সোমবার | ১ ডিসেম্বর | ২০২৫

মুক্তির কাজ শেষ করেছে মুজাহিদরা, এখন সিরিয়া গড়ার দায়িত্ব জনগণের কাঁধে : আহমাদ শারাআ

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমাদ হুসাইন আল-শারাআ আল-জুলানী বলেছেন, আলেপ্পো মুক্তি শুধু একটি শহর পুনরুদ্ধারের ঘটনা নয়, বরং পুরো উম্মাহ ও পুরো অঞ্চলের জন্য নতুন আশার সূচনা।

তিনি উল্লেখ করেন, আলেপ্পো মুক্ত করতে গিয়ে সিরিয়ার জনগণ ব্যাপক ত্যাগ স্বীকার করেছে, শহরের প্রাচীর ঘিরে ঝরেছে অগণিত রক্তধারা; এই ত্যাগের মাধ্যমেই আলেপ্পোর স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। আলেপ্পোর শিকল ভাঙার পর কারাগারগুলো মুক্ত হয়েছে, সিরিয়ার শিশুদের মুখে ফিরে এসেছে হাসি, আর উম্মাহর অন্তরে ফিরে এসেছে এ বিশ্বাস যে সিরিয়া আবার উম্মাহর বুকে ফিরে আসবে।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) আলেপ্পো নগরীকে আসাদের শাসনের কবল থেকে মুক্ত করার প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে আলেপ্পো দুর্গে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, আজকের এ অনুষ্ঠান শুধু আলেপ্পোর মুক্তি উদযাপন নয়, বরং পুরো সিরিয়া এবং পুরো অঞ্চলের জন্য নতুন এক ইতিহাস রচনার শিরোনাম।

বক্তৃতার শুরুতে প্রেসিডেন্ট আহমাদ শারাআ আলেপ্পো মুক্তির মুহূর্ত স্মরণ করে বলেন, “এ ধরনের মুহূর্তে আমাদের বুকে নানা রকম অনুভূতির ঢেউ উঠেছিল, যখন আমরা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছি বীরেরা কীভাবে আলেপ্পো শহরে প্রবেশ করছে, শহরবাসীকে পতিত শাসন থেকে মুক্ত করছে। ঠিক সেই মুহূর্তগুলোতেই আলেপ্পো আবার নতুন করে জন্ম নিয়েছে, আর আলেপ্পোর এই জন্মের সঙ্গে সঙ্গে পুরো সিরিয়াও নতুনভাবে জন্ম নিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই সুউচ্চ কেল্লার প্রাচীর থেকে আমরা শামকে মুক্ত দেখতে পেয়েছি, দেখেছি মুজাহিদদের দামেস্কের হৃদয়ে অগ্রযাত্রা। আমাদের কাছে আলেপ্পো ছিল পুরো সিরিয়ায় প্রবেশের দরজা। যখন আলেপ্পোর শিকল ভাঙল, তখন কারাগারগুলো মুক্ত হলো, সিরিয়ার শিশুদের মুখে ফিরে এলো হাসি।”

প্রেসিডেন্ট আহমাদ শারাআ তাঁর বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন, আলেপ্পো মুক্তি উম্মাহর অন্তরে নতুন এক আশার সঞ্চার করেছে। তিনি বলেন, “আলেপ্পো মুক্ত হওয়ার পর উম্মাহর অন্তরে নতুন করে আশা জেগেছে যে সিরিয়া আবার উম্মাহর আগলে ফিরে আসবে। আজকের এই দিন কেবল আলেপ্পোর জন্য আনন্দের দিন নয়, বরং পুরো সিরিয়া ও সমগ্র অঞ্চলের জন্য নতুন ইতিহাসের শিরোনাম।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও পুনর্গঠনের প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট বলেন, “হ্যাঁ, আলেপ্পো মুক্ত হয়েছে, কিন্তু আমাদের সামনে এখন বড় একটি দীর্ঘ পথ খোলা হয়েছে, আর তা হচ্ছে পুনর্গঠন ও ইমারের পথ। আলেপ্পোর ইমার সিরিয়া পুনর্নির্মাণের দৃঢ় ও মৌলিক অংশ। আলেপ্পো হবে অর্থনীতির মিনার, ইমারের মিনার, নির্মাণ ও উন্নতির আলোকবর্তিকা।”

তিনি আরও পরিষ্কারভাবে বলেন, ময়দানের মুজাহিদদের দায়িত্ব ছিল শহরকে মুক্ত করা, এখন দায়িত্ব জনগণের কাঁধে। “আলেপ্পো মুক্ত করার দায়িত্ব ছিল মুজাহিদদের, তা তারা পালন করেছে। এখন দায়িত্ব তোমাদের ওপর, হে জনগণ, তোমরাই সিরিয়াকে আবার নতুন করে গড়ে তুলবে,” বলেন প্রেসিডেন্ট আহমাদ শারাআ।

তিনি বলেন, “আমরা শুধু আলেপ্পো মুক্ত করেই সন্তুষ্ট হইনি, বরং মুক্তির প্রথম মুহূর্ত থেকেই আমরা সবাই একসঙ্গে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি, যেন নতুন করে সিরিয়াকে গড়ে তুলতে পারি”।

প্রেসিডেন্ট আহমাদ শারাআ আলেপ্পোর অধিবাসীদের মধ্যে থাকতে পেরে নিজের আনন্দের কথা জানান। তিনি বলেন, “আজ তোমরাই নিজের হাতে ইতিহাস লিখছো, হে আলেপ্পোর মানুষ। আজ পুরো সিরিয়া তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।”

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি ও সানা

spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img