, নিকটবর্তী আত্মীয়দের দেখতে এভাবে মন্দিরে এসেছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তার হাঁটা ও আচরণ নারীর মতো ছিল না, যা তাদের সন্দেহের উদ্রেক করে। কয়েকজন স্থানীয় লোক তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যখন এগিয়ে যান, তখন সে মন্দির চত্বর থেকে দৌঁড়ে পালাতে শুরু করে। কিন্তু শেষমেশ ধরা পড়ে যায়। বোরখার ভেতর পুরুষ দেখে তারা আরো ভড়কে যান।

মন্দিরে মুসলিমের অনুপ্রবেশের চেষ্টা টাইটেলে এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। যা মানুষের আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দেয়। ভিডিওর ফলে সোশাল মিডিয়া ইউজারদের অনেকে একে মন্দিরে মুসলিমদের নতুন কোনো সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টা বলেও মনে করতে শুরু করেন।

প্রকৃত ঘটনা সামনে আসার পূর্বে একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “একজন মানুষ ছদ্মবেশে উপাসনালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করছে, এটা খুবই উদ্বেগজনক। মন্দির একটি পবিত্র স্থান, এবং এর পবিত্রতা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।”

অন্যরা জানান, এমন ঘটনার পেছনে কোনো হুমকি থাকতে পারে বলেও তারা আশঙ্কা করছেন এবং এই ঘটনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ব্যাখ্যার দাবি জানাচ্ছেন।

শামলি পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে, গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। এই ঘটনায় সাম্প্রদায়িক সংবেদনশীলতা থাকায় ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (IB)–ও তদন্তে নেমেছে। প্রশাসন সবাইকে গুজব না ছড়ানোর এবং শান্তিপূর্ণভাবে তদন্তে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছে।

এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার বলেন,
“আমরা বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি এবং সম্পূর্ণ প্রেক্ষাপট উদঘাটনের চেষ্টা করছি। সবাইকে অনুরোধ করছি, তারা যেন শান্ত থাকেন এবং হঠকারী সিদ্ধান্তে না পৌঁছান।”

এই ঘটনাটি ধর্মীয় সংবেদনশীলতা এবং অঞ্চলটিতে অস্থিরতার আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। বরখান্দি গ্রামের বাসিন্দারা দ্রুত পদক্ষেপ এবং প্রশাসনের আশ্বাস চেয়ে দাবি জানিয়েছেন, যেনো ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধ করা যায় এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকে।

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img