মঙ্গলবার | ২৩ ডিসেম্বর | ২০২৫
spot_img

প্রথম আলো বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার চেয়ে মতাদর্শিক রাজনীতিতে সক্রিয়: মির্জা গালিব

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব বলেছেন, দেশের শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলো বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার চেয়ে মতাদর্শিক রাজনীতিতে বেশি সক্রিয়। প্রথম আলো দীর্ঘদিন ধরে এমন এক সম্পাদকীয় রাজনীতি করে আসছে, যা কার্যত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অবস্থানকে বৈধতা দেওয়ার ভূমিকা রাখছে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা গালিব বলেন, বাংলাদেশকে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’ বা ‘ইসলামী মৌলবাদের ঝুঁকি’ দেখিয়ে যে ইসলামোফোবিক সেকুলারিজম প্রতিষ্ঠার রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে, প্রথম আলোর অবস্থান তার চেয়ে খুব বেশি আলাদা নয়।

তিনি বলেন, দ্য ডিসেন্ট-এর এক প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে—জামায়াত বা হেফাজতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংসতার ক্ষেত্রে প্রথম আলো খোলাখুলি ও আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করে, যেমন ‘জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব’, ‘হেফাজতের ধ্বংসযজ্ঞ’ কিংবা ‘বর্বরতা’।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট সহিংসতার ঘটনায় প্রথম আলো সচেতনভাবে ভাববাচ্য ব্যবহার করে বলে অভিযোগ করেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, এসব ঘটনায় ‘হামলা হয়েছে’, ‘ঘুমন্ত ব্যক্তির মৃত্যু’, ‘বাসে আগুন’—এ ধরনের শব্দচয়ন দেখা যায়, যেখানে সরাসরি রাজনৈতিক দায় এড়িয়ে যাওয়া হয়।

মির্জা গালিবের মতে, এ ধরনের সাংবাদিকতা এক ধরনের ‘আমরা বনাম তারা’ রাজনীতিকে উসকে দেয়। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে যারা নিজেদের লিবারেল ও সেকুলার দাবি করেন, তাদের রাজনীতির বড় বৈশিষ্ট্য হলো সিলেক্টিভ মোরালিটি।

তিনি অভিযোগ করেন, প্রথম আলোর অফিসে হামলা হলে তা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর বড় আঘাত হিসেবে দেখা হয়, কিন্তু নয়া দিগন্ত, সংগ্রাম বা আমার দেশের অফিসে হামলা হলে সেটিকে একইভাবে বিবেচনা করা হয় না। এতে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও দ্বিমুখী মানদণ্ড তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ড. গালিব বলেন, কোনো মতাদর্শের বিরোধিতা করতে গিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। প্রথম আলোকে কঠোর সমালোচনা করা হলেও তাদের সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

পোস্টে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সেকুলার ও ধার্মিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে মতাদর্শিক ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য থাকলেও দেশটি সবার। এই ভিন্নমত নিয়েই কমন গ্রাউন্ড তৈরির চেষ্টা করতে হবে। আর তার প্রথম শর্ত হলো—সহিংসতা পরিহার করে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার পথে আসা।

মির্জা গালিব বলেন, এক পক্ষের গণমাধ্যমে হামলায় নীরবতা আর অন্য পক্ষের ঘটনায় উচ্চকণ্ঠ প্রতিবাদ—এই সিলেক্টিভ মোরালিটি থেকে বেরিয়ে আসার এখনই সময়।

spot_img
spot_img
spot_img

এই বিভাগের

spot_img