শনিবার | ১৫ নভেম্বর | ২০২৫

সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনর্বহাল করা হবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে সংবিধানের প্রস্তাবনায় পুনরায় ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ অন্তর্ভুক্ত করবেন। খতমে নবুয়ত মহাসম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, শৃঙ্খলাপূর্ণ উপস্থিতি এবং মুসলমানদের ঈমানি দাবি ও অনুভূতির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে সংবিধানে সংযোজিত ইসলামি ধারা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেষ নবী হওয়া সম্পর্কে আকীদা এবং বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ভঙ্গের কারণে ফিলিস্তিন ও রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নির্যাতনের বিষয়টি উল্লেখ করেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন কর্মী। আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ সংযোজন করেছিলেন। আলহামদুলিল্লাহ, সেটি এখনো বহাল আছে। অনেকেই এটা সরিয়ে দিতে চেয়েছিল কিন্তু পারেনি।

কিন্তু আপনারা জানেন, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে সংবিধানের প্রস্তাবনায় যে ‘মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস’ ছিল এবং অনুচ্ছেদ ৮ এর মধ্যে ছিল, সেটি তুলে দেওয়া হয়েছে। আপনারা কি চান আমরা সেটি পুনর্বহাল করি? ইনশাআল্লাহ আমরা সেটি পুনর্বহাল করব।”

শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত খতমে নবুয়ত মহাসম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। শান্তিপূর্ণ এ সমাবেশের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আপনারা যে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের আয়োজন করেছেন এবং আজকে এখানে এত শৃঙ্খলার সঙ্গে সবার বক্তব্য শুনছেন, এটা দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। আপনাদের দিলে কি চলছে আমি জানি। আপনাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করার জন্যই এখানে এসেছি।”

বিদেশি মেহমান ও বক্তাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের এখানে যারা বিদেশি মেহমান কথা বলেছেন, তারা আল্লামা ইকবালের শের বলেছেন, আপনারা কোরআনের বাণী শুনেছেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ তায়ালা সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছেন। আমরা মুসলমান, আমরা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’তে বিশ্বাস করি।

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে গিয়েছেন, ‘আমিই সর্বশেষ নবী, আমার পরে কোনো নবী আসবে না।’ যদি এরপরও কেউ নিজেকে নবী ঘোষণা করে বা দাবি করে, তাহলে তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই ঘোষণার মধ্যে থাকেন না। আল্লামা ইকবাল বলেছিলেন, ‘কি মুহাম্মদ সে ওফা তুনে তো হাম তেরে হ্যায়।’”

বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর দুর্বলতা ও বিভক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আখেরি নবী হিসেবে বিশ্বাস করি, কলেমা পড়ে আমরা মুসলমান হয়েছি। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা বাংলাদেশের পরিচয় বিশ্বাস করি। কিন্তু সারা বিশ্বের সমস্ত মুসলমান হচ্ছে মিল্লাতে ইসলামিয়া।

দুঃখজনকভাবে আমাদের এই বিভক্তির কারণে আজ প্যালেস্টাইনে আমাদের ভাইদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চলছে। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় আমাদের রোহিঙ্গা ভাইদের হত্যাযজ্ঞের শিকার হতে হচ্ছে। শুধু আমাদের দুর্বলতার কারণেই এ অবস্থা।”

দাবি–দাওয়া বাস্তবায়ন এবং রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে বিএনপির এই নেতা বলেন, “আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যদি বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের দেন, এ দেশের জনগণ যদি মহব্বত করে আমাদের ওপর দায়িত্ব অর্পণ করেন, আর আপনারা সবাই যদি সহযোগিতা করেন, তাহলে আপনাদের আজকের এই যে দাবি–দাওয়া, এসব দাবির পক্ষে আমরা আছি।

এসব দাবি নিয়ে সংসদে আলাপ–আলোচনার মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ। এজন্য সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, সারা বাংলাদেশের মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা ইনশাআল্লাহ আপনাদের এই প্রস্তাব গ্রহণ করব। যারা রসুলুল্লাহর পক্ষে নয়, তারা মুসলমান হতে পারে না।”

খতমে নবুয়ত মহাসম্মেলনে দেশি–বিদেশি আলেম, বিভিন্ন ইসলামি সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মুসল্লিরা অংশ নেন।

spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img