বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, জুলাই বিপ্লবে ছাত্র জনতা শহীদ হয়ে কেবলমাত্র একটি সরকারকেই পতন ঘটায়নি। শুধু আওয়ামীদের পতন ঘটানোই মূল উদ্দেশ্য ছিলো না। গোটা বাংলাদেশের উপরে চেপে বসা আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত হতেই নতুন স্বাধীনতা যোদ্ধারা জীবন দিয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এই দেশে আল্লাহদ্রোহী যত দল, মত, গোষ্ঠী আছে যারা আমাদের আইনজীবী সাইফুলকে হত্যা করেছে তাদেরকে বিচার করে স্ব-মূলে উৎপাটনের মাধ্যমে নতুন অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করা হবে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে জাতীয় সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ইনকিলাব সাংস্কৃতিক সংসদ’ (ইসাস) এর উদ্যোগে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আর কোনো পুলিশি বন্দুকের নলের গোলামী করবে না। আর কোনো রক্ত চক্ষুর গোলামী করবে না। আর কোনো আধিপত্যবাদী রাষ্ট্রের গোলামী করবে না। গোটা বাংলাদেশের জনগণকে এক আল্লাহর গোলামীতে পরিণত করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমাদের এই মাতৃভূমি বাংলাদেশে আবারো একটি নতুন স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি কিন্তু আমরা এখনো অর্থনৈতিক মুক্তি পায়নি। সাংস্কৃতিক মুক্তি এখনো আমাদের মেলেনি। ফ্যাসিবাদের দোসরেরা এখনো দেশের আনাচে কানাচে ঘাপটি মেরে বসে আছে, তাদেরকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তবেই প্রতিটি পদক্ষেপে আমাদের সত্যিকার মুক্তির দ্বার উন্মোচিত হবে।
ড. মাসুদ দেশে কথিত বর্তমান সব বিদ্রোহ আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে বলেন, আপনাদের নেত্রী দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন এই সময়ে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে শ্রমিক লীগ, রিকশা-অটোলীগ নামে বার বার দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। স্মরণে রাখুন, আপনাদের যারা উদ্ভাবক, যাদেরকে নেতা দাবি করেন, জাতির সামনে তাদের কবর রচনা হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আপনাদের ইমাম পালিয়ে চলে গেছে, এখন কেন অযথা লাফালাফি করছেন। সিজদাহ থেকে মাথা উঠিয়ে দেখুন, দেশের মানুষের অগ্রযাত্রা কোন পথে। আজকে দেশের প্রত্যেক নাগরিক এক একজন রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার কাজে তৈরি হয়ে গেছে। দেশের পলাতক মহিলা ইমাম দিয়ে আর কোনো মিথ্যাচার করা চলবে না।
তিনি আরও বলেন, একটা জাতির জনগণ কি ভূমিকা পালন করে, তার প্রতিফলন তাদের নেতৃত্বের মাঝে ফুটে ওঠে। এই জনগণকে খুঁজে নিতে হবে আমাদের বঙ্গভবন, গণভবন, সংসদ ভবন, রাষ্ট্রীয় সব দায়িত্ব পালনের উপযোগী ব্যক্তিদের নির্বাচিত করে যথাস্থানে প্রেরণ করা।
তা’লীমুল কুরআন ইসলামিয়া মাদ্রাসার উপদেষ্টা মাওলানা মীর বাহার আমিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশিষ্ট সমাজসেবক মাওলানা মোঃ জুনাইদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ কামাল হোসাইন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুহাম্মদ আবু সাদিক কায়েম, ইসলামিয়া হাসপাতাল বাংলাদেশ রায়েরবাগ ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ মোরতাজা, কাজী আবুল কাশেম, তাজুল ইসলাম, আব্দুল আলীম খান প্রমুখ।