ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের সঙ্গে আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দিচ্ছে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাজাখস্তান।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সোশ্যাল ট্রুথে দেওয়া এক বার্তায় এ কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেন, “আমরা শিগগিরই একটি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেব, যা এই চুক্তিকে আনুষ্ঠানিক করবে। আরও অনেক দেশ এই ‘শক্তির ক্লাবে’ যোগ দেওয়ার চেষ্টা করছে।”
এক বিবৃতিতে কাজাখ সরকার বলেছে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের লক্ষ্যে গঠিত আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দিচ্ছে কাজাখস্তান। বিষয়টি বর্তমানে আলোচনার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আব্রাহাম চুক্তিতে আমাদের প্রত্যাশিত অন্তর্ভুক্তি কাজাখস্তানের পররাষ্ট্রনীতির স্বাভাবিক ও যৌক্তিক ধারাবাহিকতা, যা সংলাপ, পারস্পরিক সম্মান ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত।
কাজাখস্তানের ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের সঙ্গে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা রয়েছে। ফলে এই পদক্ষেপটি অনেকের কাছে মূলত প্রতীকী হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, এটি কেবল কূটনৈতিক সম্পর্কের সম্প্রসারণ নয়। এই চুক্তিতে যুক্ত অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে এমন এক অংশীদারিত্ব তৈরি করে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ নানা বিষয়ে বিশেষ ও অনন্য সহযোগিতার পথ খুলে দেয়।
হোয়াইট হাউসে মধ্য এশিয়ার নেতারা
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট তোকায়েভসহ মধ্য এশিয়ার আরও চার দেশের নেতারা অর্থাৎ কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তান এর সঙ্গে বৈঠক করেন।
রাশিয়ার দীর্ঘ প্রভাবাধীন এবং এখন ক্রমবর্ধমানভাবে চীনের প্রভাবাধীন হয়ে ওঠা এই অঞ্চলে আমেরিকা নিজস্ব প্রভাব বৃদ্ধি করতে চাইছে।
বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, “এখানে উপস্থিত কিছু দেশ আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেবে এবং সেই ঘোষণাগুলো অচিরেই দেওয়া হবে।”
বিষয়টির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, আমেরিকা আশা করছে কাজাখস্তানের যোগদানের মাধ্যমে আব্রাহাম চুক্তি পুনরুজ্জীবিত হবে, যার সম্প্রসারণ গাজ্জা যুদ্ধ চলাকালে স্থগিত ছিল।
চুক্তির সম্প্রসারণ ও আঞ্চলিক প্রেক্ষাপট
ট্রাম্প একাধিকবার জানিয়েছেন, তিনি তার প্রথম মেয়াদে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে আরও সম্প্রসারিত করতে চান।
২০২০ সালে তার মধ্যস্থতায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন প্রথম ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। একই বছরের শেষ দিকে মরক্কোও চুক্তিতে যোগ দেয়।
সম্প্রতি গাজ্জায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ট্রাম্প আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, আঞ্চলিক শক্তিধর সৌদি আরবও অবশেষে এই চুক্তিতে যোগ দিতে পারে। তবে রিয়াদ স্পষ্ট করেছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া তারা এগোবে না।
সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান আগামী ১৮ নভেম্বর হোয়াইট হাউস সফর করবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এদিকে আজারবাইজান ও উজবেকিস্তান দুটি দেশই ভবিষ্যতে আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা দেখা রয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স









