আফগান ইমারাতে ইসলামিয়া সরকারকে স্বীকৃতি দিতে আমেরিকাকে রাশিয়ার মতো সাহসিকতা দেখাতে বললেন মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ।
শনিবার (৬ জুলাই) তলো নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি একথা বলেন।
জবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আমরা আশা করছি, আমেরিকা বাধা হয়ে থাকবে না। বরং রাশিয়ার মতো সাহসিকতা দেখাবে। স্বীকৃতির ক্ষেত্রে বাকি দেশগুলোকে নেতৃত্ব দিবে।
স্বীকৃতি ইস্যুতে আমেরিকার দিকে তাকিয়ে থাকা উচিত নয় এবং এটি খুবই সহজ একটি বিষয় এদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, যেসব দেশ এতদিন রাজনৈতিকভাবে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলো, তাদের এখন উপলব্ধি করা উচিত যে, এই পথ সহজ। তাদের এটি অনুসরণ করা উচিত। উচিত, আফগানিস্তানের সাথে মিলিত হওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করা উচিত নয়। বিশ্ব বাস্তবতা এক কেন্দ্রিক নয় বরং, বহুপাক্ষিক। তাই বিশ্বের সব দেশেরই উচিত স্বীকৃতি দিয়ে সম্পর্ক স্থাপনে এগিয়ে আসা।
রাশিয়ার মতো দেশের স্বীকৃতি ও গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, রাশিয়া বৈশ্বিক পরিসরে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিতকরণে মূল ভূমিকা পালন করছে। ইমারাত সরকারকে স্বীকৃতি তাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক পদক্ষেপ। এই অগ্রগতি আফগানিস্তানের বৈশ্বিক কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য নতুন অধ্যায় খুলে দিতে পারে। দেশটির সাথে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক আফগানিস্তানকে বৈশ্বিক সম্মেলন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ এনে দিতে পারে।
ইমারাত সরকার শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির আইনি ও কূটনৈতিক বাধা দূর করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে আসছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এই প্রসঙ্গে জোর দিয়ে বলেন, আফগানিস্তানের কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বের দেশগুলোর সাথে সংযোগ স্থাপনে অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বোঝানোর চেষ্টা করে এসেছে। রাশিয়ার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত, আফগান কূটনৈতিক নেটওয়ার্কের ধারাবাহিক সংলাপ ও পরামর্শেরই ফসল যা এখন এক নতুন ধাপে প্রবেশ করেছে।
যদিও আমাদের অনেক দেশের কাছ থেকে এ ধরণের উদ্যোগের প্রত্যাশা ছিলো। তবে রাশিয়াই সর্বপ্রথম সাহসিকতার সাথে এই পদক্ষেপ নিয়েছে, যা প্রশংসনীয়।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে অংশগ্রহণের পরিবর্তে বিদেশে অবস্থান করে সমালোচনা করে যাওয়া আফগান ব্যক্তিত্বদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দু:খজনক ভাবে কিছু আফগান ব্যক্তিত্ব বিদেশে বসে ইমারাত সরকারকে স্বীকৃতি প্রদানের মতো ইতিবাচক বিষয়ের বিরোধিতা ও সমালোচনা করছেন। এমনকি তারা ইমারাত সরকার কর্তৃক আফগানিস্তানের উন্নয়ন ও অগ্রগতিরও বিরোধিতা করেন। তারা দেশে কোনো রাস্তা নির্মাণ হলে বা বড় কোনো প্রকল্পের উদ্বোধন হলে সেটিকেও নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করেন।
পরিশেষে তিনি বলেন, ইমারাতে ইসলামিয়ার সরকার সব দেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায়। অঞ্চল ও বিশ্বের মধ্যে একটি সংযোগস্থল হিসেবে কাজ করতে চায়।
মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মুসলিম বিশ্বের ও আঞ্চলিক দেশগুলোর জন্য এখন সময় এসেছে, সন্দেহ থেকে সরে এসে কাবুলের বিষয়ে একটি স্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার।