বিতর্কিত ও বিকৃত আইন অনুসারে ওয়াকফের নিবন্ধন নিতে উগ্র হিন্দুত্ববাদী ভারত সরকারের অনলাইন পোর্টাল চালুর বিরোধিতা করেছে দেশটির মুসলিমদের অন্যতম বৃহৎ সংগঠন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড।
বুধবার (৪ জুন) মুসলিম মিররের খবরে একথা জানানো হয়।
খবরে বলা হয়, বিতর্কিত ও বিকৃত আইন অনুসারে ওয়াকফের নিবন্ধন নিতে ‘ওয়াকফ উম্মীদ’ নামে একটি অনলাইন পোর্টাল চালু করতে যাচ্ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার, যার তীব্র বিরোধিতা করেছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড (AIMPLB)। আগামী ৬ জুন পোর্টালটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালুর কথা রয়েছে।
এবিষয়ে আজ বুধবার সংগঠনটির পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। এতে সংগঠনের সভাপতি মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ রহমানী বলেন, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড ‘ওয়াকফ উম্মীদ’ পোর্টাল চালুর তীব্র বিরোধিতা করছে। আমরা মুসলিমদের এবং দেশের ওয়াকফ বোর্ডগুলোর কাছে আবেদন জানাচ্ছি, তারা যেনো আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত এই পোর্টালে ওয়াকফ সম্পত্তির নিবন্ধন করা থেকে বিরত থাকেন।
তিনি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, এই পোর্টালটি বিতর্কিত ওয়াকফ বিল-২০২৫ এর কাঠামো অনুসরণ করে তৈরি, যা ব্যাপকভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এবং বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।
তিনি আরো বলেন, প্রত্যেক মুসলিম সংগঠন এই আইনটির বিরোধিতা করেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দল, মানবাধিকার সংগঠন, এমনকি শিখ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরাও এই আইনকে অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেছে।
সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘আদালতের অবমাননা’ আখ্যা দিয়ে মাওলানা রহমানী বলেন, এই আইন আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে থাকা সত্ত্বেও ৬ জুন এমন পোর্টাল চালু করা অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকার বিতর্কিত নতুন আইনের অধীনে ওয়াকফ সম্পত্তির নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করতে চাচ্ছে, অথচ সেই আইনটির সাংবিধানিক বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। এই পদক্ষেপ শুধু অন্যায় নয়, বরং আইনতও অবৈধ।
তিনি দেশের সকল ওয়াক্ফ বোর্ড কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেনো লিখিতভাবে এই নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করেন এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।
এছাড়াও সংগঠনটি ঘোষণা দিয়েছে যে, তারা কেন্দ্র সরকারের এই নতুন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হবে।
অপরদিকে সরকার দাবী করছে, ওয়াকফ উম্মীদ পোর্টালের উদ্দেশ্য হলো দেশের ওয়াকফ সম্পত্তিগুলোর ব্যবস্থাপনাকে সহজতর ও স্বচ্ছ করা।
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী পোর্টাল চালুর পর ৬ মাসের মধ্যে সব ওয়াকফ সম্পত্তির নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হবে। এই উদ্যোগ সাম্প্রতিক বাজেট অধিবেশনে পাশ হওয়া ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন অনুসরণে নেওয়া হয়েছে, যা বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলায় বিচারাধীন।