চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শহীদ আবু সাঈদের পরিবার।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বলেন, আমি রায়ে খুশি কিন্তু বিচার দেখতে চাই। আমার ছেলে শহীদ হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশ আমার ছেলেকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করেছে। আমি হুকুমদাতাসহ পুলিশের বিচার চাই। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই। হত্যা করার অনুমতি যে দিয়েছিল বলেই আমার ছেলের মতো হাজার হাজার মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অনেকে হাত পা হারিয়েছে, পঙ্গু হয়েছেন। কারও কারও চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। হাসপাতালে এখনো অনেকে কাতরাচ্ছে। ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে বাংলার মাটিতে নিয়ে এসে রায় কার্যকর করতে হবে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যরা পলাতক হাসিনাসহ অন্যান্য আসামিদের দ্রুত দেশে এনে রায় কার্যকর করার দাবি জানান।
আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমরা সবার বিচার চাই। যারা হুকুম দিয়েছে, যারা গুলি করেছে সবাইকে ফাঁসি দিতে হবে। আমি মা আজ বুঝতেছি ছেলে হারানোর কষ্ট। আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে আমার মতো অনেক মা, বোন, ভাই সন্তান হারিয়েছে, স্বামীকে হারিয়েছে। অনেক জীবন সংসার শেষ হয়ে গেছে। এসবের বিচার হতে হবে।
প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আবু সাঈদের গ্রামের স্থানীয়রা জানান, শেখ হাসিনাসহ এসব হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের সবার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আমরা রায়ে খুশি, কিন্তু তা যদি কার্যকর না হয় তাহলে সবকিছুই বৃথা যাবে। যেভাবে গণহত্যা চালিয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে তার জন্য প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা উচিত। শুধু তাই নয়, রায়ের পর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সারাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। এ কারণে শহীদ ও আহতসহ জুলাই যোদ্ধারা সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ নিতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া কিংবা পুনর্বাসন করা যাবে না।
আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।









