ফিলিস্তিনের বিধ্বস্ত গাজ্জা উপত্যকায় ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল।
গাজ্জার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বারাশ জানিয়েছেন, দখলদার ইসরাইল এখনো এই অঞ্চলে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রবেশে বাধা দিচ্ছে এবং ধীরগতিতে মানবিক সহায়তা দেওয়ার নীতি প্রয়োগ করে হাজারো রোগীর জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দখলদার ইসরাইলি বাহিনী জরুরি ওষুধ এবং শিশুদের অপুষ্টি দূর করার ওষুধ প্রবেশে বাধা দিয়ে কার্যত রোগীদের কার্যকর চিকিৎসা-সেবাকে অচল করে দিয়েছে।
আল-বারাশ আরও বলেন, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত সাড়ে তিন লক্ষাধিক রোগী প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছেন না, আর রোগী অন্যত্র স্থানান্তরের পথও বন্ধ রয়েছে কারণ সীমান্তগুলো বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
এর আগে, গাজ্জার আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সের পরিচালক ডা. মুহাম্মদ আবু সালমিয়া জানিয়েছিলেন, ওষুধের সংকটের কারণে অকালজাত শিশুদের মৃত্যুহার ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, দখলদার বাহিনী ওষুধবাহী ট্রাকগুলোর প্রবেশে বাধা দিচ্ছে, ফলে চিকিৎসা সেবা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে।
তার ভাষায়, গাজ্জায় এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজারেরও বেশি অঙ্গচ্ছেদ করতে হয়েছে, যার মধ্যে দুই হাজারেরও বেশি শিশু রয়েছে। কিন্তু কৃত্রিম অঙ্গের অভাবে তারা তীব্র শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে।
আবু সালমিয়া আরও জানান, দখলদার ইসরাইল আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার করেছে এবং এখনও করছে। এ কারণে নবজাতকদের মধ্যে জন্মগত ত্রুটি বাড়ছে এবং দীর্ঘ অবরোধের কারণে পুষ্টিহীনতার ভয়াবহ প্রভাব দেখা দিচ্ছে।
এই মন্তব্যগুলো এমন এক সময়ে এসেছে, যখন গত ৯ অক্টোবর ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মধ্যে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ইসরাইল এখনো সেই শান্তিচুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছে এবং গাজ্জায় মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠনের কাজকে বাধাগ্রস্ত করছে।
সূত্র: পার্সটুডে









