সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা ৩ মিনিটের দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণে জানাজা সম্পন্ন হয়।
জানাজায় ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। জানাজায় অংশ নেন, খালেদা জিয়ার পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানসহ তিন বাহিনীর প্রধান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
জানাজাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাত থেকেই নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ প্লাজা ও আশপাশের এলাকা কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সর্বস্তরের মানুষ জানাজায় শরিক হন।
এর আগে বুধবার সকাল ৯টা ১৭ মিনিটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় খালেদা জিয়ার মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসায় পৌঁছায়। পরে সকাল ১১টার দিকে সেখান থেকে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স যাত্রা করে। দুপুর ১২টার একটু পর জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিনবাহী গাড়ি সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় প্রবেশ করে।
গুলশানের বাসভবনে বিএনপির নেতাকর্মী ও স্বজনেরা খালেদা জিয়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এ সময় কফিনের পাশে বসে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
জানাজা শেষে খালেদা জিয়াকে তার স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে দাফন করা হচ্ছে। জানাজা ও দাফনকে ঘিরে এভারকেয়ার হাসপাতাল, জাতীয় সংসদ ভবন ও দাফনস্থল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিজিবিসহ সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
এদিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা ঢাকায় আসেন। বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে জানানো হয়, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তারেক রহমানের হাতে ভারতের শোকবার্তা হস্তান্তর করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিকও তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে সহমর্মিতা জানান।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি গত ২৩ নভেম্বর থেকে সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং তার অবস্থা জটিল ছিল। খালেদা জিয়া ১৫ আগস্ট ১৯৪৫ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং বেনজির ভুট্টোর পর মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত।











